স্পোর্টস ডেস্ক : ‘আমি জানতাম না… শুনে ভালো লাগল’- নিজের কীর্তির কথা জেনে ছোট করে বললেন আশিকুর রহমান। দেশের স্রেফ দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ‘ক্যারিং দা ব্যাট থ্রু আ কমপ্লিটেড ইনিংস’-এর নজির গড়েছেন তিনি। তবে বাড়তি কোনো উচ্ছ্বাস নেই তার কণ্ঠে। মনোযোগ ধরে রেখে আরও এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় শোনালেন তরুণ এই ওপেনার।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে সোমবার গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমির পক্ষে বলতে গেলে একাই লড়াই করেন আশিকুর। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে ৮৯ রানে অপরাজিত রয়ে যান করেন ১৮ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে ১৩৩ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তিনি। ৪৮তম ওভারে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মারুফ মৃধা বোল্ড হলে অপরাজিতই থেকে যান আশিকুর। সেঞ্চুরি না পাওয়ার হতাশা নিয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরলেও দারুণ এক অর্জন ধরা দেয় কদিন আগেই অনূধর্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলে আসা ব্যাটসম্যানের।
আশিকুরের আগে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ইনিংসের আদ্যন্ত ব্যাটিং করা একমাত্র বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান জাভেদ ওমর। বাংলাদেশের সাবেক ওপেনার সেটি করেছিলেন আন্তর্জাতিক ম্যাচেই। ২০০১ সালের এপ্রিলে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ২৩১ রানের লক্ষ্যে ১০৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। সেদিন ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন ওপেনার জাভেদ।
প্রায় দুই যুগ পর জাভেদের মতো আশিকুরও পরাজিত দলে। অন্যদের ব্যর্থতায় স্রেফ ১৬৭ রানে গুটিয়ে যায় গাজী টায়ার্স। ১১০ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটের অনায়াস জয় পায় শেখ জামাল।
আউট হয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরার সময় তো বটেই, ম্যাচ শেষেও আশিকুরের ধারণা ছিল না নিজের কীর্তির ব্যাপারে। মাঠ থেকে ক্লাবে ফেরার সময় মুঠোফোনে এটি জানার তার ছোট্ট প্রতিক্রিয়া, “আমি জানতাম না। শুনে ভালো লাগল যে, বড় একটি কীর্তি এটি। খুব ভালো অনুভূতি।”
বড় কীর্তি গড়লেও পুরো ওভার খেলতে না পারার আক্ষেপ স্পষ্ট আশিকুরের কথায়।
“আমি চেষ্টা করেছি ইনিংসটা যত দূর সম্ভব এগিয়ে নেওয়া যায়। আল্লাহর রহমতে যা হয়েছে, করতে পেরেছি। পুরো ওভার খেলা উচিত ছিল। কিন্তু সুযোগ পাইনি।”
এই ম্যাচ দিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে যাত্রা শুরু হলো আশিকুরের। তবে গত বছর বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ দিয়ে লিস্ট ‘এ’ অভিষেক হয় তার। দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে সেদিন তিনি করেন ৬০ রান। পরের দুই ম্যাচের একটিতে খেলেন ৩০ ছোঁয়া ইনিংস।
সব মিলিয়ে স্বীকৃত ক্রিকেটে তার শুরুটা যথেষ্ট সম্ভাবনাময়। প্রতিশ্রুতিটা অবশ্য বয়সভিত্তিক ক্রিকেটেই দিয়েছেন তিনি। গত বছর অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে বাংলাদেশের জয়ে তার ছিল বড় অবদান। ৫ ইনিংসে দুটি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটিতে তিনি করেছিলেন আসরের সর্বোচ্চ ৩৭৮ রান।
পরে অবশ্য যুব বিশ্বকাপ তেমন ভালো কাটেনি তার। ৭ ইনিংসের ৬টিতে দুই অঙ্ক ছুঁলেও কোনো পঞ্চাশ করতে পারেননি যুব দলের কিপার-ব্যাটসম্যান।
এবার প্রিমিয়ার লিগের ইতিবাচক শুরুর পর ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলার লক্ষ্য তার।
“সামনের দিনগুলোতে আমার এটাই চেষ্টা থাকবে, যত দূর এগোনো যায়, বড় ইনিংস যত বেশি খেলা যায়। মনোযোগটা সবসময় একই রকম রাখার লক্ষ্য আমার।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।