জুমবাংলা ডেস্ক : চাহিদাকৃত ঘুষ না দেওয়ায় উচ্ছেদের নামে বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে উল্লেখ করে ক্ষতিপূরণ ও শাস্তি দাবি করে সড়ক ও জনপথ পাবনার সার্ভেয়ার আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পাবনা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ঈশ্বরদী নির্বাহী কর্মকর্তা, সড়ক ভবনের প্রধান প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথ বিভাগ সচিব, পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) এমপি ও সাঁড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (২৮ জুন) ঈশ্বরদীর সাঁড়া ইউনিয়নের আড়মবাড়িয়া বাজারসংলগ্ন গোপালপুর গ্রামের মৃত আফিল সরদারের ছেলে আজিম সরদার এই অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগে আজিম সরদার জানান, ‘ঈশ্বরদী থেকে লালপুর হয়ে রাজশাহী বানেশ্বর পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ চলছে।
এই রাস্তাসংলগ্ন ঈশ্বরদীর সাঁড়া ইউনিয়নের গোপালপুরে আমার বাড়ি। চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি এই রাস্তার সীমানা পরিমাপের সময় আমাকে সড়ক ও জনপথ (সওজ) পাবনার সার্ভেয়ার আকরাম হোসেন বলেন, আপনার বাড়ির পশ্চিম ও দক্ষিণ কোনায় প্রায় দুই ফুট ভাঙতে হবে। এর কয়েক দিন পর সার্ভেয়ার আকরাম হোসেন মোবাইল ফোনে আমাকে পাবনায় তার অফিসে দেখা করতে বলেন। জামাইকে সঙ্গে নিয়ে আমি তার সঙ্গে দেখা করলে তিনি পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। এই টাকা দিলে আমার বাড়ি ভাঙা লাগবে না। এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয় জানালে সার্ভেয়ার ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, টাকা দিবেন না, পরে ঠ্যালা বুঝবেন। এরপর আমি ঢাকা চলে আসলে গত ৩ ফেব্রুয়ারি আমার নামে নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু ঢাকায় থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এরপর গত ২৬ জুন আমার বাড়ি ভাঙা হয়। ‘
আজিম সরদার আরো জানান, ঘুষের টাকা না পেয়ে সার্ভেয়ার আকরাম হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে রাস্তার দুই ফুট জায়গার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি জায়গা নিয়ে বাড়িটি ভেঙে ফেলেছেন। এতে তিনি বহু ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন। একই সঙ্গে আর্থিক, সামাজিকভাবে সম্মানহানির শিকার হয়েছেন। এ জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট ক্ষতিপূরণসহ সার্ভেয়ার আকরাম হোসেনের শাস্তি দাবি করেছেন।
আজিম সরদার আরো জানান, রাস্তার জমি পরিমাপের সময় সার্ভেয়ার আকরাম হোসেন এলাকার অনেক মানুষের নিকট থেকে ঘুষ গ্রহণ করেছেন। এই কারণে অনেকের বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রাস্তার জমির মধ্যে রয়েছে। সেগুলোকে উচ্ছেদ না করে লোক-দেখানোভাবে সামান্য কিছু ভাঙচুর করেছেন।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) পাবনার সার্ভেয়ার আকরাম হোসেন মুঠোফোনে শনিবার দুপুরে জানান, আজিম সরদারের অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তার নিকট থেকে কোনোরূপ ঘুষ চাওয়া হয়নি। অন্যদের নিকট থেকেও ঘুষ নেওয়া হয়নি। রাস্তার জায়গায় থাকা তার বাড়ি উচ্ছেদ করতে ভাঙচুর করায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে এই অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সার্ভেয়ার আকরাম হোসেন আরো জানান, সঠিক নিয়ম মেনে, উচ্ছেদের গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সবাইকে অবগত করা হয়েছে। এরপর সওজের ঢাকা থেকে নিয়োগকৃত ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আজিম সরদারের অভিযোগ তদন্ত হলেই আসল সত্যতা বেরিয়ে আসবে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল মনসুর আহমেদ মুঠোফোনে গতকাল দুপুরে জানান, ঈশ্বরদী থেকে বানেশ্বর পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্তকরণ হচ্ছে। এই কারণে রাস্তার জমি থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে গিয়ে কিছু জায়গায় মামলাজনিত কারণে উচ্ছেদ সম্ভব হয়নি। কিন্তু যাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে তারা এখন ঘুষ দাবির অভিযোগ করছেন। ঘুষের টাকা না পেয়ে বাড়ি ভাঙচুর অভিযোগটি সঠিক নয়।
দায়ের করা অভিযোগের বিষয়ে সওজের এই কর্মকর্তা জানান, অভিযোগ এখনো হাতে আসেনি। হাতে এলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাচ্চা প্রসব ছাড়াই দিনে ৬ লিটার দুধ দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়ান গরু!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।