সাইফুল ইসলাম : মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা ভূমি অফিসের নাজির মো. সোহেল মাহবুবের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, সেবার নামে হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে ওই অফিসে কর্মরত থেকে তিনি নানাভাবে সাধারণ সেবাপ্রার্থীদের হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা অনেকেই জানান, নাজির সোহেল মাহবুবের কাছে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না। অফিসের প্রতিটি ধাপে ঘুষ দিতে হয়, তবেই ফাইল এসিল্যান্ডের টেবিল পর্যন্ত পৌঁছায়। এ কারণে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধও বাড়ছে দিন দিন।
জানা যায়, মো. সোহেল মাহবুবের পদ অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক (কেরানি)। তবে তিনি স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে দৌলতপুর উপজেলায় নাজিরের দায়িত্ব পালন করছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি আগে যেসব উপজেলায় কর্মরত ছিলেন, সেখানেও ঘুষ ও অনিয়মের অভিযোগে বিতর্কিত ছিলেন।
দৌলতপুর উপজেলার চকমিরপুর ইউনিয়নের স্বপন মিয়া ও নিলুয়া গ্রামের শহিদুল ইসলামসহ এলাকাবাসী সম্প্রতি সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করে এবং ভূমি অফিসের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
অভিযোগকারীরা বলেন, নাজির মো. সোহেল মাহবুব কোনো মৌখিক শুনানি বা জমির কাগজপত্র যাচাই না করেই সেবাপ্রার্থীদের হয়রানি করেন, এমনকি অশোভন ভাষায় কথাবার্তা বলেন।
সেবাপ্রার্থী স্বপন মিয়ার দাবি, “নাজির সোহেল মাহবুব অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি টাকা আয় করেছেন এবং ঢাকায় অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট কিনেছেন।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, তিনি ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল সম্পদ গড়েছেন এবং পরিবারের সদস্যদের নামে-বেনামে সম্পত্তি অর্জন করেছেন। তাদের মতে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করলে এসব অনিয়মের প্রমাণ মিলবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নাজির মো. সোহেল মাহবুব বলেন, “আমি কাউকে সেবা দিইনি—এমন অভিযোগ মিথ্যা। সাংবাদিক মামুন মিয়া পলাশ আমার চাচাতো ভাই; জমি নিয়ে আমাদের পারিবারিক বিরোধ আছে। সে জন্যই তারা মিথ্যা অভিযোগ তুলে মানববন্ধনের নাটক সাজিয়েছে।”
এ প্রসঙ্গে দৌলতপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহসানুল আলম বলেন, “গতকাল তিন-চারজন লোক মানববন্ধন করার চেষ্টা করেন। তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, দুই বছর আগে নামজারি সংক্রান্ত কাজে নাজির টাকা চেয়েছিল ও খারাপ আচরণ করেছিল। নাজিরের কাছেও বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।”
তিনি আরও জানান, “ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে এবং নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “অভিযোগের কপি পাওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।