জুমবাংলা ডেস্ক : এবার ‘স্যার’ সম্বোধন না করে ‘ভাই’ বলায় শিক্ষকের উপর চড়াও হলেন সরকারি আরেক কর্মকর্তা। কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে রবিবার (২৬ মার্চ) সকালে কুলিয়ারচর উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে শহীদ সেলিম স্মৃতি ভাস্কর্য শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে এই ঘটনা ঘটে।
সরকারি কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমান কুলিয়ারচর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার। আর অভিযোগকারী কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নের উত্তরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কুলিয়ারচর উপজেলা শাখার সভাপতি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্বাধীনতা দিবসের ওই অনুষ্ঠান চলাকালে শিক্ষক লুৎফুল আজাদ সরকারি কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমানকে ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করেন। এতে মুশফিকুর খেপে যান এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মাইক্রোফোনের সামনেই বলতে থাকেন, ‘কে আপনার ভাই? নিজেকে কত বড় নেতা দাবি করেন? স্যার বলেন নাই কেন?’
এ সময় অনুষ্ঠানে কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম, কুলিয়ারচর থানার ওসি গোলাম মস্তুফা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছাসহ উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সবাই মাইকে এসব কথা শুনে হতবাক হয়ে যান।
এ বিষয়ে শিক্ষক লুৎফুল আজাদ দাবি করেন, ‘আমি আমাদের সংগঠনের পক্ষে ফুল দিতে এসেছিলাম। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও সংগঠনের নাম না বলায় আমি ওনাকে ভাই সম্বোধন করে বিষয়টি জানতে চাই। তখন তিনি সবার সামনে আমার উপর চড়াও হন। স্যার না বলায় তিনি আমার ওপর এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করবেন বুঝতে পারিনি। এ সময় শিক্ষক হিসেবে নিজের কাছেই খুব অপমানবোধ করছিলাম।’
কুলিয়ারচর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার মুশফিকুর রহমান বিষয়টির সম্পর্কে দাবি করেন, ‘ঘটনাটি নিছক ভুল–বোঝাবুঝি ছিলো। আসলে পুষ্পার্ঘ্য পর্বে সিরিয়াল নিয়ে সবাই আমাকে বিরক্ত করছিলেন। সবার দাবি তাদের সংগঠনের নাম আগে ডাকা হোক। লুৎফুল আজাদ সাহেবও এসে যখন আমার কাছে একই ইস্যুতে কথা বলতে চাচ্ছিলেন, তখন আমি মেজাজ ধরে রাখতে পারিনি। এই ক্ষোভ প্রকাশের সঙ্গে স্যার বলা না বলার সম্পর্ক নেই।’
পরে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া ইসলাম ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা দুজনকে ডেকে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন।
এ বিষয়ে ইউএনও সাদিয়া ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার সময় আমিও সেখানে উপস্থিত ছিলাম। এ সময় পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ নিয়ে কিছু ঝামেলার সৃষ্টি হয়। সবাই সঞ্চালকের ওপর ক্ষুব্ধ হন। শিক্ষক লুৎফুল আজাদের সঙ্গে সঞ্চালকের সামান্য ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছে। দুজনের সঙ্গেই কথা বলার পর একে অপরের ভুল বুঝতে পেরেছেন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।