স্পোর্টস ডেস্ক : ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপের পর থেকে ইংল্যান্ড ও আর্জেন্টিনার মধ্যকার সম্পর্ক খুব একটা ভালো নয়। তবে বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক লিওনেল মেসির জন্য যেনো সবকিছুই মেনে নেয়া যায়। তাই তো এবার বরফ গলতে যাচ্ছে দু’দেশের মধ্যকার। ইংল্যান্ড চাচ্ছে মেসির আর্জেন্টিনার বিপক্ষে নিজেদের মাটিতে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে। আর সেই সুযোগে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা এর জন্য মোটা অঙ্কের দাবি করেছে। যদিও ইংল্যান্ড জানিয়েছে এলএমটেনকে কাছ থেকে দেখার জন্য এই অর্থের পরিমাণ বড় নয়। একজন মেসি যেনো সবকিছুর উর্ধ্বে। যদি সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে বলা যায় এই ম্যাচে এক অনন্য অভিষেক হতে যাচ্ছে বিশ্বজয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়কের।
মেসির অর্জনের ঝুলিটা এতটাই বেশি যে এখন শুধু তিনি সমর্থকদের নয়, পাশাপাশি প্রতিপক্ষের ভালোবাসাও কুড়িয়ে নিচ্ছেন দু’হাত ভরে। মেসিকে ভালোবাসতে পেরে যেন নিজেদেরকেও ভাগ্যবান ভাবছে ভক্ত-সমর্থকরা। ক্যারিয়ারের শেষ বসন্তে অবস্থান করছে মেসি। অবশ্য তার আগে স্বপ্নের সোনালী ট্রফি তিনি ছুঁয়ে দেখতে সক্ষম হয়েছেন। যেটা একজন ফুটবলারের জন্য সারা জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন।
বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের পর মেসি যেন আরও বেশি ভালোবাসা পাচ্ছেন বিশ্বের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। সেই ভালোবাসার তালিকায় যে ইংল্যান্ডও যে চলে আসবে সেটা মনে হয় কল্পনাতেও ছিল না। ১৯৮৬’র বিশ্বকাপে ম্যারাডোনার হাত দিয়ে করা বিখ্যাত ‘হ্যান্ড অব গড’ গোলের পর থেকেই দু’দেশের মধ্যে একটু হলেও বৈরি সম্পর্ক।
সেই ঘটনার পর মাত্র দু’বারই প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছি দু’দল। এবার শুধু একজন লিওনেল মেসির জন্য আরও একবার আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলতে মুখিয়ে আছে থ্রি লায়ন্সরা। প্রিমিয়ার লিগে না খেলায় ইংলিশদের সৌভাগ্য হয়নি মেসিকে সামনে থেকে নিয়মিত উপভোগ করার। তাই তো ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে থাকা মেসিকে আরও একবার কাছ থেকে দেখতে চাইছে তারা। যার জন্য আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশনের (এএফএ) কাছে একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন।
যে ম্যাচটির সম্ভাব্য ভেন্যু হিসেবে ধরা হয়েছে ইংল্যান্ডের বিখ্যাত স্টেডিয়াম ওয়েম্বলি। মেসি শেষবার কাতার বিশ্বকাপের আগে ইতালির বিপক্ষে ‘লা ফিনালিসিমা’র ম্যাচে ওয়েম্বলিতে মাঠে নেমেছিলেন। সেই ম্যাচে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন এই আর্জেন্টাইন। তাই এই স্টেডিয়ামে রয়েছে তার অসংখ্য সুখস্মৃতি। রয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়েরও রেকর্ড।
এদিকে ইংল্যান্ডের প্রস্তাবনার সুযোগ লুফে নিতে ভুল করেনি আর্জেন্টিনা। এই ম্যাচ খেলার জন্য তারা চেয়েছে ৫ মিলিয়ন ডলার। এফএ এক্সিকিউটিভ মার্ক বেলিংহাম বলেছেন, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মেসির প্রথম ম্যাচ আয়োজনে অর্থ কোনো সমস্যাই নয়। মেসিকে আনাই তাদের লক্ষ্য। তবে তিনি এও বলেছেন, আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডারটি যেভাবে গঠন করা হয়েছে তা দেখলে আমাদের ম্যাচটি খেলার সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে কম। তবে এটি (আর্জেন্টিনা) এমন একটি খেলা যা আমরা নিশ্চিতভাবে যে কোনো সময়ে খেলতে চাই।
বেলিংহামের মন্তব্য থেকে বুঝা যায় থ্রি লায়ন্সরা কতটা উদগ্রীব হয়ে আছে মেসির বিপক্ষে দেশের মাটিতে খেলতে। এই দু’দলের মধ্যে সবশেষ লড়াই হয়েছিল ২০০৫ সালে। অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্যি ইংল্যান্ড হচ্ছে একমাত্র বিশ্বকাপজয়ী দল যাদের বিপক্ষে কখনো খেলা হয়নি লিওনেল মেসির।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এবার তাদের মুখোমুখি হতে পারেন আর্জেন্টাইন এ খুদে জাদুকর। যদিও এখন পর্যন্ত ম্যাচের দিনক্ষণ নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি দু’পক্ষ। তবে শিগগিরই চূড়ান্ত হবে ম্যাচের তারিখ। দু’দলের মধ্যে এখন পর্যন্ত ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৪টি। যেখানে আর্জেন্টিনার জয় ৬ জয়ের বিপরীতে ইংল্যান্ডের জয় ৩টি। আর ৫টি ম্যাচ হয়েছে ড্র।
২০০৫ সালের পর অর্থাৎ প্রায় দেড়যুগ পর আবারো মুখোমুখি হওয়ার অপেক্ষায় এ দু’দল।
সূত্র: ইএসপিএন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।