আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এক নতুন বৈশ্বিক গবেষণায় দেখা গেছে, সমুদ্রের মাছের আকার সংকুচিত হয়েছে এবং একই সময়ে এদের সংখ্যা বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট গবেষকরা বলছেন, দৃশ্যত পৃথিবীতে জীবনের ভারসাম্য রাখতে প্রকৃতি এভাবে ক্ষতিপূরণ দিয়ে পুষিয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন সময়ের গবেষণা এবং মাছ শিকারিদের তথ্য থেকে এর আগে অনুরূপ তথ্য মিলেছে। তবে প্রভাবশালী বিজ্ঞানভিত্তিক সাময়িকী ‘সায়েন্স’-এ প্রকাশিত নতুন গবেষণাটি আরো বিস্তৃত চিত্র তুলে ধরেছে বলে জানানো হয়েছে।
গবেষণায় অংশ নেওয়া সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তুসংস্থান বিদ্যার গবেষক অ্যান বিওর্কম্যান বলেন, ‘আমাদের গবেষণা সুস্পষ্টভাবে দেখাতে সক্ষম হয়েছে যে এটি বিশ্বজুড়ে একটি ধারাবাহিক প্রবণতা’।
বিশ্বব্যাপী ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ১৯৬০ সাল থেকে জীবের আকার কিভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তা দেখতে চার হাজার ২৯২টিরও বেশি প্রজাতির প্রাণী এবং উদ্ভিদের প্রবণতার ওপর জরিপ চালিয়েছেন। এতে কিছু জীবের আকার বড় এবং বাকিগুলো ছোট হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা গেছে। জীবের মধ্যে আকার কমে যাওয়ার প্রবণতা মাছ প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বেশি এবং স্পষ্ট।
এর দুটি উদাহরণ হলো ক্লোরোকা ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের স্যামন মাছ। অ্যান বিওর্কম্যান বলেন, ‘মাছের আকার ছোট হয়ে যাওয়ার সঙ্গে বড় মাছেদের ছোটগুলোকে খেয়ে ফেলতে পারার বিষয়টি সরাসরি যুক্ত। বাস্তুসংস্থানের অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও তত্ত্বটি প্রযোজ্য। একই সঙ্গে আমরা মানুষরা খাওয়ার জন্য যে মাছ শিকার করি, তা-ও বিষয়টি প্রভাবিত করে।’
অ্যান বিওর্কম্যান বলেন, লোনা পানির মাছ কেন আকারে ছোট হচ্ছে, তা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে এর পেছনে অনেক প্রমাণ রয়েছে যে আমরা মানুষই এর পেছনে বিভিন্নভাবে দায়ী। গবেষকদের মতে, তাঁদের অনুসন্ধানটি এ তত্ত্বকে জোরালোভাবে সমর্থন করে যে পৃথিবীর তাবৎ জৈববস্তুর মোট পরিমাণ এবং সব জীবন্ত প্রাণীর ওজন—এ দুটির পারস্পরিক ভারসাম্য প্রকৃতি নিজের নিয়মেই স্থিতিশীল রাখে। বড় জীবগুলো নিজ থেকে অদৃশ্য বা বিলুপ্ত হয়ে যেতে থাকলে ছোট জীবগুলো ক্রমান্বয়ে সে জায়গাগুলোতে প্রতিস্থাপিত হতে থাকে। শূন্যস্থান পূরণের জন্য প্রয়োজনে তারা সংখ্যায়ও বৃদ্ধি পেতে থাকে।
বিওর্কম্যান বলেন, এটি খুবই কৌতূহল তৈরি করে যে এই তত্ত্ব এর আগে ছোট পরিসরে প্রমাণ করা সম্ভব হলেও এই প্রথম এত বড় পরিসরে তা সত্যি বলে মনে করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।