বিনোদন ডেস্ক : অনন্ত জলিল চলচ্চিত্রে পা রাখার পর থেকেই বিভিন্ন কারণে আলোচিত। কেননা বিশ্ব যখন প্রযুক্তির ছোঁয়ায় ডিজিটাল সিনেমা নির্মাণ শুরু করে, তখনও দেশে অ্যানালগ পদ্ধতিতে সিনেমা নির্মিত হতো। বিষয়টি অনুধাবন করে তিনিই প্রথম ডিজিটাল সিনেমা নির্মাণ করে দেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে তাক লাগিয়ে দেন।
এরপর থেকে নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে তিনি সিনেমা বানিয়ে বাজিমাত করেন। কিন্তু অনন্তর সিনেমা মানেই আলোচনা-সমালোচনা। এবার ঈদে অনন্ত’র ‘দিন দ্য ডে’ সারা দেশে মুক্তি পায়। এ নিয়েও কম আলোচনা-সমালোচনা হয়নি বা হচ্ছে না। সে যাই হোক, সিনেমা কিন্তু সফল। প্রশ্ন হচ্ছে অনন্ত’র সফলতায় ক্ষতি কার? অনন্ত-বর্ষার সাফল্যে পরাজয়ে যারা কষ্ট পান, ওরা কারা?
এমন প্রশ্নের পেছনে কারণও রয়েছে। এর আগে জেনে নেই ‘দিন দ্যা ডে’ সিনেমাটি কেমন চলছে প্রেক্ষাগৃহে। সিনেমাটি মুক্তির পর থেকে প্রেক্ষাগৃহগুলোতে দর্শকের ভিড় লক্ষ করা গেছে। তবে দেশের সবগুলো প্রেক্ষাগৃহ হাউসফুল যাচ্ছে তা ঠিক নয়। সিনেমাটির বাজেট, নির্মাণ, লোকেশন, অনন্ত-বর্ষার টানা প্রচার, তাদের বক্তব্য সব কিছুর জন্যই আরো কৌতূহল জন্মেছে দর্শকদের মধ্যে। তাছাড়া ৮ বছর পর এ সিনেমার মাধ্যমে পর্দায় ফিরেছেন অনন্ত-বর্ষা। যে কারণে দর্শকের আগ্রহ একটু বেশি। এতে দোষের কি? তাতে ক্ষতিটা কার হচ্ছে?
সিনেমাটি নিয়ে মিরপুরের সনি সিনেমা হলের কর্ণধার মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘ঈদে ‘দিন দ্য ডে’ মুক্তির পর থেকেই হাউসফুল যাচ্ছে। কাছাকাছি সময়ে এমন কোনো সিনেমা এমন যায়নি। সিনেমার সব টিকিট অগ্রীম বিক্রি হচ্ছে। দর্শকদের চাপের কারণে শো বাড়িয়েছি আমরা।’
চলচ্চিত্রের সংগঠনগুলোর অনুষ্ঠানে অনন্ত-বর্ষা দম্পতির সরব উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। উপস্থিত হওয়ার পাশাপাশি সেসব অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিক সহযোগিতাও করেন তারা। করোনা মাহামারিতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, প্রযোজক সমিতিতেও তার সহযোগিতা ছিল। চলচ্চিত্রের অনুষ্ঠানে তাকে ডাকলে পাওয়া যায় না এমন নজির খুবই কম। এবার সেই অনন্তের ডাকে সারা দেননি শিল্পীদের অনেকেই। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি গত রোজার ঈদে কার্ড ছাপিয়ে তার সিনেমার প্রচার করেছিল। এবার সেই তারাও অনন্তর ‘দিন দ্য ডে’ সিনেমার প্রচারে নেই। এমনকি অনন্তের ডাকে সারা দেননি তারা।
হয়তো অনন্তের আমন্ত্রে ত্রুটি ছিলো, হয়তো তিনি সিনেমার প্রচারের জন্য বেশি বেশি বলছেন। এরপরও যদি সিনেমাটি সফল হয় তাহলে ক্ষতি কার? কারো যদি ক্ষতি না হয় তাহলে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে কটাক্ষ করে কেন পোস্ট করা হয়? এমন প্রশ্ন অনন্ত জলিলের। যদিও বিষয়গুলো নিয়ে তিনি কথা বলতে রাজি নন।
নিন্দুককেরা যে যাই সমালোচনা করুক না কেন অনন্ত দেশীয় চলচ্চিত্রের নতুন দুয়ার উম্মোচন করেছেন। এই ধারাবাহিকতার অংশ ‘দিন দ্য ডে’। এই সিনেমার মাধ্যমে দীর্ঘদিন পরে বাংলা চলচ্চিত্র নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। সিনেমার প্রচারের খাতিরে হয়তো কিছু বিষয় অতি কথন মনে হলেও দেশীয় সিনেমার প্রাণ ফিরে পেয়েছে এবারের ঈদে মুক্তি পাওয়া সিনেমার মাধ্যমে। এর সুফল পাচ্ছে দেশীয় চলচ্চিত্র।
ঠিক এই সময় মিডিয়ায় কতিপয় কিছু মানুষ চলচ্চিত্র নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্যে লিপ্ত হয়েছেন। একজন নির্মাতা প্রশ্ন তুলেছেন বর্ষাকে কেন বলিউড থেকে ফোন করবেন? প্রযুক্তির যুগে বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে যে কেউই ফোন করতে পারেন। তাছাড়া বর্ষার সঙ্গে বলিউডের কারো সঙ্গে পরিচয় থাকাটা স্বাভাবিক নয় কি? আজকে অনন্তের সফলতায় চলচ্চিত্র শিল্পের সফলতাই বলে মত দিয়েছেন চলচ্চিত্র বোদ্ধারা।
সোহেল রানা বলেন, ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্র যখন সিনেমার জন্য ধুকছে এই সময় অনন্ত জলিলের মতো লোকের প্রয়োজন রয়েছে। অযথা তাকে যারা অ্যাটাক করে তারা ঈর্ষান্বিত হয়েই অ্যাটাক করে। তিনি যে টাকায় সিনেমা করেনে সে টাকায় অনেকে করতে পারেন না। তবে আমার মতে বিদেশী শিল্পী টেকনিশিয়ানদের পাশাপাশি আরো কিছু দেশী শিল্পী ও টেকনিশিয়ান নিতে পারেন। এতে দেশের চলচ্চিত্র উপকৃত হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।