সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ১০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি, চাঁদা না দেওয়ায় মারধর এবং অস্ত্র ঠেকিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল বুধবার (১২ জুলাই) হরিরামপুর উপজেলার লেছড়াগঞ্জ বালু মহালের ইজারাদার মো. আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে হরিরামপুর থানায় অভিযোগ করেছেন।
অভিযুক্ত নেতাকর্মীরা হলেন- ১. উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. লুৎফর রহমান, ২. উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ফরিদ মোল্লা, ৩. ধুলশুরা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন ৪. দেলোয়ার হোসেন দেলু, ৫. রিফাত চৌধুরী, ৬. রিতান মোল্লা ৭. মো. সোহাগ, ৮. ইমারত হোসেন ৯. সিদ্দিক হোসেন, ১০. রিপন মোল্লা।
অভিযোগসূত্রে জানা যায়, গত দুই মাস যাবত সরকারি সকল বিধি মেনে বালুমহালের নির্ধারিত স্থান থেকে বালু উত্তোলন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে উন্নয়ন কাজে সরবরাহ করে আসছেন ভুক্তভোগী আৱমগীর হোসেন। গত মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ধুলশুড়া বাজার হতে পশ্চিম দিকে পদ্মা নদীর পূর্বে আনুমানিক ৩০০ গজ দূরে তার বালুমহাল থেকে বালু বহনকারী ১০-১২টি বাল্কহেড পৌঁছামাত্র বিবাদীরা বাল্কহেডের গতিরোধ করে পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাল্কহেডের সুকানি ও শ্রমিকদের নিকট চাঁদা দাবি করে।
তারা চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় অভিযুক্তরা সুকানি ও শ্রমিকদের ওপর রামদা, লোহার রড ও লাঠি নিয়ে হামলা করে। এতে বাল্কহেডের সুকানিসহ ৮/১০ জন শ্রমিক মারাত্মক জখম ও আহত হয় এবং মেহেন্দীগঞ্জ বাল্কহেডের সুকানি ইউনুস মিয়া মারাত্মক জখম হয়। সকল বিবাদীগণ বাক্লহেডের শ্রমিকদের কাছে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। অভিযোগে উল্লেখিত সময় ছাড়াও বিভিন্ন সময় বিবাদীরা হরিরামপুরে পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করে আসছে। এ ঘটনায় বাল্কহেড শ্রমিকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এবং বালু মহালে বালু নিতে আসতে অপারগতা প্রকাশ করছে। এতে একদিকে যেমন বাদী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি উন্নয়নমূলক কাজও ব্যাহত হচ্ছে।
জানতে চাইলে অভিযোগকারী মো. আলমগীর হোসেন বলেন, বিবাদীরা বাল্কহেডে থাকা সুকানি, কর্মচারীসহ সবাইকে মারধরসহ চাঁদাবাজি করেছে। থানায় অভিযোগ দিয়েছি। তাদের ভয়ে এখন কেউ বালু নিতে আসছে না। ঘটনার যথেষ্ট সাক্ষী রয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে হরিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।
উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ফরিদ মোল্লা বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। যা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। অভিযোগে উল্লেখিত সময়ে একটি ঘটনায় আমি বাল্লা এলাকায় ছিলাম। যারা আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছে তাদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুতই আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুস্তাকিম চৌধুরী রিফাত বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। যা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রিতান মোল্লা বলেন, মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য এমপি মমতাজ বেগমের সাথে রাজনীতি করার কারণে আমার সাথে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। যা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার আদিত্য বলেন, অভিযোগ পেয়েছি অনুসন্ধান চলছে। ঘটনার সত্যতা পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।