আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা সূত্র জানিয়েছে, তারা চলতি সপ্তাহে নাইজার থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করবে। নাইজার প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করেই তাদের সরিয়ে আনা হবে।
নাইজার থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে ফ্রান্স
গত ২৬ জুলাই এক অভ্যুত্থানে নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক বাহিনী। সে সময় সামরিক জান্তার সমর্থনে বিক্ষোভকারীরা দেশ থেকে ফ্রান্সের সেনা ও রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের দাবি জানায়। এর ধারাবাহিকতায় জান্তা সরকারও রাষ্ট্রদূত ও সেনা প্রত্যাহারে ফ্রান্সের প্রতি আহ্বান জানায়। তবে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এতে রাজি হননি। পরে ফরাসি দূতাবাসে খাবার, বিদ্যুৎসহ জরুরি পরিষেবা বন্ধ করে দেয় নাইজারের জান্তা সরকার।
এক পর্যায়ে প্রবল আন্দোলনের মুখে অবশেষে নাইজার থেকে ফরাসি সেনা ও রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন ম্যাক্রোঁ। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ফ্রান্সের একটি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ ঘোষণা দিয়ে তিনি জানান, বছরের শেষ নাগাদ নাইজার থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হবে। তবে এর এক সপ্তাহ পরেই এ সময়সীমা এগিয়ে আনার ঘোষণা দেয় ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
নাইজার থেকে ফরাসি সেনা প্রত্যাহারের কারণ
নাইজারে বর্তমানে দেড় হাজারের মতো ফরাসি সেনা রয়েছে। তারা সাহেল অঞ্চল জুড়ে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বৃহত্তর লড়াইয়ের অংশ হিসাবে নাইজারে অবস্থান করছিল। নাইজার, বুরকিনা ফাসো ও মালির সীমান্ত অঞ্চলটি দায়েশ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আশ্রয়স্থল হিসাবে পরিচিত।
embassy of france in niger
নাইজারে ফরাসি দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ
নতুন জান্তা সরকারের প্রতি ফ্রান্সের সমর্থন ছিল না। তারা ফরাসি সেনা প্রত্যাহারের দাবিতে একের পর এক বিক্ষোভ করে। ফলে ফ্রান্সের পক্ষে নাইজারে সেনা মোতায়েন করা কঠিন হয়ে পড়ে।
ফরাসি সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া
ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা চলতি সপ্তাহে সুশৃঙ্খলভাবে, নিরাপদে এবং নাইজার প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের সেনাসদস্যদের ফিরিয়ে আনবে।
ফরাসি সেনাদের সরিয়ে নিতে যথেষ্ট নিরাপত্তাব্যবস্থার প্রয়োজন হবে। ফ্রান্সের সামরিক সদর দফতর বলেছে, এক্ষেত্রে বিমানবাহিনীরও সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে।
নাইজারের স্বাধীনতার পর বেশ কয়েকটি অভ্যুত্থান
সাহারা মরুভূমির প্রান্তে অবস্থিত নাইজার ১৯৬০ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর বেশ কয়েকটি অভ্যুত্থানের সাক্ষী হয় দেশটি। সর্বশেষ গত জুলাইয়ে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুম। তিনি ফ্রান্সপন্থী হওয়ায় তাকে পুনরায় ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে জোর প্রচেষ্টা চালায় দেশটি। কিন্তু তাদের সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, উল্টো নাইজার থেকে তাদের তল্পিতল্পা গোটানোর নির্দেশ দেয় নতুন জান্তা সরকার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।