জুমবাংলা ডেস্ক : ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে তেলভর্তি ‘সাগর নন্দিনী-২’ জাহাজে ফের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে জাহাজটিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। এতে দগ্ধ হয়েছেন ১৪ জন। তাদের মধ্যে তিনজনকে বরিশাল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় জাহাজটিতে ৪ লাখ লিটার পেট্রল মজুত ছিল।
জানা গেছে, জাহাজে থাকা ১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেলের মধ্যে ৬ লাখ লিটার সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। বাকি তেল সাগর নন্দিনী-৪ নামের অপর জাহাজটিতে করে সরিয়ে নেওয়ার সময় হঠাৎ এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের পরপরই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বরিশাল, ঝালকাঠি, কাউখালী ও নলছিটির ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে।
দুর্ঘটনায় আহত সাগর নন্দিনী-৪ এর বাবুর্চি সংবাদমাধ্যমকে জানান, পাম্প দিয়ে এক নাগারে তেল উত্তোলন করায় এটি গরম হয়ে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে ১ জুলাই দুপুরে ঝালকাঠি সুগন্ধা নদীতে নোঙর করা অবস্থায় ১১ লাখ লিটার তেল নিয়ে বিস্ফোরিত হয় সাগর নন্দিনী-২। এ সময় ট্যাংকারটির মাস্টার কক্ষসহ পেছনের অংশটি উড়ে গিয়ে নদীর মধ্যে ডুবে যায়। জাহাজে থাকা মোট ৯ জনের মধ্যে পাঁচজন আহত ও দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার হলেও চারজন নিখোঁজ থাকেন।
রোববার (২ জুলাই) দুপুরে বিধ্বস্ত জাহাজটির ইঞ্জিনরুম থেকে উদ্ধার হয় গ্রিজার আব্দুস সালাম হৃদয়ের মরদেহ। এক দিন পর সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কোস্টগার্ডের নেতৃত্বে বিআইডব্লিউটি’র উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভিক ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ অভিযানে বাকি তিনজনের মরদেহ উদ্ধার হয় জাহাজটির ডুবে যাওয়া অংশ থেকে।
তৃতীয় দিন শেষে যাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তারা হলেন- মাস্টার ইনচার্জ রুহুল আমীন খান, সুপারভাইজর মাসুদুর রহমান বেলাল ও ড্রাইভার সরোয়ার হোসেন আকরাম। রোববার দুপুরে জাহাজের ইঞ্জিন রুম থেকে উদ্ধার হয় গ্রিজার আব্দুস সালাম হদয়ের মরদেহ।
কোস্টগার্ড অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট শাফায়েত হোসেন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আইনি প্রক্রিয়ায় মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে অভিযান সমাপ্ত করা হবে।
জাহাজটিতে উদ্ধার অভিযান শেষ হলেও তেল খালাসের কাজ চলছিল। এর মধ্যেই সন্ধ্যায় আবার জাহাজে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল।
সাগর নন্দিনী-২ নামের এই জাহাজটি মাত্র ছয় মাস আগে ২৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জ্বালানি তেল নিয়ে চাঁদপুরে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ডিপোতে যাওয়ার পথে ভোলার তুলাতুলি কাঠিরমাথা এলাকায় ডুবে গিয়েছিল। তখন কুয়াশার মধ্যে বালুবাহী একটি বাল্কহেডের সঙ্গে সংঘর্ষে ট্যাংকারটির তলা ফেটে গিয়েছিল।
এর আগে, ২০২১ সালের ১২ নভেম্বর সুগন্ধা নদীর একই স্থানে একই কোম্পানির সাগর নন্দিনী-৩ জাহাজটিতেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই বিস্ফোরণে পাঁচজন নিহত হয়েছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।