বিনোদন ডেস্ক : যাওয়া অনেক ঘটনার মধ্যে রয়েছে নায়িকা হওয়ার ঘটনাও। অপু বিশ্বাসের বাবার নাম উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ও মা নাম শেফালি বিশ্বাস। উপেন্দ্রনাথ-শেফালি বিশ্বাস দম্পতির তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।
তাদের মধ্যে সবার ছোট অপু। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে বগুড়াতেই। আলোর মেলা কেজি স্কুল থেকে প্রাইমারি ও ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে এসএসসি পড়েন । সরকারি মুজিবুর রহমান কলেজে ইন্টারমিডিয়টে ভর্তি হন।
পরিবারের সবার কাছে তিনি অবন্তী বিশ্বাস নামে পরিচিত। ১৯৮৩ সালের ১১ অক্টোবর বগুড়ার সদর উপজেলার কাকনারপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। মায়ের উৎসাহেই মূলত নাচ শিখতে শুরু করেন অপু। শিখেছেন বগুড়ার বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে। তারপর শিল্পকলা একাডেমী ও আমরা কজনা এবং সবশেষে ঢাকার নৃত্যাঞ্চল। অপু বহু সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, তার নায়িকা হওয়ার পিছনে মায়ের অনেক অবদান রয়েছে। তিনিই তাকে নাচ শিখিয়েছেন।
ক্লাস নাইনে পড়া অবস্থায় নৃত্যাঞ্চল আয়োজিত একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দশম হন অপু। তখন এক অভিনয়শিল্পী আহসানুল হক মিনুর মাধ্যমে যোগাযোগ হয় গুণী নির্মাতা আমজাদ হোসেনের সঙ্গে। এরপর ২০০৪ সালে এই পরিচালকের ‘কাল সকালে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় যাত্রা শুরু করেন। তখন অপু বিশ্বাস নবম শ্রেণির ছাত্রী। ২০০৬ সালে এফ আই মানিক পরিচালিত ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবিতে প্রধান নায়িকা হয়ে অভিনয় করেন শাকিব খানের বিপরীতে।
ছবিটি ব্যবসা সফল হওয়ার পর অপুকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। রাতারাতি তারকা হয়ে যান তিনি। এক সাক্ষাৎকারে জানা যায় নৃত্যাঞ্চল আয়োজিত প্রতিযোগিতায় অপুর যে ছবি তোলা হয় সেটি কোটি টাকার কাবিন’ ছবি ব্যবহার হয়েছে। তিনি এতোই জনপ্রিয় হন যে এক ঈদে তার তিনটি ছবি মুক্তি পাওয়ার রেকর্ডও আছে। ব্যবসাসফল অনেক চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন অপু। ২০০৭ সালে মান্নার বিপরীতে ‘মেশিনম্যান’ ছবিতে এবং শাকিব খানের বিপরীতে ‘কাবিননামা’ ছবিতে অভিনয় করেন অপু।
এরপর ‘পিতার আসন’, ‘চাচ্চু’, ‘দাদিমা’, ‘মিয়া বাড়ির চাকর’, ‘জন্ম তোমার জন্য’, ‘মায়ের হাতে বেহেশতের চাবি’, ‘তোর কারণে বেঁচে আছি’, ‘কিং খান’, ‘বুক ফোটে তো মুখ ফোটে না’, ‘তুমি স্বপ্ন তুমি সাধনা,’ ‘মনে প্রাণে আছ তুমি’, ‘ভালোবাসার লাল গোলাপ’, ‘মন যেখানে হৃদয় সেখানে’, ‘জান আমার জান’, ‘মনে বড় কষ্ট’, ‘মাই নেম ইজ খান’, ‘সম্রাট’, ‘রাজনীতি’, ছবিগুলোও সুপারহিট ব্যবসা করে। ঢাকার চলচ্চিত্রে গড়ে ওঠে শাকিব-অপু নতুন জুটি। ২০০৬ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অপু–শাকিব জুটি একাধারে ৭০ টির মতো ছবিতে অভিনয় করেন।
শাকিব খানের সঙ্গে অপু বিশ্বাসের জুটি দর্শকদের গ্রহণযোগ্যতা পায় দারুণভাবে। একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে এক সময় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাদের। শাকিব খানের বাইরে অপু অভিনয় করেছেন মান্না, ফেরদৌস, রিয়াজ, আমিন খান, অমিত হাসান, ইমন, কাজী মারুফ, নীরব ও ভারতের কলকাতার ইন্দ্রনীলের সঙ্গে। অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস দেবদাস অবলম্বনে নির্মিত ছবিতেও। চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত এই ছবিতে অপু অভিনয় করেন পার্বতী চরিত্রে। ছবিটিতে দেবদাস চরিত্রে শাকিব খান আর চন্দ্রমুখী চরিত্রে অভিনয় করেন মৌসুমী।
অপু বিশ্বাস ২০০৮ সালে ১৮ এপ্রিল গোপনে অভিনেতা শাকিব খানকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরও তাঁরা কেউই এই বিষয়টি নিয়ে কোনো মুখ খোলেননি। ‘বসগিরি’ ছবিতে শাকিব খান নবাগত বুবলীর সঙ্গে জুটি হয়ে অভিনয় করেন। শাকিব ও বুবলী জুটি যখন সবার আলোচনায় আসে ঠিক তখন অপু বিয়ের ব্যাপারটি সামনে নিয়ে আসেন। অপুর ধারণা ছিল, গোপনে শাকিব খান ঢালিউডের নবাগত নায়িকা বুবলীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন।
এর আগে ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ সালে দেশের বাইরের একটি হাসপাতালে জন্ম নেয় ছেলে সন্তান আব্রাম খান জয়। ছেলের জন্মের পরও বিয়ের বিষয়টি লুকিয়ে রাখেন এই অভিনেত্রী। ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল বিকেলে একটি টেলিভিশনে সরাসরি সাক্ষাৎকারে অনুষ্ঠানে অপু বিশ্বাস উপস্থিত হয়ে শাকিব খানের সঙ্গে তাঁর বিয়ের কথা প্রকাশ করেন। অপু এও জানান, মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করে নাম পরিবর্তন করে তিনি শাকিব খানকে বিয়ে করেন। বিয়ের কথা জনসম্মক্ষে আসার পর থেকে শাকিব ও অপুর সংসারে টানাপোড়েন তৈরি হয়।
দুজনের মধ্যে সম্পর্কের দুরত্ব দিনের পর দিন বাড়তে থাকে। একটা সময় তো আইনি সহায়তা নিয়ে দুজনের মধ্যকার বিবাহিত জীবনের সম্পর্কের ইতি টানতে হয়। ২০১৮ সালের ১২ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে শাকিব ও অপুর বিবাহিত জীবনের অবসান ঘটে। বিয়ে বিচ্ছেদের পর অপু আবার কাজে ফেরার ব্যাপরে সিরিয়াস হন। জুটি বাঁধেন সময়ের আলোচিত নায়ক বাপ্পী চৌধুরীর সঙ্গে। এই জুটির প্রথম ছবি দেবাশীষ বিশ্বাস পরিচালিত শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ টু।
দূরবীণ দিয়েও রণবীরের ঐটা কিছু দেখতে পেলাম না : টুইঙ্কেল খান্না
এছাড়াও ‘জখম’ নামে একটি সিনেমাতে থাকবেন তিনি। সিনেমায় প্রথমবারের মতো একসঙ্গে অভিনয় করবেন অপু বিশ্বাস ও জায়েদ খান। অভিনয় জীবনে তিনি বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করেন যেমন বাচসাস পুরস্কার, গ্ল্যামার পুরস্কার এবং মনোয়ন পেয়েছেন মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।