জুমবাংলা ডেস্ক : শরীয়তপুরের নড়িয়ায় অন্তত ১০ পরিবারের কাছ থেকে চাঁদা দাবি ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে রনি মাঝি (৪০) নামের সাবেক এক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর এ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তার ভয়ে অনেকে বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার ঘড়িসার ইউনিয়নের বাহের কুশিয়া মৌজার সাড়ে ৮ একর সম্পত্তির মালিক অলোক কুণ্ডু ও তার পরিবার। পরে জায়গাটি জোর করে দখলে নেয় স্থানীয় বিএনপি নেতা হায়দার মাঝি। আদালতের মাধ্যমে সেই সম্পত্তি আলোক কুণ্ডু ও তার পরিবার বুঝে পাওয়ার পর নাজির খান নামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা দেন। বর্তমানে নাজির খান সেই সম্পত্তি প্লট আকারে বিক্রি করলে কিনে নেয় অন্তত ৪০ পরিবার। আর এদের মধ্যে ১০ পরিবার বাড়ি তৈরি করে বসবাস করছেন।
এদিকে গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর হায়দার মাঝির ছেলে ও উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রনি মাঝি বাড়িগুলোতে গিয়ে বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করছেন এবং তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা সরেজমিনে থেকে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে ফিরে আসার পর পুনরায় লোকজন নিয়ে অভিযোগকারীদের ওপর চড়াও হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জায়গার মালিক নাজির খাঁন বলেন, আমি সাব-কবলা দলিল মূলে অলোক কুণ্ডু ও তার ভাইদের কাছ থেকে সম্পত্তিটি কিনে নেই। সেখানে হিন্দুধর্মের ও মুসলিম ধর্মের বেশ কিছু পরিবার সম্পত্তি কিনে বসবাস করছেন। সম্প্রতি আওয়ামী লীগে সরকার পতনের পর রনি মাঝি সেখানের বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করছেন। অনেকে ভয়ে চাঁদা দিচ্ছেন। তাছাড়া রনি মাঝি আর তার লোকজন সেখানে থাকা আমার অফিসটি জোর করে দখলে নিয়ে তালাবদ্ধ করে রেখেছেন।
মো. শাহজাহান নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, আমরা নাজির খানের কাছ থেকে দলিল দেখে কিনেছি। আমাদের জমির মিউটেশন করাও হয়েছে। সরকার পতনের পর কিছু দুষ্কৃতিকারী ও রনি মাঝি আমাদের এখানে এসে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করছে। না দিলে হুমকি দিচ্ছে। বর্তমান সরকার ও প্রশাসন যেন বিষয়টি একটু দেখেন।
আব্দুর রশিদ সরদার নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, আমি এখানে আমার দুই সন্তানের জন্য দুটি প্লট কিনেছি। এখন রনি মাঝি আমাদের কাছ থেকে চাঁদা চায়। তারা একটি ঘর ভেঙেও নিয়ে গেছে। আমরা আতঙ্কে রয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রনি মাঝি বলেন, ওইটা আমার বাড়ি এটা সবাই জানে। আর আমি চাঁদা দাবি করিনি। যারা অভিযোগ করেছে তাদের আমার কাছে নিয়ে আসেন। এসময় তিনি রাগান্বিত হয়ে মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন।
দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা দাবি করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ঘড়িসার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান হরমুজ মুন্সি। তিনি বলেন, তারেক রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন কেউ যাতে দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করতে না পারে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো এবং সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এদিকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তির চাঁদাবাজির করার সুযোগ নেই। আমরা এ ব্যাপারে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।