সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জে কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজের গাইনী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ প্রতিমা রানী বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম বিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের দাড়ি, টুপি-পাঞ্জাবী, বোরকা হিজাব নিয়ে কুটক্তিকর কথা বলা, এক শিক্ষার্থীর নিকাব খুলতে বাধ্য করাসহ ধর্ম অবমাননা করার অভিযোগ উঠেছে।
সর্বশেষ গত বুধবার (১৩ মার্চ) গাইনি ওয়ার্ডে ক্লাশ নেওয়ার সময় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে ইসলাম বিদ্বেষী কথা বলায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এতে সবর হয়ে ওঠে মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন ও অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী এবং ইন্টার্ণ চিকিৎসকবৃন্দ কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছর যাবৎ কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজের গাইনী এন্ড অবস্ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ প্রতিমা রানী বিশ্বাস ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের দাড়ি, টুপি-পাঞ্জাবী, বোরকা, হিজাব নিয়ে কথা বলে আসছেন। এমনকি একজন শিক্ষার্থীকে নিকাব খুলতে বাধ্য করেছেন তিনি। গত বুধবার (১৩ মার্চ) গাইনী ওয়ার্ডে ক্লাস নেয়ার সময় তিনি রাসূল (সা:) কে নিয়ে ইসলাম বিদ্বেষী কথা বলেছেন। এক কারসিনোমা সারভিক্সের পেশেন্ট যে মধ্যবয়স্ক কিন্তু হাসবেন্ড অপেক্ষাকৃত কম বয়স্ক তার কথা বলতে গিয়ে ওই সহকারী অধ্যাপক বলেন “ওই নবি মোহাম্মদ এর মতো আর কি, মোহাম্মদ বিয়ে করেছিল না বিবি মরিয়মকে? …..ও না. মরিয়ম না, খাদিজা। খাদিজা বিয়ে করেছিল সুন্দর ধনাঢ্য যুবক মোহাম্মদকে……সে রকম আরকি!” কারসিনোমা সারভিক্সের পেশেন্টের হিস্ট্রির সাথে রাসূল (সাঃ) কে মেলানো উদ্দেশ্যমূলক সেটা পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছে। এছাড়া অভিযুক্ত ওই সহকারী অধ্যাপক ইসলামে চার বিয়ে নিয়েও কটুক্তি করেছেন বলে দাবি করেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, ডাঃ প্রতিমা রানী বিশ্বাস ক্লাশে ছাত্র-ছাত্রীর ধর্ম ও ধর্মীয় অনুভূতি ও ব্যক্তিত্বের ওপর আঘাত হানে। এমন কার্যকলাপ ও উক্তি গ্রহণযোগ্য নয়।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইন্টার্ন শিক্ষক বলেন, ওই গাইনি বিভাগের নারী শিক্ষক সংবিধানেরও অবমাননা করেছেন। সংবিধানের ১২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সকল নাগরিকের ধর্মীয় অধিকার এবং প্রত্যেকের পোশাকের স্বাধীনতা রয়েছে। সংক্ষুব্ধরা তার অপসারণ দাবীসহ নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবি করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক (গাইনী) ডাঃ প্রতিমা রানী বিশ্বাস মুঠোফোনে জানান, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা দিয়েছি। তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। ক্লাসের যে বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, সেটি উদাহরণসরূপ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর কথা বলা হয়েছে। কিন্তুর ওদের (শিক্ষার্থী) বিষয়টি বুঝতে হয়তো ভুল হয়েছে। যাই হোক সবার মঙ্গল হোক এবং সকলেই ভালো থাকুক, আমার কারো প্রতি কোন ক্ষোভ নেই বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. জাকির হোসেন বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বিষয়টি অবগত হয়েছি। ওই শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলেছি। সিনিয়র টিচারদের নিয়ে এ ব্যাপারে সভা করে ব্যবস্থা নেব। এ ধরনের বক্তব্যের জন্য ওই শিক্ষিকা তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি স্পর্শকাতর উল্লেখ করে ডা. জাকির হোসেন বলেন, তারা চান না, এটি অপ্রীতিকর পর্যায়ে যাক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।