আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নতুন প্রজন্মের একটি সুপারসনিক যাত্রীবাহী বিমানের প্রোটোটাইপ উন্মোচন করেছে মহাকাশবিষয়ক চীনের একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। এটি ম্যাক-৪ গতিতে চলতে সক্ষম, যা ঐতিহাসিক কনকর্ডের চেয়ে দ্বিগুণ। এই প্রোটোটাইপটি সিচুয়ান প্রদেশের রাজধানী চেংদুতে গত সপ্তাহে উন্মোচন করেছে সিচুয়ান লিংকং তিয়ানজিং টেকনোলজি কোম্পানি। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘চুয়ানতিয়ানহৌ’ বা ‘উড়ন্ত বানর’।
এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্পটি চীনের আন্তঃমহাদেশীয় উচ্চগতির ভ্রমণকে বাস্তবে রূপ দেয়ার মহাপ্রচেষ্টার অংশ। চুয়ানতিয়ানহৌ-এর প্রথম ফ্লাইট ২০২৬ সালে চালু হওয়ার কথা রয়েছে। পরীক্ষামূলক ফ্লাইটে যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে সেগুলো হচ্ছে, এর অ্যারোডাইনামিকস, তাপ প্রতিরোধী উপাদান এবং উদ্ভাবনী পাওয়ার সিস্টেম। খবর শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ানের।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রকৌশলী ডেং ফ্যান এই প্রকল্পকে সুপারসনিক বাণিজ্যিক ভ্রমণ ফের জাগিয়ে তুলতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘সুপারসনিক যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করছে এবং আরও বেশি দাপটের সঙ্গে ফিরে আসছে। এটি আগামী কয়েক বছরে আরও সাশ্রয়ী এবং নির্ভরযোগ্য-নিরাপদ উচ্চগতির ফ্লাইট সেবা প্রদানে নতুন সম্ভাবনা হয়ে আসবে।’
এই প্রযুক্তির ফলে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল এবং মহাশূন্যের মাঝামাঝি অঞ্চল বা নেয়ার স্পেসে ভ্রমণে বড় ধরনের সাফল্য অর্জিত হবে। এই অঞ্চলটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২০ থেকে ১০০ কিলোমিটার উচ্চতার মধ্যে অবস্থিত।এই অঞ্চলে বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব অনেক কম এবং এটি সাধারণ বাণিজ্যিক উড়োজাহাজগুলোর সর্বোচ্চ উচ্চতার (১০-১২ কি.মি) চেয়ে অনেক ওপরে। তবে কক্ষপথে ঘুরতে থাকা স্যাটেলাইটগুলোর উচ্চতার চেয়ে অনেক নিচে। সেই অঞ্চলে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য চুয়ানতিয়ানহৌ ডিজাইন করা হয়েছে।
এটি অত্যাধুনিক র্যামরটার ডেটোনেশন ইঞ্জিন দিয়ে সজ্জিত, যেখানে রটার কম্প্রেসর, র্যামজেট এবং ডেটোনেশন প্রযুক্তি একত্রিত করা হয়েছে। ‘জিন্দো-৪০০এস’ নামের এই ইঞ্জিনটি অত্যন্ত হালকা, যার ওজন মাত্র ১০০ কিলোগ্রাম। কিন্তু এটি কমপক্ষে চার হাজার নিউটন থ্রাস্ট উৎপন্ন করতে সক্ষম। এই প্রপালশন সিস্টেমটি বিমানটিকে ম্যাক ৪ দশমিক ২ বা ঘণ্টায় প্রায় ৫,০০০ কিলোমিটার গতিতে পৌঁছানোর সক্ষমতা দেবে, যা প্রচলিত জেটবিমানের চেয়ে প্রায় পাঁচ গুণ দ্রুত।
৭ মিটার লম্বা এবং ১.৫ মেট্রিক টন ওজনের এই প্রোটোটাইপটির ঘর্ষণ কমাতে এবং ফ্লাইট দক্ষতা বাড়াতে একটি সরলীকৃত অ্যারোডাইনামিক ডিজাইন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। একে বহনকারী বা ক্যারিয়ার রকেটের সাহায্যে ২০ কিলোমিটার উচ্চতায় উৎক্ষেপণের মাধ্যমে এর যাত্রা শুরু হবে। এরপর এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে উড্ডয়ন করবে। এর বেশিরভাগ ভ্রমণই নেয়ার-স্পেসে হবে, যেখানে এটি বাণিজ্যিক এয়ারলাইনারের উচ্চতার চেয়ে অনেক উপরে, তবে স্যাটেলাইটের কক্ষপথের নিচে থাকবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।