আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বকে টেকসই ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে নিতে হলে, রাজনৈতিক, প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক নেতৃত্বের সমন্বয় আবশ্যক। এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিতব্য আর্থনা সম্মেলন ২০২৫ এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। বৈশ্বিক কূটনীতির মঞ্চে, যেখানে জলবায়ু পরিবর্তন, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, এবং ঐতিহ্যবাহী জ্ঞানের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা চলছে, সেখানেই এক বিশেষ লাঞ্চ মিটিংয়ে অংশ নেন বিশ্ব নেতৃবৃন্দ।
আর্থনা সম্মেলন ২০২৫: ভবিষ্যতের টেকসই রূপরেখা
আর্থনা সম্মেলন ২০২৫-এর প্রতিপাদ্য ছিল “আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান”। সম্মেলনের সাইড লাইনে আয়োজিত একটি গুরুত্বপূর্ণ লাঞ্চ মিটিংয়ে তাস চেয়ারম্যান ও ইয়েমেনের অনারারি কনসাল কে এম মজিবুল হক বিশ্ব নেতাদের সাথে একত্রিত হন। এতে অংশ নেন স্পেসএক্সের ভাইস চেয়ারম্যান মিসেস লরেন ড্রেগার, পিএমআই’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মিসেস নেভেনা, এলন মাস্কের গ্লোবাল এনগেজমেন্টের সিনিয়র উপদেষ্টা রিচার্ড গ্রিফিথস, কিং চার্লস ফাউন্ডেশনের সিইও ক্রিস্টিনা মুরিন এবং কমনওয়েলথ সহকারী মহাসচিব অধ্যাপক লুইস জি ফ্রান্সেশি।
এই আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে কীভাবে বিশ্বকে আরও স্থায়ী এবং উদ্ভাবনী পথে এগিয়ে নেয়া যায়। আলোচনায় উঠে আসে “টেকসই উন্নয়নে উদ্ভাবনীপন্থা”, “সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যগত জ্ঞানের সুরক্ষা” এবং “কূটনৈতিক বোঝাপড়ার উন্নয়ন” বিষয়গুলো।
উদ্ভাবন, কূটনীতি ও ঐতিহ্যের সম্মিলিত পথ
উন্নয়নের বর্তমান ধারায় একটি বিষয় স্পষ্ট—উদ্ভাবন আর প্রযুক্তি যদি কূটনৈতিক সম্পর্ক ও ঐতিহ্যের সাথে সমন্বয় করে চালিত হয়, তবে তা এক নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। আর্থনা সম্মেলন এ বক্তব্য রাখতে গিয়ে ড. মুহম্মদ ইউনূস জানান, “সামাজিক ব্যবসার মডেল ও পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমেই আমরা একটি ভারসাম্যপূর্ণ বিশ্ব গঠন করতে পারি।”
সম্মেলনে আলোচনা হয় কিভাবে উদ্ভাবনী কৌশল বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা, পানি সরবরাহ, এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে পারে। পাশাপাশি, কূটনৈতিক বোঝাপড়ার উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান ব্যবস্থার সমন্বয়ের উপর জোর দেয়া হয়।
বিশ্বে এখন যে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে, তার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদের প্রয়োজন নতুন ধারনার, নতুন নেতৃত্বের। ঠিক সেই সময়েই এমন একটি সম্মেলন, যেখানে বৈশ্বিক নেতারা একই ছাদের নিচে মিলিত হচ্ছেন, তা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে।
আরো জানুন: আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সম্মেলনের গুরুত্ব
দোহায় অনুষ্ঠিত এই সম্মেলন শুধুমাত্র একটি বৈঠক নয়, এটি ছিল একটি দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। যেখানে ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের নেতৃবৃন্দ মিলে এক নতুন ভিশনের দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। বিশ্ববাজারের প্রভাব কিংবা স্বর্ণের বাজার পরিবর্তন—সবকিছুতেই প্রতিফলিত হয়েছে এই সম্মেলনের মূল বার্তা।
সম্মেলনের সেশনগুলোতে অংশগ্রহণকারী নেতৃবৃন্দ, সংস্থাগুলো এবং উপস্থিত প্রযুক্তিবিদদের মতামত বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য একটি সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা তৈরি করেছে। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও সিদ্ধান্ত শুধু কাতারেই নয়, বরং বৈশ্বিকভাবে অগ্রগতি ও শান্তির বার্তা দিচ্ছে।
এই সম্মেলনের মাধ্যমে যে বার্তাটি প্রতিফলিত হয়েছে তা হলো—নেতৃত্বের জায়গাটি এখন কেবল রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং প্রযুক্তি ও সামাজিক উদ্যোগের মাধ্যমেও বিশ্ব বদলানো সম্ভব।
উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ ও ভবিষ্যতের প্রত্যাশা
উল্লেখযোগ্য ছিল স্পেসএক্স, পিএমআই, কিং চার্লস ফাউন্ডেশন ও কমনওয়েলথের অংশগ্রহণ। এর ফলে কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনাও উন্মুক্ত হয়েছে, যা ভবিষ্যতের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
একইসাথে, এটি প্রমাণ করে যে, ব্যক্তিগত উদ্যোগ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা একত্রে কাজ করলে একটি ভালো ও টেকসই ভবিষ্যৎ গড়া সম্ভব।
FAQs
- আর্থনা সম্মেলন কী?
এটি একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন যা প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, কূটনীতি এবং ঐতিহ্যিক জ্ঞান ব্যবস্থার সমন্বয়ে টেকসই ভবিষ্যতের পরিকল্পনা তৈরি করে। - কোথায় অনুষ্ঠিত হয় আর্থনা সম্মেলন?
আরব বিশ্বের অন্যতম উদীয়মান শহর দোহা, কাতারে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। - এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য কী?
বৈশ্বিক সমস্যার টেকসই সমাধানে উদ্ভাবনী ধারণা, ঐতিহ্যিক জ্ঞান ও কূটনৈতিক বোঝাপড়ার উন্নয়নে নেতৃত্বদান। - কে এম মজিবুল হক কে?
তিনি তাস চেয়ারম্যান এবং ইয়েমেনের অনারারি কনসাল। - ড. মুহম্মদ ইউনূস এর বক্তব্য কী ছিল?
তিনি পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও সামাজিক ব্যবসা ব্যবস্থাকে ভবিষ্যতের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে অভিহিত করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।