আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লেবাননে ইসরায়েলের হামলার কারণে কোথাও যাওয়ার জায়গা পাচ্ছেন না দেশটিতে থাকা প্রবাসীরা। গত কয়েক দিন ধরে হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলের হামলার মুখে তারা আতঙ্ক মধ্যে রয়েছেন।
নিরাপত্তার অভাবের কারণে অসহায় হয়ে পড়েছেন লেবাননের প্রবাসীরা। দেশটিতে থাকা একজন প্রবাসী গৃহকর্মী বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দারা শহর ছেড়ে নিজেদের আত্মীয়-স্বজনদের কাছে আশ্রয় নিতে পারলেও আমাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।’
আলজাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ৩৪ বছর বয়সের গৃহকর্মী সেরেটা (ছদ্মনাম) বলেন, ‘লেবানন জুড়ে ইসরায়েলের হামলার মধ্যেও যে আমি বেঁচে আছি, সেটা আমার সৌভাগ্য।’
গত ২৩ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ লেবাননের তাইর শহরে ইসরায়েলের বিমান হামলার সময় ঘরে ছিলেন না বলেও জানান এই প্রবাসী। পুরো ঘটনাকে একটা ‘গণহত্যা’ হিসেবে দেখছেন লেবাননে থাকা এই প্রবাসী গৃহকর্মী। ইসরায়েলের হামলার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা (ইসরায়েলিরা) বহুতল ভবনগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা করছিল। যেখানে বৃদ্ধ লোক ও শিশুরা বসবাস করে। আমি বেঁচে গেছি। যদিও হামলার পর থেকে কানে কম শুনছি। ইসরায়েলের হামলার কথা স্মরণ করে শিশুরাও সবসময় আতঙ্কে থাকে। ঘুমাতে পারে না।’
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী গত বছর থেকে লেবাননে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ১ হাজার ৯০০ জন নিহত হছেন। ১০ লাখেরও বেশি লোকে তাদের বাড়িঘর হারিয়েছেন। সোরেটি জানান, লেবাননে থাকা প্রবাসীরাও তাদের বাড়িঘর হারিয়েছেন। আলজাজিরাকে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখনো পর্যন্ত আক্রমণ করা হয়নি। বিগত বছরগুলোতে নাবাতিয়েহ ও গাজিয়েহ এলাকা ধ্বংস করা হয়েছে। সেই তুলনায় আমরা এখন ভালো আছি। কিন্তু আমি এখানে নিরাপত্তা পাচ্ছি না। আমি ২০০৬ সাল থেকে (লেবানন ও ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর সময় থেকে) এখানে আছি। যতদিন যাচ্ছে, এখানকার অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে।’
নতুন করে আর কারও দেশ ছেড়ে পালানোর সুযোগ নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
লেবাননে ১ লাখ ৭৫ হাজার থেকে ২ লাখ বিদেশি গৃহকর্মী অবস্থান করছেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী। লেবাননের শ্রম মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে ২০১৯ সালের অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট অনুযায়ী লেবাননে অন্তত ৭৫ শতাংশ প্রবাসী রয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই আফ্রিকা মহাদেশের ইথিওপিয়ার নাগরিক। ১৯৮০’র দশকে তারা লেবাননে আসতে শুরু করেন। দেশটির গৃহযুদ্ধ শেষে ১৯৯০ ও ২০০০’র দশকে ঝাঁকে ঝাঁকে আসতে থাকেন তারা। তখন থেকে এই প্রবাসীরা স্বল্প বেতনের চাকরি নেন এবং দেশে তাদের পরিবারের কাছে উপার্জিত অর্থ পাঠাতে থাকেন।
সূত্র: আলজাজিরা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।