জুমবাংলা ডেস্ক : রেললাইন কেটে ফেলা হলে বা ভেঙে গেলে সঙ্গে সঙ্গে স্টেশনমাস্টারের কক্ষে বেজে উঠবে অ্যালার্ম। একই সঙ্গে কল আসবে স্টেশনমাস্টারের মোবাইল ফোনেও।
এমন একটি ডিভাইস আবিষ্কার করেছেন নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর জোয়ানপুর গ্রামের মাহবুব আলমের ছেলে আব্দুল্লাহ আল কাফির। কাফির পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রিক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
তার দাবি, মাত্র ২০ হাজার টাকায় এক স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনের নিরাপত্তা দেবে তার এই ডিভাইস। সম্প্রতি গাজীপুরে রেললাইন কেটে ফেলায় ঘটা ভয়াবহ দুর্ঘটনা তার মনে দাগ কাটে। রেললাইনকে নিরাপদ করতে তাই প্রযুক্তি আবিষ্কারের চিন্তা মাথায় আসে তার।
আব্দুল্লাহ আল কাফি জানান, প্রতিটি স্টেশনে একটি কন্ট্রোল বক্স স্থাপন ও রেললাইনের সঙ্গে ওয়্যারিংয়ে খরচ পড়বে মাত্র ২০ হাজার টাকা। ওই স্টেশনের আওতায় রেললাইন কাটা পড়লে বা ফেটে গেলে সঙ্গে সঙ্গে কন্ট্রোল বক্সের অ্যালার্ম বাজবে। একই সঙ্গে অ্যালার্ম বাক্সে থাকা মোবাইল থেকে স্টেশন মাস্টারের মোবাইলে কল যাবে।
বিষয়টি জেনে রোববার রাতে এর আবিষ্কারকের খোঁজ নিয়েছেন ডাক, টেলিযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি (আইটিসি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী রুহুল আমিন প্রযুক্তি আবিষ্কারক আব্দুল্লাহ আল কাফির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আব্দুল্লাহ আল কাফি।
তিনি বলেন, রোববার রাতে প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে রুহুল আমিন প্রযুক্তির বিষয়ে যাবতীয় খোঁজখবর নেন। পরে তিনি আবার যোগাযোগ করবেন বলে জানান।
রুহুল আমিন জানান, বিষয়টি ডাক ও টেলিযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নজরে আসার পর তাকে খোঁজ নিতে বলেন। আজ সোমবার প্রতিমন্ত্রী কাফির সঙ্গে কথা বলবেন। প্রতিমন্ত্রী কাফির সঙ্গে কথা বলার পর তিনিই এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
আব্দুল্লাহ আল কাফি বলেন, ডিভাইসটি তৈরি করতে দিনরাত পরিশ্রম করেছি আমি। এটার কাজ হলো স্বাভাবিক রেললাইন কখনো যদি ফেটে যায় বা রেললাইন আলাদা হয়ে যায় তাহলে এটা সয়ংক্রিয়ভাবে সংকেত দিতে থাকবে। সেইসঙ্গে স্টেশন মাস্টারকে কল দিবে।
তিনি বলেন, ‘রেলওয়ে সেফটি ডিভাইস’টি আমার তৈরি করতে ১০ হাজার টাকা খরচ পড়েছে। তবে এটা যদি পরিপূর্ণভাবে রেলের নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করতে হয় তা হলে আরেকটু বড় করে স্থাপন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে হয়তো এটার খরচ পড়বে ২০ হাজার টাকা।
আব্দুল্লাহ’র বাবা মাহবুব আলম জানান, সন্তানের এমন আবিষ্কারে তিনি গর্বিত।
মাধনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (ইউপি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শনিবার আবদুল্লাহ তার অবিষ্কার দেখাতে তার বাড়িতে আসেন। এর পর থেকে এলাকাবাসী বিষয়টি জানতে পেরে যন্ত্রটি দেখতে আবদুল্লাহর বাড়িতে ভিড় করছে। রেলযাত্রাকে নিরাপদ করতে আবদুল্লাহর আবিষ্কৃত যন্ত্রটি সত্যিই কার্যকরী কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেওয়ান আকরামুল হক জানান, বিষয়টি এখনো তার জানা নেই। তিনি আজই খোঁজখবর নিয়ে আবদুল্লাহর আবিষ্কারকৃত যন্ত্রটি কতটা কার্যকরী তা পরীক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।