লাইফস্টাইল ডেস্ক : গ্রীষ্মকাল দেশি ফলের ভরা মৌসুম। ইতোমধ্যেই বাজারে এসে গেছে নানা ধরনের দেশীয় ফল। আর যেসব ফল এই মুহূর্তে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে তার মধ্যে আম অন্যতম।
আমকে বলা হয় ফলের রাজা। অনন্য স্বাদের পাশাপাশি পুষ্টিগুণেও আম বেশ সমৃদ্ধ ফল। তবে আমের রয়েছে আবার অসংখ্য জাত। আর জাতভেদে আমের স্বাদও ভিন্ন ভিন্ন হয়।
দেশের বাজারে যেসব জাতের আম পাওয়া যায় তার মধ্যে আম্রপালি বেশ জনপ্রিয়। কিছুটা নাবি জাতের আম্রপালিকে কেউ কেউ বলে থাকেন আমের রানি।
এই জাতের আমের স্বাদ একেবারেই আলাদা। দেখতেও বেশ আকষর্ণীয় আর নামটিও বেশ কাব্যিক। এই আমের নামকরণের পেছনে রয়েছে এক রোমাঞ্চকর ইতিহাস।
কৃষিবিদ ও ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাচীন ভারতের এক নর্তকীর নাম ছিল আম্রপালি। তার সম্মানে সেরা জাতের এই আমের নাম রাখা হয়েছে আম্রপালি।
ইতিহাস বলছে, আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে প্রাচীন ভারতে বৈশালি নামে এক রাজ্য ছিল। সেই রাজ্যের রাজ উদ্যানের আম্রতলায় এক শিশুকে কুড়িয়ে পাওয়া যায়। সে শিশুকে বড় করার দায়িত্ব দেয়া হয় উদ্যানের রক্ষককে। আম্রতলায় কুড়িয়ে পাওয়া শিশুর নাম হয় আম্বপালি বা অম্বিকা। সংস্কৃতিতে আম্র আর প্রাচীন পালি ভাষায় আমকে বলা হত আম্ব। যার মানে পল্লব বা পাতা। অর্থাৎ আমগাছের নবীন পাতা।
বড় হয়ে আম্বপালি বা অম্বিকা বা আম্রপালি অপরূপা সুন্দরী নারীতে পরিণত হন। সেইসঙ্গে হয়ে ওঠেন রাজ্যের সেরা নর্তকী। তার রূপে-নাচে সে সময় মুগ্ধ ছিলেন সবাই। তাকে নিয়ে সে সময় বেশ দ্বন্দ্ব-সংঘাতও সৃষ্টি হয়। ঘটনার পরিক্রমায় একসময় তাকে বৈশালির নগরবধূ ঘোষণা করা হয়।
এরপর অবশ্য আম্রপালি তার জীবনের শেষ দিনগুলো গৌতম বুদ্ধের চরণে কাটিয়ে দেন বলে জানা যায়। আর এই আম্রপালির নামে ১৯৭৮ সালে ভারতের আম গবেষকরা দশোহরি ও নিলাম এই দুই আমের মধ্যে সংকরায়নের মাধ্যমে এক নতুন জাতের আম উদ্ভাবন করেন এবং নাম রাখেন আম্রপালি।
আম্রপালি আমের খোসা মসৃণ বা তেলতেলে। আম্রপালি নিচের দিকে খানিকটা সুঁচালো এবং উপরে একটু গোলাকৃতির হয় ছোট থেকে মাঝারি আকারের পাকা আম হলুদাভ সবুজ। শাঁস কমলা ও অনেক মিষ্টি। পাকা আম্রপালি আম বেশ কয়েক দিন ঘরে রাখা যায়। ২০ জুনের পর থেকে ভালোভাবে পাকা আম্রপালি আম পাওয়া যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।