বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স) হলো মানুষের চিন্তাভাবনাগুলোকে কৃত্রিম উপায়ে কম্পিউটার বা কম্পিউটার প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্রের মধ্যে রূপ দেওয়ার ব্যবস্থা। আসলে আমারা জানি, কম্পিউটারের নিজস্ব কোনো বুদ্ধি নেই। মানুষের সংরক্ষিত তথ্য কম্পিউটার প্রদান করে থাকে। কোনো সমস্যার আলোকে নিজ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে পারে না। কম্পিউটারও যাতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে নিজ থেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তার জন্য অনেক আগে থেকে গবেষণা হয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা পেয়েছি ‘চ্যাটজিপিটি’ নামক একটি সফটওয়্যার। চ্যাটজিপিটি অত্যন্ত শক্তিশালী, চাইলে মানুষের মতো যে কোনো সময় যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। শিক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগের সুযোগ কোথায়?
আমরা জানি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি সাধারণত অ্যালগরিদম ও মেশিন লার্নিং-সুবিধা কাজে লাগিয়ে বিশাল তথ্যভান্ডার বিশ্লেষণ করে ফলাফল ও অনুমান জানিয়ে থাকে। মানুষ বেশি কাজ করলে ক্লান্ত হয়ে যায়, বিরতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির বিরতির প্রয়োজন নেই। সব সময়ই কাজ করতে পারে। একসঙ্গে হাজার হাজার কাজ দ্রুত করার পাশাপাশি খুব অল্প সময়ে নতুন অনেক বিষয় শিখতে পারে। মূলত আগের তথ্য বিশ্লেষণ করেই বিভিন্ন সেবা দিয়ে থাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি। যেহেতু এটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে তথ্য প্রদান করে তাই ভুল হওয়ার আশঙ্কা অনেক কম এবং শিক্ষাক্ষেত্রে বিভিন্ন কাজে অনেক তথ্যের প্রয়োজন হয় যেটা এখান থেকে গ্রহণ করা যেতে পারে।
যেহেতু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির লক্ষ্য হলো এমন একটি কম্পিউটার সিস্টেম তৈরি করা, যা মানুষের আচরণ ও চিন্তাশক্তির আদলে জটিল সমস্যার সমাধান করবে। তাই যে সমস্ত গাণিতিক জটিল ও কঠিন কাজ শিক্ষার্থীদের দ্বারা করা সম্ভব হয় না এগুলোর সমাধান করতে পারি। নির্ভুল তথ্যের পাশাপাশি মানুষের আদলে বুদ্ধিমত্তা থাকায় সাইবার নিরাপত্তা, ভিডিও গেমস, নকশা, স্মার্ট গাড়ি, ডেটা সেন্টার ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহার করতে পারি।
আবার ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটের কথাই ধরা যাক। অনেক ছাত্রছাত্রী ডাটা এন্ট্রি, কনটেন্ট রাইটিং বা ছোটখাটো কাজ করতেন। স্ক্রিপ্ট রাইটিং থেকে শুরু করে প্রেজেন্টেশন তৈরিও করার কাজ করে আয় করে। তারা এখন অল্প সময়ে তাদের কাজ করতে পারে। আবার যেসব ছাত্রছাত্রী, যারা টাকার বিনিময়ে কাজ করে নিত তারাও এখন ও তাদের নিজের কাজ নিজেই করতে পারে।
আমরা জানি, প্রত্যেকটা জিনিসের যেমন উপকার আছে তেমনি ক্ষতিকর দিক রয়েছে। আসলে এটা যেমন আধুনিকতার ছোঁয়া নিয়ে এসেছে এবং নিয়ে এসেছে কিছু সমস্যা। যেহেতু অল্প সময়ে যে কোনো সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে তাই এর ফলে শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তি নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছে। নিজে থেকে কোনো ক্রিয়েটিভ কাজ করতে চাইছে না। সর্বদা প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থা তৈরি করছে করে নিচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের অনলাইন কাজ যেগুলো শিক্ষার্থীরা করত এবং যে কাজের পারিশ্রমিক দিয়ে শিক্ষা ব্যয় মেটাত সেই কাজগুলো এখন চ্যাটজিপিটি হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা করতে পারছে না এবং বাড়তি টাকা ইনকামের কোনো সুযোগ নেই। আবারও বেশির ভাগ শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে কর্ম বিমুখতা। এছাড়াও গবেষণা ও সৃজনশীল মূলক কাজ হচ্ছে না বললেই চলে যা হতে পারে হুমকির কারণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।