জুমবাংলা ডেস্ক : গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে নানা রঙের খেজুর—কোথাও লালচে, কোথাও বা হলুদ আভা। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আরবের মরু অঞ্চলের খুরমা খেজুরের চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন দুই ভাই। লবণাক্ত মাটিতে মরুভূমির ফসল ফলিয়ে কৃষিক্ষেত্রে সৃষ্টি করেছেন সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত। তাদের বাগানে বর্তমানে রয়েছে ৯ জাতের খেজুরগাছ। ইতোমধ্যে ২৫টি গাছে এসেছে মুইন্না বা ফুল। এ সফলতা দেখে অনেকে খেজুর চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। পাশাপাশি, স্থানীয় বাজারে তাদের উৎপাদিত কেমিক্যালমুক্ত আরব খেজুরের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।
জানা যায়, এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছেন মো. মোজাহিদুল ইসলাম রুবেল, যিনি একসময় সিঙ্গাপুরে ছিলেন। সেখানকার বাজারে প্রতিদিন মরিয়ম জাতের খেজুর খেতেন এবং বীজ সংগ্রহ করতেন। দেশে ফিরে নিজ বাড়ির ছাদে পলিব্যাগে সেই বীজ থেকেই চারা তৈরি করেন। এরপর বড় ভাই মো. মহিউদ্দিন মিলনের সহযোগিতায় পৌর শহরের সিকদারবাড়ি কালভার্ট সংলগ্ন ২৭ শতক জমিতে গড়ে তোলেন সৌদি আরবের আদলে একটি খেজুর বাগান। তাদের বাগানে আজোয়া, মরিয়ম, সাফাই, তিউনিশিয়া, পাইরুম, আনবরা, ডাব্বাস, মাদজুলসহ ৯ ধরনের খেজুরগাছ রয়েছে।
২০১৮ সালের জুন-জুলাই মাসে মাত্র ৫৫টি খেজুর চারা রোপণের মাধ্যমে যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে বাগানে রয়েছে ৯৬টি গাছ। কয়েকটি গাছে ভালো ফলনও হয়েছে। পাকা খেজুর স্থানীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে। শুধু ফল বিক্রি নয়, তারা এখন চারা গাছও বিক্রি করছেন। মা গাছগুলোর দাম ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত, আর বীজ থেকে জন্মানো গাছ বিক্রি করছেন এক হাজার টাকায়।
উদ্যোক্তা মোজাহিদুল ইসলাম রুবেল বলেন, “২০১৪ সালে আমার মাথায় প্রথম এই চিন্তা আসে। তখন আমি সিঙ্গাপুরে থাকি। পরে বড় ভাইয়ের পরিশ্রমেই আজকের এই বাগান গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে।”
তার বড় ভাই মো. মহিউদ্দিন মিলন বলেন, “প্রথমে আমরা ১৩টি কাঁধি তৈরি করি, যেগুলোর মাঝে পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা ছিল। এরপর ৫৫টি চারা রোপণ করি। বর্তমানে গাছগুলোর বয়স চার বছর, অনেক গাছে ইতোমধ্যেই ফুল এসেছে। এই গাছগুলো মাটিতে জন্মাতে পারে, তবে এদের জন্য বিশেষ যত্ন নিতে হয়। প্রধান সমস্যা হলো ছত্রাকজনিত রোগ।”
তিনি আরও বলেন, “প্রথম যখন গাছগুলো রোপণ করি, অনেকেই আমাদের পাগল বলত। কিন্তু গাছগুলো ধীরে ধীরে বড় হয়ে ওঠার পর সেই অবিশ্বাস বদলে গেছে বিস্ময়ে। এখন আমাদের এই বাগান একটি সফল বাণিজ্যিক প্রকল্পে পরিণত হয়েছে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।