আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসরায়েলি হামলায় নিহত ব্যক্তিদের ‘শহীদ’ বলে উল্লেখ করে থাকে ফিলিস্তিনিরা। তাদের জানাজায় অংশগ্রহণ করা সাধারণ মানুষদের জন্য গভীর অর্থ বহন করে। তাই শহীদদের জানাজায় সবসময়ই মানুষের ঢল নামে।
কিন্তু গাজায় ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি হামলার পর চিত্রটি বদলে গেছে। হামলার কারণে লাশের মিছিল যেমন দীর্ঘ হচ্ছে, তেমনি জানাজায় অংশ নেওয়া মানুষের সংখ্যাও কমে গেছে।
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কোনো মুসলমানের মৃত্যুর পর তার লাশ গোসল করানো হয়। এরপর প্রিয়জনের লাশটি বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়, যাতে বাড়ির নারীরা শেষ বিদায় জানাতে সক্ষম হন। তারপর মৃতদেহটিকে জানাজার জন্য মসজিদে নিয়ে যাওয়া হয়। জানাজা শেষে লাশের খাটিয়া কাঁধে নিয়ে কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
আবু আম্মার দেইর হচ্ছেন এল-বালার আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে মৃতদেহ গোসল তত্ত্বাবধায়ক। প্রায় চার সপ্তাহ আগে হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে তিনি প্রতিদিন শত শত লাশ পাচ্ছেন।
আবু আম্মার জানান, এখন মৃতদেহ ধোয়ার পরপরই হাসপাতালের মাঠে জানাজা হয়, সেখানে শুধুমাত্র কয়েক জন লোক থাকে কিংবা যে কয়জন উপস্থিত থাকেন তাদের নিয়েই জানাজা পড়া হয়। একক কবর নয়, এখন তাদের গণকবরে দাফন করা হয়।
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের আগে প্রাপ্তবয়স্কদের মৃতদেহ তিনটি ভিন্ন কাফনে মোড়ানো হত। আমরা তাদের দুবার পানি ও সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতাম এবং তৃতীয়বারে কর্পূর ব্যবহার করতাম। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে, আমাদের এটি করার সময় বা উপায় নেই। এখন অভাবের কারণে আমরা কাফন হিসাবে এক টুকরা কাপড় ব্যবহার করছি এবং তাদের মুখ থেকে রক্ত মুছে ফেলি।’
তিনি আরও জানান, শরীরের কাটাছেঁড়া অংশগুলো প্রথমে একটি প্লাস্টিকের আবরণে মোড়ানো হয় এবং তারপরে কাফন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় যাতে দাগ না পড়ে।
শান্ত আচরণের ব্যক্তি আম্মার জানান, তিনি অনেক বিকৃত লাশ দেখেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি চেনা যায় না এমন পোড়া মৃতদেহ পেয়েছি, বিচ্ছিন্ন অঙ্গ, মাথার খুলি খালি ও ভাঙা, রাসায়নিক গন্ধযুক্ত মৃতদেহগুলো পেয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি সবচেয়ে সহিংস অস্ত্র আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই আগ্রাসন সব সীমা অতিক্রম করেছে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করেছে। বিশ্বকে এই বর্বর যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।