মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জে সন্ত্রাসী কায়দায় টেন্ডারের (দরপত্র) সিডিউল ছিনিয়ে নেয়া এবং দরদাতাকে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে জেলার কয়েকজন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গত রোববার রাতে জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও মানবকগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র আব্দুর রাজ্জাক রাজার ছোটভাই আল রাফি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এনামুল হক রুবেল, যুবলীগ নেতা উজ্জল হোসেন সহ আরো কয়েকজন মিলে ভুক্তভোগী দরদাতাকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: ইসরাফিল হোসেনের অফিসে ডেকে নিয়ে বেশ কিছু সিডিউল ছিনিয়ে নেয় এবং সেগুলো জমাদানে বাধা সৃষ্টি করে।
জানা যায়, মানিকগঞ্জর সদর উপজেলা নিলাম কমিটির গত ৪ মার্চ তারিখের সিদ্ধান্ত মোতাবেক উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন, অকেজো, জরাজীর্ণ ভবন, টিনের ঘর, গাছ নিলামে বিক্রয়ের সিদ্দান্ত নেযা হয়। পরবর্তীতে ১৪ মার্চ থেকে শুরু করে ২৪ মার্চ পর্যন্ত নিলামের সিডিউল বিক্রয় করা হয়। সিডিউল দাখিলের শেষ সময় ছিল ২৫ মার্চ দুপুর ২.০০ ঘটিকা। নির্ধারিত সময়ে সিডিউল বিক্রয় হয় ২৪৪ টি, এবং শেষ সময় পর্যন্ত সিডিউল জমা হয়েছে ৬২টি।
সোমবার দুপুর ১টার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যুবলীগ নেতা আল রাফি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এনামুল হক রুবেল সহ আরো কয়েকজন ঠিকাদার সিডিউল জমা দিচ্ছেন। নিজেদের সিডিউল জমা দেয়ার পর আর কারো সিডিউল জমা দিতে দেয়া হবেনা বলে ঘোষণা দেন তারা। এসময় গণমাধ্যমকর্মীরা ভিডিও করতে গেলে ক্যামেরা দেখেই তারা তেড়ে আসেন এবং ভিডিও করতে বাধা সৃষ্টি করেন।
মো: জাহিদুর রহমান নামের একজন ঠিকাদার অভিযোগ করে বলেন, আমি তিনটি সিডিউল ক্রয় করেছিলাম। কিন্ত ২৪ মার্চ রাতে এনামুল হক রুবেল ও রাফি আমাকে উপজেলা চেয়ারম্যান ইসরাফিল সাহেবের অফিসে ডেকে নিয়ে সিডিউলগুলো ছিনিয়ে নেয় এবং আমার সিডিউলগুলো আর জমা দিতে দেয়নি।
মো: সাজু নামের আরেক ঠিকাদার জানান, সিন্ডিকেটের কারণে এসব কাজ করাই মুশকিল। সিন্ডিকেটের বাইরে গিয়ে কাজ করার সুযোগ নেই, তাই সিডিউল ক্রয় করিনি।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, নিলাম বিজ্ঞপ্তির পর ২৪৪টি সিডিউল বিক্রয় হলেও সিডিউল জমা পড়েছে মাত্র ৬২টি। কিছু সিডিউল বাতিল হয়েছে এবং অধিকাংশগুলোই জমা পড়েনি।
এ ব্যাপারে এনামুল হক রুবেল বলেন, সিডিউল ছিনতাইয়ের অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, এরকম কোন ঘটনাই ঘটেনি। যে এরকম অভিযোগ করেছে এবং যে এটা নিয়ে লিখবে তাদের নামে ৪-৫ কোটি টাকার মানহানি মামলা করা হবে।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, সিডিউল জমা দিয়ে কোন সমস্যা আমাদের নজরে পড়েনি। কাউকে সিডিউল জমাদানে বাধা দেয়া হয়েছে কিনা কেউ সেটাও জানায়নি। আমরা কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাইনি।
এ বিষয়ে উপজেলা নিলাম কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালী সোমবার বিকেল ৪টার দিকে জানান, সিডিউল ছিনতাইয়ের বিষয়টি জানা নেই, আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। ইতোমধ্যে টেন্ডার মূল্যায়ন কার্যক্রম কমপ্লিট হয়ে গেছে। কেউ আমাদেরকে সিডিউল ছিনতাইয়ের বিষয়টি জানায়নি, জানালে অবশ্যই তাকে পূর্ণ সহযোগিতা করা হতো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।