জুমবাংলা ডেস্ক : গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি শিশুর ভেতর জন্ম নেওয়া আরেকটি শিশু অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সফলভাবে অপসারণ করেছেন একদল চিকিৎসক। যাকে ডাক্তারি ভাষায় বলে ‘ফিটাস ইন ফিটু’।
শনিবার (৬ জুলাই) সকালে হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শংকর চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে চিকিৎসকদল বিরল এ অস্ত্রোপচারটি করেন। সার্জারির পর শিশুটি সুস্থ রয়েছে। ৮ মাস বয়সী শিশুটির নাম আব্দুল্লাহ।
শিশুটির বাবার নাম এমরান হোসেন। তিনি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। বাড়ি গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বিকেবাড়ি এলাকায়।
ডা. শংকর চন্দ্র দাস বলেন, ফিটাস ইন ফিটু একটি জন্মগত সমস্যা, যা সচরাচর ঘটে না। যা প্রতি পাঁচ লাখ শিশুর জন্মে একটি শিশুতে পাওয়া যেতে পারে। সারা বিশ্ব জুড়ে এ রকম ঘটনা ঘটেছে প্রায় দুইশতেরও কম।
ডা. শংকর বলেন, বাস্তবে এটি হল এমন একটি অবস্থা যেখানে একটি শিশুর ভেতর আরেকটি শিশু থাকে। গর্ভাবস্থায় অনেক সময় জমজ না হয়ে এক ভ্রুণের ভেতর অন্য একটি ভ্রূণ ঢুকে যেতে পারে। দেশে হাতেগোনা কয়েকটি এ জাতীয় রোগীর অপারেশন হয়েছে। আর এ জাতীয় অস্ত্রোপচার শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এটিই প্রথম।
তিনি আরও বলেন, মায়ের পেটে যখন বাচ্চা আসে, অর্থাৎ অতি শুরুতে ডিম্ব নিষিক্ত হওয়ার পর কোষ বিভাজন হতে হতে সাধারণভাবে একটি বাচ্চার জন্ম হয়। কিন্তু কোষ বিভাজনের কোনো এক পর্যায়ে যদি কোষগুলো সমান দুইভাগে ভাগ হয়ে যায়, তবে দুইটি জমজ বাচ্চার জন্ম হতে পারে। কিন্তু কোষগুলো অসমান দুই ভাগে ভাগ হলে বেশি কোষযুক্ত ভাগ থেকে একটি সুস্থ শিশু জন্ম হয়। কম কোষযুক্ত ভাগ থেকে অপর একটি বাচ্চা বড় হতে থাকে। কিন্তু ওই বাচ্চাটির সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে তৈরি হয় না। এই বাচ্চাটি পরবর্তী সময়ে সুস্থ বাচ্চাটির শরীরের ভেতর ঢুকে পড়ে। বেঁচে থাকার জন্য সুস্থ বাচ্চাটির দেহ থেকে রক্তনালীর মাধ্যমে খাদ্য সংগ্রহ করে। এই দ্বিতীয় বাচ্চাটিকেই বলা হয় ফিটাস ইন ফিটু।
ডা. শংকর আরও বলেন, এই ফিটাস ইন ফিটু শিশুটির সাধারণত ব্রেইন তৈরি হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেরুদণ্ডের হাড় তৈরি হয়। ক্ষুদ্র আকারে হাত-পা তৈরি হয়, কিন্তু অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে তৈরি হয় না। শতকরা ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে এই ফিটাস ইন ফিটু শিশুটির অবস্থান হয় সুস্থ শিশুটির পেটের ভেতর। বাকি ২০ ভাগ ক্ষেত্রে শিশুটির অবস্থান হতে পারে বুকের ভিতর, তলপেটে, মাথার ভিতর, মুখের ভেতর, অন্ডকোষের ঝুলির ভেতর কিংবা পায়ুপথের পেছনে। এ শিশুটির ফিটাস ইন ফিটু সেক্রোকক্সিসিজায়ায় রিজিওন এরিয়ায় এটি তার পায়ু পথের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
বেনজীরের দুর্নীতির অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে, বেরিয়ে আসছে ‘থলের বিড়াল’
ঘণ্টাব্যাপী অস্ত্রোপচারের সময় সহযোগী অধ্যাপক ডা. হাবিব সেলিম খাজা, সার্জারি বিভিাগের সহকারী অধ্যাপক সামসুল হুদা, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মনিরুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক মইনুল হোসেন চৌধুরীসহ সার্জারি, অ্যানেস্থেশিয়া, আইসিইউ বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।