আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হিসেবে মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মানসূচক ‘দাতো’ উপাধি পেয়েছেন সাতক্ষীরার আলমগীর হোসেন। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার পাহাং রাজ্যের সুলতান আহমদ এই খেতাবে আলমগীর হোসেনকে ভূষিত করেন। সমাজে অবদান, অসামান্য সাফল্য বা পরিষেবার স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এই উপাধি দেওয়া হয়েছে।
বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে বিশেষ করে শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদদের মালয়েশিয়ার রাজা বা তাদের রাজ্যের সুলতান কর্তৃক সর্বোচ্চ সম্মানসূচক এই উপাধি দেওয়া হয়। আলমগীর হোসেন দেশটির ব্যবসায়িক খাতে অনন্য অবদান রাখায় এই উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। ‘দাতো’ উপাধিটি ব্রিটিশ ‘স্যার’ উপাধির সমতুল্য। এই খেতাবপ্রাপ্তরা মালয়েশিয়ার যেকোনো কাজে ভিআইপি সুবিধা ভোগ করে থাকেন।
আলমগীর হোসেনের জন্ম সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার যুগীখালী ইউনিয়নের মানিকনগর গ্রামে। তার বাবার নাম মো. মতিয়ার রহমান। ২০০৭ সালে এসএসসি পরীক্ষায় সুনামের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে খুলনা ম্যানগ্রোভ পলিটেকনিকে ইলেকট্রিক্যাল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা চলমান অবস্থায় ২০০৯ সালে মালয়েশিয়া পাড়ি জমান আলমগীর হোসেন। মালয়েশিয়া যাওয়ার কয়েক বছর পর স্থানীয় এক মেয়েকে বিয়ে করেন তিনি। বর্তমানে আলমগীর হোসেনের নয় বছর বয়সী এক ছেলে রয়েছে।
মালয়েশিয়ায় ফার্নিচার, কনস্ট্রাকশন, এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ও ম্যানপাওয়ারের বিজনেস রয়েছে আলমগীর হোসেনের। ম্যানপাওয়ার জগতে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে বেশ পরিচিতি রয়েছে তার।
আলমগীর হোসেন বলেন, এই অর্জন এক দিনে হয়নি। শুরুর দিকটা ছিল অনেক কষ্টকর। ধৈর্যের মধ্য দিয়ে সততাকে কাজে লাগিয়ে আজকের এই অবস্থানে এসেছি। মালয়েশিয়ায় ব্যবসায়িক খাতে বিশেষ অবদান রাখার কারণে এখানকার (মালয়েশিয়া) রাজ্যের রাজা আমাকে সর্বোচ্চ উপাধি প্রদান করে সম্মানিত করেছেন। আমার সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের যে শ্রমিকরা রয়েছেন তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম আমাকে এখানে পৌঁছাতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে। সকল শ্রমিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। একই সঙ্গে পাহাং রাজ্যের রাজার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আশা করছি দেশটির ব্যবসাসহ অন্য খাতে আরও বড় অবদান রাখতে পারব।
আলমগীর হোসেন আরও বলেন, আমার এই অর্জন নিজ জন্মভূমি সাতক্ষীরাকে উপহার দিলাম। বরাবরই চেষ্টা করেছি সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অসহায় মানুষদের পাশে থাকতে। কলারোয়াতে অনেক এতিমখানা রয়েছে যেখানে গোপনে নিয়মিত সহযোগিতা করে আসছি। একই সঙ্গে চেষ্টা করেছি নিজ গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের যুবকদের কর্মসংস্থান তৈরি করতে। সুনামের সঙ্গে অনেক যুবককে মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। আমার এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। নিজ জন্মভূমির অসহায় ও নিপীড়িত মানুষের পাশে থাকতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
আলমগীর হোসেনের বাবা মতিয়ার রহমান বলেন, অর্থনৈতিক অবস্থা খুব বেশি ভালো না থাকায় আলমগীরকে ভালোভাবে পড়াশোনা করাতে পারিনি। তবুও নিজের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করেছি তার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে। পড়াশোনা চলমান থাকা অবস্থায় কাজের উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া যায় আলমগীর হোসেন। সেখানে গিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। বর্তমানে অনেক শ্রমিক তার প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। সম্প্রতি সেখানকার রাজ্যপ্রধান তাকে সর্বোচ্চ সম্মানে সম্মানিত করেছেন। এতে বাবা হিসেবে অনেক গর্ববোধ করছি। নিজের জন্মস্থানসহ সাতক্ষীরার মানুষের জন্য সাধ্যের মধ্যে সবটুকু করার জন্য চেষ্টা করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে কলারোয়া উপজেলার চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান লাল্টু বলেন, কলারোয়া উপজেলার আলমগীর হোসেনের যে অর্জন এর অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তার এই অর্জনকে সাধুবাদ জানাই। আগামীতে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে আরও সম্মানিত করবে এই প্রত্যাশা তার কাছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।