জুমবাংলা ডেস্ক : প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য আজ সোমবার শুরু হচ্ছে নতুন শিক্ষাবর্ষ। তাদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রস্তুত নতুন পাঠ্যবই। আজ দেশজুড়ে হচ্ছে ‘পাঠ্যপুস্তক উৎসব’। ঝকঝকে নতুন বই হাতে পাবে শিক্ষার্থীরা।

গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর কার্যালয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে এই উৎসব উদ্বোধন করেন। শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আজ সারাদেশে ‘পাঠ্যপুস্তক উৎসব’ করবে।
দুই মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে দেশের ৩ কোটি ৮১ লাখ ২৭ হাজার ৬৩০ শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে তুলে দেওয়ার জন্য ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭ কপি বইয়ের বেশির ভাগ ছাপানো হয়ে গেছে, বাকি আছে সামান্য কিছু।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সকাল ১০টায় রাজধানীর মিরপুরের ন্যাশনাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পাঠ্যপুস্তক উৎসব হবে। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবার কেন্দ্রীয় বই উৎসবের আয়োজন করা হয়নি। স্কুলে স্কুলে উৎসবটি হবে।
প্রতিবছর সারাদেশে বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন বই বিতরণ করা হচ্ছে। তবে এবার সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী ও রাজনীতিকদের অনুষ্ঠানে না আসার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে সরকার প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন পাঠ্যপুস্তক প্রদান করছে। শিশুদের মাঝে পাঠ্যপুস্তক আকর্ষণীয় করতে ২০১২ শিক্ষাবর্ষে সরকার প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির সব পাঠ্যপুস্তক হোয়াইট পেপারে মুদ্রণ শুরু করে। এ ছাড়া কভার পৃষ্ঠা, হিট থার্মাল পারফেক্ট বাইন্ডিংসহ চার রঙের আকর্ষণীয় মানসম্মত পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ করা হচ্ছে। ২০১৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে পরিমার্জিত কারিকুলাম অনুযায়ী প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল নতুন বই বিতরণের নোটিশ জারি করেছে। শিফট অনুযায়ী সকাল ও বিকেলে প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে নতুন পাঠ্যবই। তবে রাজধানীর মিরপুর মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের নোটিশে লেখা আছে– নবম শ্রেণির নতুন পাঠ্যবই প্রাপ্তিসাপেক্ষে বিতরণ করা হবে।
এনসিটিবি থেকে জানা যায়, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ৩ কোটি ৮১ লাখ ২৭ হাজার ৬৩০ ছাত্রছাত্রীর হাতে বিনামূল্যে তুলে দেওয়ার জন্য ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭ কপি বই ছাপার কাজ শেষ পর্যায়ে। নতুন কারিকুলামের কারণে প্রতি ক্লাসে ১০টি করে বই হওয়ায় এবার কম ছাপানো হচ্ছে ৩ কোটি বই। এর মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের বই ১৮ কোটি ৬১ লাখ ১ হাজার ২০৬টি। আর প্রাথমিক স্তরের বই প্রায় ৯ কোটি ৫০ লাখ। এছাড়া ইবতেদায়ির জন্য ২ কোটি ৭১ লাখ ৭৩ হাজার ১৩৫টি বই ছাপা হচ্ছে।
এনসিটিবির বিতরণ শাখার তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিকের সব শ্রেণির বই ছাপা শেষ। ষষ্ঠ-সপ্তমের বইও প্রায় ৯৭ শতাংশ ছাপা হয়ে গেছে। কিছু উপজেলায় ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুটি বই প্রথম দিনে নাও দেওয়া হতে পারে। তবে অধিকাংশ উপজেলায় এই দুই শ্রেণির শতভাগ বই আজই পাবে শিক্ষার্থীরা। অষ্টম ও নবম শ্রেণির বই পৌঁছেনি জেলা-উপজেলায়। এই দুই শ্রেণিতে এবারই প্রথম নতুন শিক্ষাক্রমে পড়ানো হবে। অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে ১০টি বিষয়ে ১১টি বই। অষ্টম শ্রেণিতে সারাদেশে সাড়ে ৪৮ লাখের কিছু বেশি শিক্ষার্থী। তাদের জন্য ছাপানো হচ্ছে ৫ কোটি ৩৪ লাখ ৮৪ হাজার বই। আর নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ৪৬ লাখের বেশি। এ শ্রেণিতে বইয়ের সংখ্যা ৫ কোটি ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৫৭৩ কপি।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বই উৎসব করার অনুমতি দিলেও তাতে রাজনৈতিক ব্যক্তি থাকতে পারবেন না বলে জানিয়েছে। এ জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে যে অনুষ্ঠান করার কথা ছিল, সেটি হবে না। তবে আজ ডিসি, ইউএনও, জেলা এবং উপজেলা শিক্ষা এবং প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধায়নে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানপ্রধানদের নিয়ে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



