লাইফস্টাইল ডেস্ক : ঘুম, শব্দটি শুনলেই একটা শান্তি শান্তি ভাব চলে আসে পুরো শরীরে। ঘুম মানুষকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। সুস্থ থাকার জন্য আমরা সবাই কম-বেশি ঘুমাই। কিন্তু চিন্তার বিষয় হচ্ছে ‘কম-বেশি ঘুমাই’ কথাটি থেকে ‘কম’ শব্দটিই যেন দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে। তরুণ, বৃদ্ধ সবার মধ্যে ঘুমহীনতার একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। আমার ঘুম হয় না, আমি ঘুমাতে পারে না কিংবা মোবাইল ফোন দেখতে দেখতেই আমার রাত কেটে যায়। এমন কথা এখন হরহামেশাই শোনা যাচ্ছে। তাহলে কি আমরা ঘুমহীন জাতিতে পরিণত হচ্ছি।
নতুন প্রজন্ম কেন ঘুমায় না
নতুন প্রজন্মের কাছে রাত জাগা বা রাত জেগে কাজ করা একটি ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া কয়েকজন তরুণের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, তারা রাত দুটো–তিনটার আগে ঘুমায় না। এমনকি অনেকই ঘুমাতে যায় ভোর রাতে। রাত জাগার কারণ কী? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে পাওয়া গেল কিছু তথ্য। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী রাতেই অ্যাসাইমেন্ট বা পড়াশোনা করে। তাই শিক্ষার্থীরা রাত জাগে। একটু বয়সীদের শারীরিক নানা সমস্যার কারণে রাতে ঘুমাতে পারে না বা অল্প সময় ঘুমায়। আর বড় একটি অংশের মানুষে রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সজাগ থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ার নেশা থেকে তারা রাতে ঘুমায় না। রাত জাগা এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোশ্যাল মিডিয়াতে তারা তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে না। একবার ফোন হাতে নিলে সময় কখন কেটে যায়, তারা টেরেই পায় না। এই রাত জাগাটা তাদের নেশায় পরিণত হয়েছে। চাইলেও রাত জাগার এ নেশা থেকে বের হতে পারছে না বেশি ভাগ তরুণ-তরুণী।
মানসিক রোগের সংখ্যা বাড়ছে
এখন প্রায় সবার হাতেই মোবাইল ফোন। সারাদিনের ব্যস্ততার পর বিছানায় শরীরটা এলিয়ে দেওয়ার পর অনেকেই অটোমেটিক হাতে তুলে নেয় মোবাইল ফোনটি। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদের মতে এই প্রবণতা তরুণদের মধ্যে ভয়াবহ আকারে দেখা দিয়েছে। আর এ সমস্যা নিয়মিত হলে তা জীবনের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। রাতে ভালো ঘুম না হলে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। কাজের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়ে। কারণ এটি মনোযোগ নষ্ট করে, রক্তচাপসহ নানা স্নায়ুজনিত সমস্যা তৈরি করে।
কোন বয়সে কত সময় ঘুমানো উচিত
মানুষের কত সময় ঘুমানো উচিত। আমেরিকান একাডেমি অব স্লিপ মেডিসিন এবং স্লিপ রিসার্চ সোসাইটি তথ্য থেকে জানা যায়—শূন্য থেকে ৩ মাস বয়সী নবজাতকের ১৪ থেকে ১৭ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। ৪ থেকে ১১ মাস বয়সীরা ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা ঘুমাবে। ১১ থেকে ১৪ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত ১ থেকে ২ বছরের শিশুদের। প্রাকস্কুল বয়সী শিশু, যাদের বয়স ৩ থেকে ৫ বছর বয়সের মধ্যে, তাদের ঘুমানো উচিত ১০ থেকে ১৩ ঘণ্টা। ৯ থেকে ১১ বছর বয়সীদের ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। যারা তরুণ; মানে, যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে, তাদের ঘুমানো উচিত ৭ থেকে ৯ ঘণ্টার মত। একই পরিমাণ ঘুমানো উচিত ২৬ থেকে ৬৮ বয়সীদেরও। আর ৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষের ঘুমানো উচিত ৭ তেকে ৮ ঘণ্টার মধ্যে।
আসুন আমরা সময়মতো ঘুমাই। নিজের জন্য ঘুমাই, ভালো থাকার জন্য ঘুমাই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।