জুমবাংলা ডেস্ক : আমরা রাজনীতি বুঝি না, তারা মহা রাজনীতি বুঝে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার। তিনি বলেন, আমাদেরকে রাজনীতি শেখাতে আসবেন না। আপনারা ৩৬ বছর ফেইল করেছেন বলেই, ৩৬ দিনের এই আন্দোলন সফল হয়েছে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে আলোচনা সভায় তুষার এসব কথা বলেন।
আলাউদ্দীন মোহাম্মদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, সহ-মুখপাত্র সালেহ উদ্দীন সিফাতসহ অন্যান্যরা।
জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, “আমরা এতদিন যে ধরনের বাংলাদেশের ইতিহাস, এটা আমি আরো একটা আমাদের আলোচনা সবাই বলেছিলাম যে, বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে যে নির্মমতম ক্যু আওয়ামী লীগ করেছে, সেই ইতিহাসগুলো এখন পুনরুদ্ধার করার প্রক্রিয়ায় আছে। এই ইতিহাসগুলো পুনরুদ্ধার করা কিন্তু আসলে শুধু ইতিহাস পুনরুদ্ধার করা না, এটা আসলে আমাদের গণরাজনীতি, যেটা আলিফ আদীব খুব যথার্থ বলেছেন একটু আগে, যে পার্টির রাজনীতি এবং গণরাজনীতির যে পার্থক্য তিনি করার চেষ্টা করেছেন, পিপলের জন্য রাজনীতি করা, আরেকটা হলো পার্টির জন্য রাজনীতি করা। তো এই গণরাজনীতি করার জন্য, এই যে ইতিহাসটাকে পুনরুদ্ধার করা, এটা হচ্ছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনারা জানেন যে, ইতিহাস সে যে কথাটা বলবে, সেই কথাটাই আসলে রাজনীতিতে এসে কাজ করবে। ইতিহাস যার কথা বলবে, রাজনীতিতে আপনি তাকেই মানে অন্তত ক্ষমতার দিকে দেখতে পারবেন, এগুলো নিয়ে অনেক কথাবার্তা ইতিমধ্যে হয়েছে।
তো আমাদের এই ৫২ ভাষা আন্দোলন দেখেন, যে আওয়ামী লীগ সরকার বা আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা আমাদের ইতিহাসের সাথে এত বড় মানে অন্যায় করেছে, এত বড় জুলুম করেছে যে, তারা শেখ মুজিবুর রহমানকেও এই ভাষা আন্দোলনের স্রষ্টা বানিয়ে দিতে মানে পারলে তাকে বা ভাষা আন্দোলনের রূপকার বানিয়ে দেন।
কিন্তু তিনি আপনারা জানেন যে, ভাষা আন্দোলনে যতগুলো হিস্ট্রি মানে ওয়েল ডকুমেন্টেড যে হিস্ট্রি আছে, কোথাও শেখ মুজিবুর রহমানের তেমন কোন ভূমিকা ছিল না। তাহলে যেখানে তার ভূমিকা ছিল না, সেখানে আপনার তাকে জোর করে প্রতিষ্ঠা করার দরকার কি! বাকি যারা যাদের ভূমিকা আছে, তাদেরকে বাদ দিয়ে, এটাই ছিল আওয়ামী লীগের ইতিহাস। এটাকেই তারা বলেছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। এই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মানে যেটা, আসলে তাদের দলীয় ইতিহাস এবং যেটা আসলে দলীয় ইতিহাসও না, এটা আসলে শেখ পরিবারের ইতিহাস।”
তিনি আরো বলেন, “আপনি যদি দেখেন যে আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা গত ১৫ বছর যাবত যে ইতিহাসগুলো আমাদেরকে গেলানোর চেষ্টা করেছে, সেখানে আওয়ামী লীগেরই অন্যান্য লোকেরা নাই। তাজউদ্দিন আহমদ নাই, সিরাজুল আলম খান নাই, মাওলানা ভাসানী নাই, মাওলানা ভাসানী হচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা, তিনি নাই, আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ নাই। এরকম যারা আওয়ামী লীগের অন্যান্য যে অংশ আছে, যারা শেখ শেখ মুজিবুর রহমানের বাইরে, কে আছে তাহলে ইতিহাসে, শুধু আছে শেখ মুজিবুর রহমান আর শুধু আছে শেখ মনি। এর বাইরে কিন্তু তার মানে যে দল, যে পরিবার, তার দলের প্রতি ন্যায্যতা তৈরি করতে পারে না ইতিহাস লেখার ক্ষেত্রে, তারা কিভাবে জাতির ইতিহাস লিখবে! তারা লিখতে পারবে না এবং পারে নাই। এই ইতিহাসটাকে তারা যে, এই যে ইতিহাস নিয়ে যে ভয়ঙ্কর কর্মকাণ্ড করলো গত ১৫ বছর, এটার সাথে তাদের তারা যেভাবে দেশ শাসন করেছে, তার সরাসরি সম্পর্ক আছে।
রাজাকারের বাচ্চা নিয়ে অনেক কিছু আমাদের বক্তারা বলেছেন, আপনারা শুনেছেন। এই রাজাকারের বাচ্চা বলাটা খুব নিরহ ব্যাপার না। এটার সাথে কোটা সংস্কার আন্দোলন মানে এটাকে শুধু একটা ট্যাগিং হিসেবে দেখলে হবে না, এটার সাথে চাকরির সম্পর্ক করে ফেলেছে তারা, যে কোটা আপনি চাকরির ন্যায্যতা চাইলে, আপনি রাজাকার।
তার মানে হচ্ছে যারা পার্টির প্রতি লয়াল, যারা দলের প্রতি লয়াল, তারা তারা চাকরি পাবে এবং এর বাইরে যারা, এটার বিরোধিতা করবে, তারা হচ্ছে আসলে আপনার রাজাকার। এটা ছিল আওয়ামী লীগের লজিক। এভাবেই তারা দেশটা নিয়েছে।”
সারোয়ার তুষার বলেন, “তারা বাঙালি বনাম মুসলমান, প্রগতির পক্ষে বনাম প্রগতির বিপক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বনাম মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে, এই ধরনের নানা ধরনের বিভাজন করে, যেটা আমাদের বক্তারা বলেছেন যে, হত্যাযোগ্য প্রাণী তৈরি করেছে। আপনি রাজাকার, আপনি মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে শক্তি, মানে আপনি আওয়ামী লীগ বিরোধী হলেই এবং আওয়ামী লীগের ইতিহাস প্রকল্পের বিরোধিতা করলে, আপনি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি, আপনি রাজাকার, সুতরাং আপনাকে মেরে ফেলা যাবে। এটাই তারা করেছে এতকাল।
এইখান থেকে বাংলাদেশ বেরিয়ে এসেছে এবং সেই প্রথম ২১শে ফেব্রুয়ারি হচ্ছে আজকে আমরা পালন করছি। ফলে এই দিবসগুলো, আমাদের এই জাতীয় দিবসগুলো, আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, একটা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসমুক্ত, ফ্যাসিবাদমুক্ত, দলীয় অত্যাচারমুক্ত একটা সর্বজনীনভাবে, আপনি দেখেন কি স্বতস্ফূর্ত ভাবে সারাদেশের মানুষ আমরা দেখেছি ১৬ই ডিসেম্বর উদযাপন করেছে।
এখন ২১শে ফেব্রুয়ারি উদযাপন করছে, কারণ আগে যে একটা আনুষ্ঠানিকতা মাত্র ছিল, যে আওয়ামী লীগের ভয়ে, আওয়ামী লীগের পার্টি ক্যাডারদের ভয়ে, এই ধরনের দিবসগুলো ছিল আওয়ামী লীগের পার্টিদের সন্ত্রাস করার একটা মহড়া, মানে সন্ত্রাসী মহড়া দেখানোর এক একটা উপলক্ষ্য ছিল।”
তিনি বলেন, “৭ মার্চ কিংবা ১৬ই ডিসেম্বর, তারা যখন রাস্তায় নামতো, বাংলাদেশের মানুষকে তারা নাজেহাল করতো, মেয়েদেরকে তারা হয়রানি করতো, অপমান করতো রাস্তায়, এটাই ছিল তাদের এই সমস্ত দিবস উদযাপন করা। ৭ মার্চের সমাবেশগুলো তো দেখতেন, আপনারা আপনাদের মনে আছে যে, এই সমাবেশগুলোর পরে মেয়েরা এসে ফেসবুকে লিখতো, তাদের গায়ে পানি ঢেলে দেওয়া থেকে শুরু করে, অপমানমূলক কথাবার্তা বলা থেকে শুরু করে, হেন কোন খারাপ কাজ নাই, যেটা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ক্যাডাররা করে নাই।
আজকে আমরা আওয়ামী লীগ মুক্ত পরিবেশে ২১শে ফেব্রুয়ারি উদযাপন করতে পারছি। আমাদের ৫২ ভাষা আন্দোলনের যারা শহীদ হয়েছেন, যারা আমাদের এই যে আমাদের স্বাধীনতার যে সংগ্রাম, আমাদের যে লম্বা যে সংগ্রামের ইতিহাসটা আমরা টানি, এখানেও আমরা ২১ এবং ২৪ কে যে মেলানোর চেষ্টা করেছি, এটার যারা একেবারে শুরুর দিকে, আমাদের যারা পূর্ব প্রজন্ম আছেন, যাদের গর্বিত উত্তরাধিকার আমরা, তাদেরকে আমরা আজকে মন খুলে যুক্তি বিবর্জিত, ইতিহাস বিবর্জিত আবেগ কিন্তু অনেক ক্ষতিকর।
দুটো জিনিস এখানে আমাদের খেয়াল করা দরকার, যে কি ২১শে ফেব্রুয়ারি আজকে কেন আমাদেরকে, আমরা কি শুধু এটা একটা মানে আনুষ্ঠানিকতা, নাকি এর আজকেও কোন প্রাসঙ্গিকতা আছে।
তো সেই ক্ষেত্রে আমার দুটো জিনিস মনে হয়। একটা নাম্বার হচ্ছে, যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল ২১ ফেব্রুয়ারি, এটা কিন্তু একটা আইন ছিল সামরিক সরকারের বা ওই সময়কার পাকিস্তান সরকারের একটা আইন ছিল। এই ১৪৪ ধারা আপনি ভঙ্গ করেছেন। আমাদের দেশের ছাত্ররা এবং জনগণ ভঙ্গ করেছে। কেন! কারণ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করলে আসলে ন্যায্যতার প্রতিষ্ঠা করা যাচ্ছিল না। তার মানে আইন যদি ন্যায্যতার বিপক্ষে দাঁড়ায়, আইন যদি ইনসাফের বিপরীতে দাঁড়ায়, তাহলে ওই আইন ভেঙে ফেলা, এটাই হচ্ছে কর্তব্য। এটাই হচ্ছে ইনসাফ। এটাই হচ্ছে ন্যায্যতা।
সুতরাং আজকেও দেখেন, এটা প্রাসঙ্গিকতা। আমি এই কারণে বললাম যে, আজকেও বাংলাদেশের যে আইন, যে সংবিধান, এই সংবিধান সাংবিধানিক কাঠামো, এই আইনি কাঠামো, দীর্ঘদিন যাবত এখানকার বাংলাদেশের মানুষের জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে। কোন রকম জাস্টিস, কোন রকম ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছে আইনি কাঠামো। এই আইনি কাঠামোর মধ্যে লজিক দিয়ে তারা আমাদেরকে ক্রসফায়ার করেছে।
তারা বলেছে যে, আপনি যদি ৪৬ নাম্বার অনুচ্ছেদ পড়ে দেখেন, সেখানে বলা হচ্ছে যে, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে, যেকোনো ব্যক্তির যেকোনো কাজকে তারা ভ্যালিড করতে পারবে। তার মানে যখন মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলবে, চলেছে তো এখানে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যদি এক এবং মিডিয়া ন্যারেটিভগুলো এরকম ছিল কিন্তু যে, মাদকের এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে হত্যা করছে। এটা বসে বসে ওবায়দুল কাদের সেলিব্রেট করেছেন। তার মানে ওই মাদকের এক গ্রুপ যে হত্যা করলো, এইটা হচ্ছে আপনার ওই সময় রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে ওটা যৌক্তিক। ৪৬ অনুচ্ছেদ দ্বারা তারা চাইলে এগুলো, মানে চাইলে এগুলো ন্যায্যতা করতে পারবে।
সুতরাং আমরা এই কারণে বলেছি যে, এই সংবিধান, যে কিনা বাংলাদেশের তিন-তিনটা নির্বাচন, তিন-তিনটা ভুয়া নির্বাচন আটকাতে পারে নাই, বাংলাদেশের মানুষের গুম হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে নাই, আপনারা জানেন, এখানে অনেকেই আইনের মানুষ আছেন। আলামিন ভাই, আইন ব্যাকগ্রাউন্ডের মানুষ, জাকারিয়া ভাই আছেন, আপনারা জানেন।”
সারোয়ার তুষার বলেন, “যদি কোন নাগরিককে পুলিশ বিনা পরোয়ানায় ধরে নিয়ে যায়, তাহলে আপনার অধিকার আছে ২৪ আদালতে গিয়ে আপনি বলবেন যে, ২৪ ঘন্টার মধ্যে আমার ওই নাগরিকটাকে. আমার ওই লোকটাকে আদালতে আপনি হাজির করেন। এটা নিয়ম। এটাকে হেভিয়াস পারপাস বলা হয়। এই নিয়মটাকে তারা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। কিন্তু এতদিন তার মানে, এই সংবিধান আপনাকে এই প্রটেকশন দিতে পারে নাই।
সাংবাদিক, এখানে আমাদের অনেক সাংবাদিক ভাইয়েরা আছে। আপনার সাংবাদিক কাজলের সাথে কি ঘটেছিল! খেয়াল করে দেখেন! কতদিন তিনি গুম ছিলেন! তারপর তাকে আট মাস সম্ভবত গুম ছিলেন। গুম থাকার পরে তাকে সীমান্তে অনুপ্রবেশকারী মামলা দিয়ে দেখানো হলো, ওই মামলায় জামিন দেওয়া হলো এবং সাথে সাথে গ্রেফতার করা হলো এবং তার সাথে সাথে আবার তাকে জেলে পাঠানো হলো।
এই যে দেখেন, আইন আর বে-আইনের যে ফারাক গুলোকে এমনভাবে একাকার করে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ, গুম একটা বেআইনি ঘটনা, আর ধরে নিলাম ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটা আইন। তাইলে বেআইনি একটা ঘটনার মধ্যে দিয়ে, যাকে তারা এতদিন গুম করে রেখেছিল, সেই লোকটাকে তারা আট মাস পরে জনসম্মুখে এনেছে, আনার পরে আবার মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়েছে। তাহলে বেআইন আর আইনের যে ফারাক থাকতে হবে একটা রাষ্ট্রে, এটাকে তারা একাকার করে দিয়ে ভেঙে ফেলেছিল।
এবং একদিন, আপনারা জানেন, আন্তর্জাতিক সনদ অনুযায়ী, যদি কেউ ২৪ ঘন্টা কাউকে যদি বিনা পরোয়ানায় যদি তার কাস্টরি পুলিশ স্বীকার না করে, যদি একদিন তাকে কোথাও গোপনে আটকে রাখে, তাহলে সেটাই গুম। তাহলে আপনি বুঝে দেখেন, সাংবাদিক কাজলসহ এরা কত বড় বড় গুমের শিকার হয়েছে, মুশতাক সহ আরো অনেক কতগুলো ঘটনা ঘটেছে। এখনো আমরা জানতে পারছি যে, গুম কমিশনের রিপোর্টে ১৬০০ এর বেশি লোকের আপনার অভিযোগ জমা পড়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “তাহলে এই সংবিধান আপনাকে প্রটেকশনটা দিতে পারে নাই। তাহলে আজকে যখন ছাত্ররা বলছে, কি কারণে ছাত্ররা গাত্রদাহের শিকার হচ্ছে, এটা আপনাদেরকে বুঝতে হবে। কেন আপনাদের এই কথাগুলো, আমি কালকে এক বিএনপির বর্ষীয়ান নেতার সাথে একটা আলোচনায় ছিলাম, আমি তাদের কথা হতবাক হয়ে যাই যে, তারা কি বলেন। তারা কি ইতিহাস আমাদেরকে গেলাতে চান। তারা বলছেন যে, আমরা ৭২ সংবিধান বিরোধিতা করি। এজন্য আমরা নাকি স্বাধীনতা বিরোধী, আমরা নাকি বাংলাদেশের ইতিহাসকে স্বীকার করি না।
অথচ তিনি নিজে ৯০ এর ছাত্র আন্দোলনের একজন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছাত্রনেতা ছিলেন। তা আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম যে, ভাই আপনারা যে তিন জোটের রূপরেখা দিলেন রাজনৈতিক দলগুলো, এই তিন জোটের রূপরেখাগুলো বাস্তবায়ন হলো না কেন! তখন তো আপনারা বলেছিলেন, মৌলিক অধিকার বিরোধী কোন আইন করা যাবে না। তাহলে মৌলিক অধিকার বিরোধী আইন বাংলাদেশে হলো কেন। এরপরে আপনারা বলেছিলেন, সুষ্ঠ নির্বাচনের বাইরে একদিনও কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। তাহলে কিভাবে এরকম আপনারা নিজেরা ৯২ সালে উপনির্বাচন করলেন, যেটি প্রশ্নবিদ্ধ। ৯৫ সালে আপনারা একটা প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করলেন। আওয়ামী লীগ সরকার তিনটা এরকম নির্বাচন করলো। কিভাবে এটা ঘটতে পারলো? এই গণঅভ্যুত্থানের পরে এটা ঘটতে পারলো তার কারণ হচ্ছে, তারা একটা গণঅভ্যুত্থানকে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার নামে, আবারো একটা রেজিম চেঞ্জে পাঠিয়ে দিয়েছে।
খেয়াল করে দেখেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলা আলিফ আদীবকে আমি ধন্যবাদ জানাই যে, তিনি একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আমাদের সামনে তুলে এনেছেন যে, এই রাজনৈতিক দলগুলো যারা অষ্টপ্রহর আমাদেরকে জ্ঞান দেয় যে, আমরা রাজনীতি বুঝি না, তারা মহা রাজনীতি বুঝে, তারা এরশাদকে, যাকে আমাদের ছাত্র জনতা পতন ঘটিয়েছে, সেই এরশাদকে তারা শেষ দিন, মৃত্যুর শেষ দিন পর্যন্ত রাজনীতি করতে দিয়েছে।
এখনো তারা বলতেছে যে, শেখ হাসিনাকে আসতে দিবে তারা। শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ নির্বাচন করুক। জনগণ নাকি সিদ্ধান্ত নিবে। এটা নাকি আমরা নাকি বলতে পারবো না যে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মানে আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ কিংবা নিবন্ধন বাতিলের দাবি নাকি করা যাবে না। জনগণ নাকি নির্বাচনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিবে। আরে ভাই এখন তো বলতে হয় যে, আমরা কি বোকা নাকি! ৫ আগস্টে তো আমরা ইতিমধ্যেই, এই জনগণ তো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রায় হচ্ছে আওয়ামী লীগ একটা পলাতক দল। বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেছে, তারা এখন পরিষ্কারভাবে ভারতের এজেন্ট। আবার নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন এখানে এনে, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবার আমাদের প্রমাণ করতে হবে যে, আমরা আওয়ামী লীগকে চাই না। আমাদেরকে রাজনীতি শেখাতে আসবেন না। আপনারা ৩৬ বছর ফেইল করেছেন বলেই, ৩৬ দিনের এই আন্দোলন সফল হয়েছে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।