স্পোর্টস ডেস্ক : ক্রিকেট বিশ্বে পারফরম্যান্সের জন্যই প্রচারের আলোকবৃত্তে থাকেন শামি। তবে এর বাইরেও বিভিন্ন কারণে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে শামির ‘মহামূল্য সম্পদ’। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭ উইকেট নিয়েছেন মহম্মদ শামি। চলতি বিশ্বকাপের প্রথম চারটি ম্যাচে সুযোগ পাননি। তবে সুযোগ পেয়েই পরের ছ’টি ম্যাচে নিজের জাত চিনিয়েছেন এই জোরে বোলার।
ক্রিকেট বিশ্বকাপে শামির পারফরম্যান্স তাক লাগাচ্ছে। অনেক বোলারের কাছে এমন পারফরম্যান্স স্বপ্নের মতো। ঈর্ষা করার মতোও। তবে শুধু মাঠের ভিতরেই ঝড় তোলেননি শামি। মাঠের বাইরেও শামির কাছে এমন এক ‘সম্পদ’ রয়েছে, যা বিভিন্ন সময়ে চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। সংবাদমাধ্যমে ঝড় তুলেছে।
ক্রিকেট বিশ্বে পারফরম্যান্সের জন্যই প্রচারের আলোকবৃত্তে থাকেন শামি। তবে এর বাইরেও বিভিন্ন কারণে সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে এসেছে শামির ‘মহামূল্য সম্পদ’। শামির এই ‘অমূল্য রত্ন’ হল উত্তরপ্রদেশের আমরোহা জেলায় থাকা তাঁর একটি বাগানবাড়ি। যা শামির অনুরাগীদের কাছে আগ্রহের বিষয়।
উত্তরপ্রদেশের আমরোহার গ্রামে থাকা শামির এই বাগানবাড়ির নাম ‘হাসিন ফার্মহাউস’। বিচ্ছিন্না স্ত্রী হাসিন জাহানের নামেই এই বাগানবাড়ির নাম রেখেছিলেন শামি। ২০১৫ সালে আমরোহা জেলায় ৬০ একর জমি কিনেছিলেন শামি। যার আনুমানিক মূল্য ১২-১৫ কোটি টাকা। সেখানেই রয়েছে এই বাগানবাড়ি যার মূল্য আনুমানিক ১৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট সম্পত্তির মূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকার।
আমরোহা জেলার আলিনগরের সাহসপুরের বুধনপুর রোডের ধারে শামির সেই বাগানবাড়ি রয়েছে। শামির সেই বাগানবাড়ির সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হল, এর ভিতরেই রয়েছে ক্রিকেট খেলার পিচ। অবসর সময়ে সেখানেই অনুশীলন করেন শামি।
শামির বাগানবাড়ির চারদিকে সবুজের মেলা। আলাদা বাগানও রয়েছে সেই বাগানবাড়িতে। রয়েছে আম-জাম-কাঁঠাল গাছের সম্ভার। অতীতে সুরেশ রায়না, ভুবনেশ্বর কুমার-সহ অনেক ভারতীয় ক্রিকেটারই শামির এই বাগানবাড়ির প্রশংসা করেছেন।
ক্রিকেট পিচের সীমানা ছাড়িয়ে শামির বাগানবাড়িতে আরও ‘গুপ্তধন’ রয়েছে। সেখানে এমন কয়েকটি মুক্ত প্রাঙ্গণ রয়েছে, যেখানে শামি তাঁর প্রিয়জনদের সঙ্গে অবসর সময় কাটান। শামির বাগানবাড়ির পাশের জমিতে কৃষিকাজও হয়।
বাগানবাড়িটিতে রয়েছে একটি বড় গ্যারেজ। সেই গ্যারেজে রয়েছে একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি। বেশ কয়েকটি নামীদামি মোটরবাইকও রয়েছে সেখানে। সূত্রের খবর, শামির সঙ্গে তাঁর স্ত্রী হাসিনের গণ্ডগোলের সূত্রপাত এই বাগানবাড়ি ঘিরেই। শামির পরিবারের ঘনিষ্ঠ মহল দাবি করেছে, ভবিষ্যতে আলিনগর গ্রামে ক্রিকেট অ্যাকাডেমি খুলতে চান শামি। আর সেই জন্যই প্রায় ১৫ কোটি টাকা খরচ করে ওই ৬০ একর জমি কিনেছিলেন তিনি।
উত্তরপ্রদেশে জমি কেনার জন্য শামি ওই টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন বলে রেগে গিয়েছিলেন হাসিন। তিনি না কি চাইতেন, শামি পশ্চিমবঙ্গে জমি কিনে বাগানবাড়ি তৈরি করুন।
সূত্র এ-ও জানায়, বাগানবাড়ি হাসিনের নামে থাকলেও সেই জমি বা বাড়ির মালিকানা নেই তাঁর। আর সেই কারণেই না কি শামি এবং তাঁর স্ত্রীর মধ্যে কলহের সূত্রপাত।
একটি বিশ্বকাপে ভারতের হয়ে সব থেকে বেশি উইকেট রয়েছে শামির ঝুলিতে। চলতি বিশ্বকাপে তাঁর উইকেটের সংখ্যা ৬ ম্যাচে ২৩টি। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে জাহির খান ২১টি উইকেট নিয়েছিলেন। জাহিরকে ছাপিয়ে গিয়েছেন শামি।
ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নিউ জ়িল্যান্ডকে ৭০ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ভারত। প্রথমে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ৩৯৭ রান করে ভারত। শতরান করেন বিরাট কোহলি ও শ্রেয়স আয়ার। রান তাড়া করতে নেমে ৪৮.৫ ওভারে ৩২৭ রানে অল আউট হয়ে যায় নিউ জ়িল্যান্ড। ৫৭ রান দিয়ে ৭ উইকেট নেন শামি।
প্রথম ভারতীয় বোলার হিসাবেও বিশ্বকাপের কোনও ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়েছেন শামি। প্রথম বোলার হিসাবে এক দিনের বিশ্বকাপে চার বার কোনও ম্যাচে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নিয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক তিন বার এই কীর্তি করেছেন। শামি ছাপিয়ে গিয়েছেন আশিস নেহরার বিশ্বকাপের এক ম্যাচে ৬ উইকেট নেওয়ার নজিরকেও।
বিশ্বকাপে ৫০ উইকেট নেওয়া প্রথম ভারতীয় বোলার হয়েছেন শামি। বিশ্বকাপে সব থেকে কম ম্যাচে (১৭) এই কীর্তি করেছেন তিনি। প্রথম ভারতীয় বোলার হিসাবে বিশ্বকাপের নক আউটে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন শামি।
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে বুধবার মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গে একটি মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন মহম্মদ শামি। দেশের হয়ে ১০০টি এক দিনের ম্যাচ খেলা হয়ে গেল তাঁর। মাইলফলক ছোঁয়ার ম্যাচে বিশ্বকাপেও একাধিক নজির গড়লেন বাংলার জোরে বোলার। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে জীবনের সেরা বোলিংও করলেন নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে। নিজের দক্ষতায় স্মরণীয় করে রাখলেন শততম এক দিনের ম্যাচ।
এ বারের বিশ্বকাপের প্রথম চারটি ম্যাচে ভারতের প্রথম একাদশে জায়গা পাননি শামি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চতুর্থ ম্যাচে হার্দিক পাণ্ড্য চোট পাওয়ায় লিগের পঞ্চম ম্যাচে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পান শামি। তার পর প্রতি ম্যাচেই উইকেট পাচ্ছেন তিনি।
শামি এক মাত্র নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে উইকেট পাননি। এ বারের বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত ২৩টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। বুধবারের ম্যাচের পর প্রতিযোগিতায় তিনিই সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। শামি পিছনে ফেলে দিলেন অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম জ়াম্পাকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।