বিনোদন ডেস্ক : দীর্ঘদিন ধরেই খারাপ সময় কাটাচ্ছিলেন ঢাকাই চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ। শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’-এ নাম ভূমিকায় অভিনয় করেই মূলত বিপাকে পড়েন তিনি। এই কাজে তৎকালীন আওয়ামী সরকারের কাছ থেকে পেয়েছিলেন জমিও। অভিযোগ ওঠে- জমি ছাড়াও নানা সুযোগ সুবিধাও নাকি সরকারের পক্ষ থেকে ভোগ করেছেন এই নায়ক। শুধু তাই নয়, দেশের পট পরিবর্তনের পর তার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও উঠেছিল প্রশ্ন। কিন্তু নায়ক জানালেন, কোনো প্রভাব বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, নিজের কাজের যোগ্যতায় মুজিব সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন তিনি।
যদিও এ সকল বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমে কম প্রশ্নের মুখে পড়েননি আরিফিন শুভ। গত বছর আগস্টে দেশের পট পরিবর্তনের পর নিজেকে অনেকটাই আড়াল করে নিয়েছিলেন নায়ক। এরপর নতুন নতুন কাজের সুবাদে ফের দর্শকমহলে আলোচনায় এসেছেন তিনি। কিন্তু অতীতে মুজিবের চরিত্রে অভিনয় করে এখনও যে তিনি নেতিবাচক অবস্থায় রয়েছেন, তা বলার বাকি রাখে না। নেটিজেনদের একাংশ সুযোগ পেলেই নায়ককে নিয়ে সমালোচনা করছেন; তাকে তৎকালীন সরকারের সুবিধাভোগী, সহযোগী এমনকি দোসর বলেও আখ্যা দিচ্ছেন।
বলে রাখা ভালো, এসবের বাইরে এখন কাজের গতি বেড়েছে এই নায়কের। আড়াল ভেঙে ভক্তমহলে সেই পর্দার হিরো হয়েই নিজেকে ধরা দিচ্ছেন শুভ। আসন্ন কোরবানির ঈদে মুক্তি পাচ্ছে তার নতুন সিনেমা ‘নীলচক্র’। ইতোমধ্যে ভক্তমহলে তার অ্যাকশনও মন কেড়েছে দর্শকের। এছাড়াও ভারতের একটি ওয়েব সিরিজে কাজ করে দেশে সদ্যই ফিরেছেন নায়ক। তবে কাজ নিয়ে সব ঠিকঠাক থাকলেও ঘুরে ফিরে সেই মুজিব প্রসঙ্গ নিয়েই নানা প্রশ্নের মুখে পড়ছেন আরিফিন শুভ।
‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ সিনেমার কাজ করে পূর্বাচলে ১০ কাঠা জমি পেয়েছিলেন নায়ক। যদিও দেশের পট পরিবর্তনে তা হারিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরিফিন শুভ এ নিয়ে বলেন, ‘আমার ক্ষেত্রে এটা এমনভাবে বলা হচ্ছে, যেন সিনেমা করেছি আর বিনিময়ে জমি পেয়েছি—যেটা সম্পূর্ণ মনগড়া গল্প। মুজিব সিনেমায় আমি এক টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছি নিজের সিদ্ধান্তে—যেমনটা যেকোনো শিল্পীই নিজের কাজের ক্ষেত্রে পছন্দমতো পারিশ্রমিক নেন। এর সঙ্গে কোনো সুবিধা নেওয়ার শর্ত বা লেনদেনের প্রশ্নই আসে না। পরে ছড়ানো হলো, এই এক টাকা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে আমি পূর্বাচলে রাজউকের প্লট পেয়েছি। অথচ বাস্তবতা হলো—শিল্পী কোটায় এর আগেও ১৫১ জন শিল্পী জমি পেয়েছেন, যাদের কেউই এই সিনেমায় ছিলেন না, কেউ এক টাকায় কাজও করেননি।’
আরিফিন শুভ বলেন, ‘এসব গুজবের উদ্দেশ্য, তথ্য তুলে ধরা নয়, মানুষের মনে বিভ্রান্তি ছড়ানো। আমি সবসময় কাজে বিশ্বাসী। যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারেন, আমি মুজিব সিনেমার বিনিময়ে কোনো সুবিধা নিয়েছি—দয়া করে তা সামনে আনুন, দর্শকদের জানান।’
‘মুজিব’ সিনেমায় কীভাবে যুক্ত হয়েছিলেন, তা নিয়ে নায়ক বলেন, ‘দেশে যখন মুজিব সিনেমার অডিশন চলছিল, তখন আমাকে কোনো চরিত্রের জন্য ডাকা হয়নি। কিন্তু দেশের বাইরে আমার একটি সিনেমা দেখে পরিচালকের টিম আমাকে খুঁজে পেয়েছিল। বাংলাদেশ থেকে কেউ আমাকে ডাকেনি। বরং পরিচালক নিজেই প্রথম আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলেন, আমন্ত্রণ জানালেন অডিশনের জন্য। তারপর সেই ধারাবাহিকতায় দুইবার ভারত ও তিনবার বাংলাদেশে অডিশন হয়। কোনো প্রভাব নয়, কাজের যোগ্যতা আর নিষ্ঠা দিয়েই আমি কাজটি পেয়েছিলাম।’
আরিফিন শুভর রাজনৈতিক পরিচয় কী ও মুজিব সিনেমায় অভিনয়ের পর কোনো রাজনৈতিক সুবিধা পেয়েছেন কী না, সে প্রসঙ্গে নায়কের জবাব, ‘সুবিধা নিয়ে থাকলে নিশ্চয়ই সেটার রেকর্ড থাকবে। আমার মনে পড়ে না, আমি কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছি কিংবা রাজনৈতিক কোনো পদ পাওয়ার জন্য ন্যূনতম চেষ্টা চালিয়েছি। রাজনৈতিকভাবে কোনো সুবিধা আমি নিয়েছি—সেটার কোনো প্রমাণ কারো কাছে থাকলে তা প্রকাশ করুক।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।