স্পোর্টস ডেস্ক : ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ছিলেন তিনজনই। জিনেদিন জিদান তো ফ্রান্সকে বিশ্বকাপই জিতিয়েছেন। আর্জেন্টিনা দলের নেতৃত্বে ছিলেন দিয়েগো সিমিওনে। গ্রুপপর্বে শেষ ম্যাচে আর্জেন্টিনার হয়ে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন ডিফেন্ডার পাবলো পাস।
গতকাল বার্নাব্যুতে এই তিন ফুটবলীয় পরিবারের পরবর্তী প্রজন্ম হাজির হয়েছিল। নাপোলির মূল একাদশে ছিলেন জিও সিমিওনে। আতলেতিকো মাদ্রিদ কোচের পুত্র ম্যাচের নবম মিনিটেই গোলও করেছেন। ওদিকে স্বয়ং জিনেদিন জিদানও গ্যালারিতে। কারণ, তাঁর তৃতীয় পুত্র থিও জিদান ডাক পেয়েছিলেন রেয়াল মাদ্রিদের চ্যাম্পিয়নস লিগ স্কোয়াডে। কিন্তু মাঠে আর নামা হয়নি তাঁর।
মাদ্রিদ বেঞ্চে থাকা আরেকটি নামই ম্যাচশেষে সবার মুখে। গতকাল মাদ্রিদের জার্সিতে নিজের প্রথম গোল করেছেন নিকো পাস।
গত মে মাসেই সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন টনি ক্রুস। মাদ্রিদ মিডফিল্ডার মাদ্রিদ একাডেমির কিশোর মিডফিল্ডার সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘তরুণ যে প্রতিভাকে দেখে আমি সবচেয়ে রোমাঞ্চিত, সে নিকো পাস। ওর উচিত প্রতিদিন মূল দলের সঙ্গে অনুশীলন করা, কারণ সে এতটাই ভালো।’ অবশ্য ২০২২ বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত আর্জেন্টিনার প্রাথমিক দলেও ডাক পেয়েছিলেন শীর্ষ পর্যায়ে কোনো ম্যাচ না খেলা পাস।
গতকাল নাপোলির বিপক্ষে ম্যাচটি অত গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। মাদ্রিদ আগেই শেষ ষোলো নিশ্চিত করে ফেলেছে। কিন্তু ৯ মিনিটে পিছিয়ে পড়ার পর তেড়েফুঁড়ে ওঠে স্বাগতিক দল। খেলা শুরু হতে না হতেই ব্রাহিম দিয়াসের দুর্দান্তভাবে নিজেকে ঘুরিয়ে নাপোলি ডিফেন্ডারদের ছিটকে ফেলে দিয়ে ছুটে যান বল নিয়ে। তাঁর পাশ থেকে বাঁকানো শটে গোল রদ্রিগোর।
১১ মিনিট পর বেলিংহাম মাদ্রিদকে এগিয়ে দিলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল খেয়ে বসে স্বাগতিক দল। বার্নাব্যুকে জাগিয়ে তোলেন পাস। বদলি নামা এই মিডফিল্ডার ৮৪ মিনিটে যে গোলটি করেছেন তাতে নাপোলি গোলকিপারের দায় আছে। শটে খুব বেশি জোর ছিল না, কিন্তু ঠিক হাতের সামনে বাউন্স করা বল ধরতে পারেননি মেরেত।
তবে শট নেওয়ার আগে যা করেছেন পাস, সেটাই মুগ্ধ করেছে। ডি-বক্সের অনেক বাইরে বল পেয়ে প্রথমে একদিকে যাওয়ার ভান করেছেন। গায়ের সঙ্গে সেঁটে থাকা ডিফেন্ডারকে বডি ফেইন্ট দিয়ে ছিটকে ফেলে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শটে মাদ্রিদকে এগিয়ে দেন নিকো পাস। যোগ করা সময়ে আরেকটি গোল করেন হোসেলু।
ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেছেন বেলিংহাম। কিন্তু পাসকে নিয়েও আলোচনা কম হচ্ছে না। কারণ, গতকাল ১৯ বছর ৮২ দিন বয়সে গোল করেছেন নিকো পাস। চ্যাম্পিয়নস লিগে তাঁর চেয়ে কম বয়সে শুধু একজন আর্জেন্টাইনই গোল করতে পেরেছেন, লিওনেল মেসি। ২০০৫ সালে এই নভেম্বরেই বার্সেলোনার জার্সিতে ১৮ বছর ১৩১ দিন বয়সে গোল করেছিলেন মেসি।
ম্যাচের ওই মুহূর্তে ওভাবে শট করে গোল করতে পারবেন, এটা বিশ্বাস হচ্ছিল না নিকো পাসেরও, ‘আমি খুব খুশি, একটা স্বপ্ন পূরণ হলো। প্রথমে তো বিশ্বাসই হয়নি। দলকে সাহায্য করতে পেরে ভালো লাগছে। আমার হঠাৎ মনে হলো সাহস এল, জোরে শট নিলাম। আমি নিজেই জানতাম না কী করতে যাচ্ছি। আমি শুধু মেরেছি এবং সত্যি বলছি, নিজেই অবাক হয়েছি।’
মজার ব্যাপার, পাসের এই গোলের মাত্র তিন ঘণ্টা আগেই মেসির সে গোলের কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন আরেক আর্জেন্টাইন। মাদ্রিদের মিডফিল্ডার পাস মেসিকে আদর্শ মানলেও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের আলেহান্দ্রো গারনাচো কিন্তু সব ক্ষেত্রেই অনুসরণ করেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে।
গতকাল গ্যালাতাসারাইয়ের বিপক্ষে ১১ মিনিটে গোল করেছেন গারনাচো। গতকাল গোলের সময় তাঁর বয়স ছিল ১৯ বছর ১৫২ দিন। চ্যাম্পিয়নস লিগে সর্বকনিষ্ঠ আর্জেন্টাইন গোলদাতাদের তালিকায় মেসির পর নিজের নাম তুলিয়ে সে রেকর্ডটা একদিনও নিজের কাছে রাখতে পারেননি গারনাচো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।