মালয়েশিয়ার অন্তত ১০ জন সংসদ সদস্যকে ডিপফেক যৌন ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইলের শিকার হতে হয়েছে। হামলাকারীরা ভিডিও প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১ লাখ মার্কিন ডলার দাবি করেছে। শিকারদের মধ্যে বেশির ভাগই প্রধানমন্ত্রী আনওয়ার ইব্রাহিমের জনগণের ন্যায়বিচার পার্টি (পিকেআর)-এর সদস্য।
যোগাযোগমন্ত্রী ফাহমি ফাজিল জানিয়েছেন, সপ্তাহান্তে এমপিদের একই ধরনের ইমেল পাঠানো হয়েছে। ইমেলে বলা হয়েছিল যে, নির্দিষ্ট কিউআর কোডের মাধ্যমে অর্থ প্রদান না করলে ভিডিওগুলি জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে। ইমেলগুলোতে ডিপফেক ভিডিওর স্ক্রিনশট সংযুক্ত ছিল, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি বলে সরকার ধারণা করছে।
মালয়েশিয়ার ইতিহাসে এটি এককভাবে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রাজনীতিবিদকে লক্ষ্য করে পরিচালিত ব্ল্যাকমেইল প্রচেষ্টা। এর আগে ব্ল্যাকমেইল সাধারণত সিনিয়র নেতা বা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের লক্ষ্য করত। তদন্তে দেখা গেছে, ইমেলগুলোতে প্রায় এক ধরনের লেখা ব্যবহার করা হয়েছে এবং স্ক্রিনশটগুলোও প্রায় একই রকম ছিল। সবকিছু একই ইমেল ঠিকানা থেকে পাঠানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফাহমি নিজেও শিকারদের মধ্যে রয়েছেন। অন্য শিকারদের মধ্যে ছিলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী রাফিজি রামলি, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আদম আদলি এবং সিনিয়র এমপি ওং চেন। এছাড়া বিরোধী দলের কেদাহ রাজ্য নির্বাহী পরিষদের কাউন্সিলর ওয়ং চিয়া ঝেনকেও একই ব্ল্যাকমেইলের লক্ষ্য করা হয়েছে।
রাফিজি রামলি সম্প্রতি রাজনৈতিকভাবে চাপের মুখে পড়েছেন। আগস্ট মাসে তার ১২ বছরের ছেলে অজানা কোনো পদার্থ দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়, যখন তিনি মা’র সঙ্গে শপিং সেন্টার থেকে বের হচ্ছিল। রাফিজি চলতি বছর মে মাসে পিকেআরের ডেপুটি প্রেসিডেন্সি নির্বাচনে হেরে মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। এরপর তিনি সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিষয়গুলো নিয়ে সক্রিয়ভাবে সমালোচনা চালিয়ে আসছেন। তিনি বলেছেন, ‘অনেকে মনে করে রাজনীতিবিদ হওয়া সহজ। কিন্তু যদি আপনি দুর্নীতি প্রকাশ করেন বা প্রতিষ্ঠিত স্বার্থকে চ্যালেঞ্জ করেন, আপনার দৈনন্দিন জীবন এমনভাবে ব্যাহত হতে পারে।’
ডিপফেক যৌন ভিডিও মালয়েশিয়ার রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পরিচিত মানহানির কৌশল। ২০১১ সালে আনওয়ার ইব্রাহিমের বিরুদ্ধেও এ ধরনের ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী আজমিন আলির সঙ্গে সম্পর্কিত যৌন ভিডিওর কারণে তার সহকারী গ্রেপ্তার হন।
বর্তমানে মালয়েশিয়ার সরকার ব্ল্যাকমেইলকারীদের খুঁজছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। এটি দেশটির রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অনলাইন নিরাপত্তা ও নৈতিকতার গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।