নিউরোসায়েন্স লেখক সুসানা মার্টিনেজ-কন্ডে ও স্টিফেন ম্যাকনিক অ্যাপলের বিরুদ্ধে ক্লাস-অ্যাকশন মামলা দায়ের করেছেন। তাদের অভিযোগ, অ্যাপল আইনবহির্ভূতভাবে তাদের বই ব্যবহার করেছে অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স ট্রেনিং করার জন্য। মামলাটি দায়ের হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ফেডারেল কোর্টে। এটি অ্যাপলের গোপনীয়তা-কেন্দ্রিক ভাবমূর্তিতে বড় ধরনের আঘাত করেছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, অ্যাপল বুকসথ্রি ডেটাসেট ব্যবহার করেছে। এটি একটি বিশাল সংগ্রহ, যাতে হাজারো পাইরেটেড বই রয়েছে। অ্যাপল গত বছর কপিরাইট উদ্বেগের পর এই ডেটাসেট ব্যবহার বন্ধ করে।
অ্যাপলের নৈতিক অবস্থান প্রশ্নের মুখে
অ্যাপল দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তার রক্ষক হিসেবে উপস্থাপন করে আসছে। কিন্তু এই মামলা প্রতিষ্ঠানটির নৈতিক মানদণ্ড নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তোলে। বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রতিযোগিতায় নামার সময় এই অভিযোগ খুবই অস্বস্তিকর।
মামলায় লেখকদ্বয়ের দুটি বেস্টসেলার বইয়ের কথা উল্লেখ রয়েছে। বই দুটি হলো ‘স্লাইটস অফ মাইন্ড’ ও ‘চ্যাম্পিয়নস অফ ইলিউশন’। অ্যাপল এখনও এই অভিযোগের ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এআই শিল্পে কী প্রভাব ফেলবে মামলাটি?
এই মামলার ফলাফল পুরো এআই শিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ওপেনএআই, গুগল ও মেটার মতো কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে। তবে অ্যাপলের ক্ষেত্রে বিষয়টি বেশি সংবেদনশীল। কারণ তারা নিজেদের উচ্চ নৈতিক মানের দাবিদার।
মামলাটি সফল হলে ভবিষ্যতে এআই মডেল ট্রেনিংয়ের নিয়মকানুন বদলে যেতে পারে। কোম্পানিগুলোকে হয়তো লাইসেন্সকৃত কনটেন্ট ব্যবহার করতে বাধ্য হতে হবে। এটি এআই উন্নয়নের গতিপথ পরিবর্তন করে দিতে পারে।
ব্যবহারকারীদের জন্য কী অর্থ বয়ে আনে?
এই ধরনের অভিযোগ ব্যবহারকারীর আস্থার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। অ্যাপল ইন্টেলিজেন্সে যারা ডেটা দিচ্ছেন, তারা তাদের তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হতে পারেন। যদিও অ্যাপল দাবি করে যে তারা ব্যবহারকারীর ডেটা সর্বোচ্চ সুরক্ষিত রাখে।
মামলাটির ফলাফল এআই ও কপিরাইট আইনের মধ্যে সমন্বয় কীভাবে হবে, তা নির্ধারণ করবে। এটি ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নৈতিক কাঠামো গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
অ্যাপলের এই মামলা প্রতিষ্ঠানটির গোপনীয়তা নীতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে অ্যাপল ইন্টেলিজেন্সের সম্প্রসারণের সময় এই অভিযোগ তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে। আইনি লড়াইটি কপিরাইট ও এআই ট্রেনিংয়ের মধ্যে সম্পর্ক নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করবে।
জেনে রাখুন-
Q1: অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স কী?
এটি অ্যাপলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্ল্যাটফর্ম, যা আইওএস ও ম্যাকওএসে ইন্টিগ্রেটেড হবে।
Q2: বুকসথ্রি ডেটাসেট কী?
এটি একটি বৃহৎ ডিজিটাল লাইব্রেরি, যাতে হাজারো কপিরাইটকৃত বই পাইরেটেড সংস্করণ হিসেবে রয়েছে।
Q3: মামলাটির বর্তমান অবস্থা কী?
মামলাটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং আদালতে এর শুনানি চলমান।
Q4: অ্যাপলের পূর্বের অবস্থান কী ছিল?
অ্যাপল ২০২৩ সালে কপিরাইট উদ্বেগের কথা স্বীকার করে বুকসথ্রি ডেটাসেট ব্যবহার বন্ধ করে।
Q5: এই মামলার সম্ভাব্য ফলাফল কী?
মামলা সফল হলে এআই কোম্পানিগুলোকে লাইসেন্সকৃত কনটেন্ট ব্যবহার করতে বাধ্য করা হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।