জুমবাংলা ডেস্ক : প্রতিদিন রাত ৮টার পর দোকানপাট ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর। সেইসঙ্গে সপ্তাহে দেড় দিন এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতেও বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) দিনাজপুর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের উপ-মহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল সাকিব মুবাররাত স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এটি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাইতেছে যে, বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬-এর ধারা ১১৪(১)-এর বিধান মোতাবেক সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক দোকান বা বাণিজ্য বা শিল্পপ্রতিষ্ঠান সপ্তাহে অন্তত দেড় দিন সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি একই আইনের ধারা ১১৪(৩)-এর বিধান মোতাবেক কোনও দোকানপাট কোনোদিন রাত ৮টার পর খোলা রাখা যাবে না। উল্লিখিত বিধান প্রতিপালনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই বিজ্ঞপ্তি সবার জন্য। বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে জনসচেতনতা তৈরির জন্য। এরপর বিজ্ঞপ্তিতে যে আইনের কথা বলা হয়েছে, সেটি কার্যকর করা হবে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, চেম্বার অব কমার্স ও দোকান মালিক সমিতিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’
তবে ব্যবসায়িক নেতাদের দাবি, দেশের চলমান অর্থনীতির পরিস্থিতি বিবেচনায় এই আইনটিকে যেন শিথিল করা হয়। সেইসঙ্গে সরকারি অফিসে দুদিনের ছুটিও কমিয়ে আনার দিকে মত দিয়েছেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দিনাজপুর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘দিনাজপুর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করে। সপ্তাহিক ছুটি প্রদান না করা, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে কর্মচারীদের কাজে বাধ্য করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ সম্প্রতি আমাদের কাছে এসেছে। সেসব অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর বৃহস্পতিবার এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘আইন ও নিয়ম অনুযায়ী সপ্তাহের সুবিধাজনক দিনে প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। এর আগের দিন অর্ধদিবস অথবা এর পরদিন অর্ধদিবস হিসেবে টানা দেড় দিন প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। যেদিন পুরোপুরি বন্ধ থাকবে তার পরদিন দিনের অগ্রভাগ অথবা তার আগের দিনের শেষভাগ প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। তবে জরুরি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান আইন অনুযায়ী এই বিজ্ঞপ্তির বাইরে থাকবে।’
সুবিধাজনক দিন হিসেবে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এলাকাভিত্তিক যেকোনও দেড় দিন বন্ধ রাখতে হবে। এটি শুধুমাত্র শুক্রবার বা শনিবার হতে হবে এমন নয়। অন্যদিনও হতে পারে। তবে বন্ধ রাখতে হবে পুরো বা টানা দেড় দিন। আর রাত ৮টার পর কোনোভাবেই দোকানপাট খোলা রাখা যাবে না।
দিনাজপুর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর সূত্র জানায়, সপ্তাহিক ছুটি বা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নিয়ম থাকলেও এটি অনেক প্রতিষ্ঠান মানছে না। আবার এটি বাস্তবায়ন করতে কিছু সমস্যাও রয়েছে। তাই সবার সচেতনতা আগে জরুরি। এরপর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান মালিক সংগঠনগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে। শ্রম আইনের যে ধারা রয়েছে, সেটি বাস্তবায়ন করাটা খুবই জরুরি।
এ ব্যাপারে দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক সহিদুর রহমান পাটোয়ারী মোহন বলেন, ‘যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান দেশের অর্থনীতি এবং ধারাবাহিকভাবে চলে, সেগুলো এই আইনের বাইরে থাকে। তবে আমি মনে করি, দেশের অর্থনীতির স্বার্থে এখন এই আইনটিকে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়াটা ঠিক হবে না। অর্থনীতির স্বার্থে আইনটি শিথিল করা উচিত। অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করতে আমাদের প্রস্তাবনা অফিসিয়াল ছুটি যেন আরও কমিয়ে আনা হয়। দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের যে দেড় দিনের ছুটি সেটিও যেন কমিয়ে আনা হয়। সরকারি অফিস-আদালতে যে দুদিনের ছুটি, সেটিও যেন কমিয়ে আনা হয়।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।