আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আরব–ইসরায়েলি ভ্লগার এবং অনলাইন ইনফ্লুয়েন্সার নুসির ইয়াসিন নিজেকে ‘প্রথম একজন ইসরায়েলি’ বলে দাবি করেছেন। গাজা ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতে তিনি ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন।
জনপ্রিয় অনলাইন কমিউনিটি ‘নাস ডেইলি’–এর প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসিন। ফেসবুক, টুইটার এবং ইউটিউবে তাঁর লাখ লাখ ফলোয়ার। গতকাল সোমবার তিনি ফলোয়ারদের উদ্দেশে গাজার সঙ্গে চলমান যুদ্ধে ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ার কথা স্পষ্ট করে বলেছেন।
ইয়াসিন বলেছেন, আগে নিজেকে একজন ‘ফিলিস্তিনি–ইসরায়েলি’ হিসেবে মনে করতেন। কিন্তু এখন নিজেকে প্রথমে একজন ইসরায়েলি হিসেবে দেখেন। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমি ফিলিস্তিনি সরকারের অধীনে থাকতে চাই না।’
এক্স প্ল্যাটফর্মে (টুইটার) নাস ডেইলির ইয়াসিন লিখেছেন, ‘আমি সবচেয়ে বেশি সময় ধরে আত্মপরিচয় নিয়ে লড়াই করেছি। আমি ইসরায়েলের ভেতরে জন্ম নেওয়া এক ফিলিস্তিনি শিশু।’ লাখ লাখ ফলোয়ার এই পোস্ট শেয়ার করেছেন।
ইয়াসিন লিখেছেন, ‘আমার অনেক বন্ধু আজ অবধি “ইসরায়েল” শব্দটি উচ্চারণ করতে অস্বীকার করে এবং নিজেদের শুধু “ফিলিস্তিনি” পরিচয় দেয়। কিন্তু যেহেতু আমি ১২ বছর (ইসরায়েলে) ছিলাম, আমার কাছে এর কোনো অর্থ ছিল না। তাই আমি দুই পরিচয়কে এককরে “ফিলিস্তিনি–ইসরায়েলি” হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমি ভেবেছিলাম, আমি কে, তা এই শব্দটির মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। আমি প্রথমত ফিলিস্তিনি, দ্বিতীয়ত ইসরায়েলি।’
‘কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনায়…আমার ভাবনা ক্ষোভে পরিণত হয়েছে। আমি বুঝতে পেরেছি যে, ইসরায়েল যদি আবার এভাবে “আক্রান্ত” হতে থাকে, তাহলে আমরা নিরাপদ থাকব না। ইসরায়েল আক্রমণকারী সন্ত্রাসীদের কাছে সব নাগরিকই লক্ষ্যবস্তু। ৯০০ ইসরায়েলি মারা গেছে। তাদের মধ্যে ৪০ জনেরও বেশি আরব। তারা অন্য আরবদের হাতে নিহত হয়েছে। এমনকি দুই জন থাই নাগরিকও মারা গেছে।’
‘এবং আমি ফিলিস্তিনি সরকারের অধীনে থাকতে চাই না।’ যোগ করেন ইয়াসিন। তিনি বলেন, ‘এর মানে হলো, আমার একটাই বাড়ি আছে, এমনকি আমি ইহুদি না হলেও সেটি হলো: ইসরায়েল। সেখানেই আমার পুরো পরিবার বসবাস করে। সেখানেই আমি বড় হয়েছি। এটাই আমি দেখতে চাই যে, দেশটির অস্তিত্ব থাকবে যেত আমার অস্তিত্ব টিকে থাকতে পারে।’
ইয়াসিন ফিলিস্তিনের অধিকার কথাও উল্লেখ করেছেন এবং জোর দিয়ে বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনেরও একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে অস্তিত্ব থাকা উচিত।’ তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, দেশটির (ফিলিস্তিন) উন্নতি হবে এবং কম উগ্র ও আরও সমৃদ্ধ হবে। আমি ফিলিস্তিনকে ভালোবাসি এবং ফিলিস্তিনে বিনিয়োগ করেছি। কিন্তু সেটি আমার বাড়ি নয়।’
সবশেষে ইয়াসিন বলেন, ‘আজ থেকে আমি নিজেকে একজন “ইসরায়েলি–ফিলিস্তিনি” হিসেবে দেখি। আগে ইসরায়েলি, পরে ফিলিস্তিনি। কখনো কখনো এভাবে স্পষ্ট করে দেখতে পারার মধ্যে একটা ধাক্কা লাগে।’
https://inews.zoombangla.com/desh-take-jahannam-bania-falasan/
বর্তমানে ৩১ বছর বয়সী ইয়াসিন দুবাইতে বসবাস করছেন। ইসরায়েলের উত্তরের শহর আররাবাতে তাঁর জন্ম। বেড়ে উঠেছেন ইসরায়েলেই। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে এবং বিশ্বব্যাপী হাই–টেক শিল্পে কাজ করার পর, ২০১৬ সালে সবকিছু ছেড়ে বিশ্ব ভ্রমণে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ইউটিউব চ্যানেল ‘নাস ডেইলি’ (আরবি ‘নাস’ মানে ‘মানবজাতি’)–তে তাঁর ভ্রমণের বর্ণনা থাকে। ইউটিউবে এটি অন্যতম জনপ্রিয় একটি চ্যানেল। কয়েক মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার এবং ফেসবুকেও লাখ লাখ ফলোয়ার ইয়াসিনের। ইসরায়েলে অন্যতম প্রভাবশালী অনলাইন সেলিব্রিটি হিসেবে পরিচিত তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।