জুমবাংলা ডেস্ক : করোনা মহামারির শুরুর দিকে বিশ্বজুড়ে যখন মাসের পর মাস লকডাউন চলছিল, অফিস-আদালত-স্বাভাবিক জীবনযাত্রা গিয়েছিল থমকে; সেই অবসরকে কাজে লাগিয়ে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন প্রবাসী ভারতীয় প্রকৌশলী অশোক আরিসেরিল থামারাকশান।
২০২০ সালে যুক্তরাজ্যে শুরু হওয়া দীর্ঘ লকডাউনের অবসরে নিজের হাতে একটি চার আসনের বিমান বানিয়ে ফেলেছেন থামারাকশান! বর্তমানে নিজের তৈরি উড়োজাহাজে স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি।
অশোক আরিসেরিল থামারাকশানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ভারতের কেরালা রাজ্যের আলাপ্পুঝা জেলায়। তার বাবা এ ভি থামারাকশান কেরালার বিধানসভার একজন বিধায়ক (এমএলএ) ছিলেন।
মোটরগাড়ি নির্মাণকারী বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ফোর্ড মোটর কোম্পানির যুক্তরাজ্য শাখার চাকরির সুবাদে বর্তমানে স্ত্রী ও দুই কন্যাসহ লন্ডনে বসবাস করছেন অশোক।
তার বানানো চার আসনের উড়োজাহাজটি মূলত দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গভিত্তিক বিমান প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান স্লিং এয়ারক্রাফট কোম্পানির তৈরি করা ‘স্লিং টিএসটি’ বিমানের আদলে তৈরি।
স্লিং এয়ারক্রাফট মূলত সীমিত আসনের হালকা উড়োজাহাজ তৈরি করে। এ ধরনের বিমান প্রস্তুত প্রকৌশল সম্পর্কে ধারণা নিতে ২০২০ সালে কোম্পানির কারখানায়ও গিয়েছিলেন তিনি।’ জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও চেক রিপাবলিকের শাখা কার্যালয়গুলোর কারখানায় সফরও করেছেন অশোক।
কারখানা পরিদর্শন শেষে স্লিং এয়ারক্রাফটের কাছ থেকে বিমান তৈরির সাজ-সরঞ্জাম কিনে নিজেই উড়োজাহাজ প্রস্তুতের কাজ শুরু করেন অশোক।
প্রায় এক বছর সময় লেগেছে এটি তৈরিতে এবং এতে ব্যয় হয়েছে ভারতীয় মুদ্রায় ১ দশমিক স৮ কোটি রুপি। নিজের বানানো বিমানের নাম রেখেছেন ছোটো মেয়ে দিয়ার নামে— ‘জি-দিয়া’, আসনসংখ্যা ৪টি।
কী কারণে বিমান তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন— ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এই প্রশ্নের উত্তরে অশোক আরিসেরিল থামারাকশান বলেন, ‘আমি দেশ-বিদেশ ঘুরতে ভালবাসি। বিমান চালানোর লাইসেন্সও আমার আছে।
আগে যখন অবসর পেতাম, দুই আসনের একটি বিমান ভাড়া নিয়ে বেড়িয়ে পড়তাম। বিয়ের পর দ্বিতীয় সন্তান জন্ম নেওয়ার আগ পর্যন্ত তিনজনের জন্য দুই আসনের উড়োজাহাজে আমি, আমার স্ত্রী ও প্রথম সন্তান— তিনজনের জায়গা হয়ে যেত।’
‘কিন্তু দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পর আর দুই আসনের বিমানে চলছিল না। তখন ভ্রমণের জন্য চার আসনের বিমান ভাড়া করার প্রয়োজন পড়ল। কিন্তু দেখা গেল, চার আসনের স্লিং উড়োজাহাজ তেমন সহজলভ্য নয়। আর যেগুলো বা পাওয়া যায়, সেসবও বেশ পুরনো।’
‘তার মধ্যে ২০২০ সালে যখন মহামারি শুরু হলো…হাতে অখণ্ড অবসর, হঠাৎই একদিন বিমান তৈরির পরিকল্পনা মাথায় এলো…ব্যস, কাজ শুরু করে দিলাম।’
এনডিটিভিকে অশোক থামারাকশান জানান, নিজের তৈরি করা বিমানে স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও চেক রিপাবলিক— ইউরোপের এই তিন দেশ ভ্রমণ করেছেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।