বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : চ্যাটজিপিটির মতো বড় বড় লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের কার্যক্ষমতা বাড়াতে প্রয়োজন বিশাল পরিমাণ প্রশিক্ষণ ডেটা। এই ডেটা সংগ্রহে এআই কোম্পানিগুলো নানা ধরনের বট বা ক্রলার ব্যবহার করে, যেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘেঁটে তথ্য নিয়ে থাকে।
তবে এসব এআই ক্রলারের এই অনিয়ন্ত্রিত তথ্য সংগ্রহ ঘিরে অনেক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে কপিরাইটকৃত কনটেন্ট ব্যবহার নিয়ে। এই বিতর্কের মধ্যেই নিরাপত্তাবিষয়ক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ক্লাউডফ্লেয়ার ঘোষণা দিয়েছে—তারা এমন এক পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা ইন্টারনেট ব্যবস্থার প্রচলিত নিয়মে বড় পরিবর্তন আনবে।
নতুন এই ঘোষণায় জানানো হয়, এখন থেকে ক্লাউডফ্লেয়ার স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনেক এআই ক্রলারকে ব্লক করবে। এর মানে, এআই কোম্পানিগুলো আর ইচ্ছেমতো যেকোনো ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিয়ে ব্যবহার করতে পারবে না।
ক্লাউডফ্লেয়ার জানিয়েছে, তারা এমন একটি প্রযুক্তি চালু করেছে যা এআই বট ও ক্রলারদের শনাক্ত করে নিজে থেকেই ব্লক করতে সক্ষম। এভাবে কোনও ওয়েবসাইটে অনুমতি ছাড়া কিংবা কোনও ধরনের পারিশ্রমিক না দিয়ে ঢুকতে পারবে না এসব বট।
তবে ওয়েবসাইটের মালিকরা চাইলে চাইলে নির্দিষ্ট কিছু এআই ক্রলারকে তাদের সাইটে প্রবেশের অনুমতি দিতে পারবেন। ক্লাউডফ্লেয়ার আরও বলেছে, তারা এমন সমাধানও দিচ্ছে যার মাধ্যমে ওয়েবসাইট মালিকেরা চাইলে এআই কোম্পানিদের কাছ থেকে অর্থ দাবি করতে পারবেন তাদের কনটেন্ট ব্যবহারের জন্য।
ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট জানায়, এআই যুগে ইন্টারনেটের লেখা ও কনটেন্ট ব্যবহার করে মডেল প্রশিক্ষণের বিষয়টি এখন একটি বড় বিতর্কে পরিণত হয়েছে। অনেক প্রকাশক ইতিমধ্যে এআই কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, কারণ তাদের লেখাগুলো অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
এই বিতর্কের প্রেক্ষাপটে ক্লাউডফ্লেয়ার ২০২৩ সালেই ঘোষণা দিয়েছিল, ওয়েবসাইট মালিকরা চাইলে তাদের সাইটে বিশেষ একটি ট্যাগ যোগ করতে পারবেন, যাতে বোঝানো হবে—তাদের সাইট যেন এআই বট দ্বারা ক্রল না করা হয়। যদিও তখন তা কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছিল না।
এরপর তারা প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত সিস্টেম চালু করে, যাতে এসব বটকে শনাক্ত করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্লক করা যায়। এখন এই ব্লকিং ব্যবস্থা ক্লাউডফ্লেয়ারের আওতাধীন সব ওয়েবসাইটে ডিফল্টভাবে সক্রিয় থাকবে।
ক্লাউডফ্লেয়ারের প্রধান নির্বাহী ম্যাথিউ প্রিন্স বলেন, “আমরা পুরো ইন্টারনেট ব্যবস্থার নিয়মটাই বদলে দিচ্ছি।” তিনি আরও জানান, যদি এআই কোম্পানিগুলো এভাবে অবাধে তথ্য সংগ্রহ করে, তবে মানুষ নতুন লেখা বা কনটেন্ট তৈরি করতে আগ্রহ হারাবে। আর সেই আশঙ্কা থেকেই তারা এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।