জুমবাংলা ডেস্ক : সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পলাশ সাহা আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন তাঁর বড় ভাই নন্দ লাল সাহা। তাঁর ভাষ্যমতে, এএসপির স্ত্রী সুস্মিতা সাহা পলাশের মা ও ভাইয়ের গায়ে হাত তোলেন। এই অপমান মেনে নিতে না পেরে পলাশ আত্মহত্যা করেন।
নন্দ লাল সাহা জানান, “দুই বছর আগে ফরিদপুরের চৌধুরীপাড়ায় পলাশের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই পারিবারিক অশান্তি শুরু হয়। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে পলাশের স্ত্রী সুস্মিতা ঝামেলা করত। আমার মা আরতি সাহা পলাশের সঙ্গে চট্টগ্রামে থাকতেন, কিন্তু এই বিষয়টি সুস্মিতা কখনও মেনে নিতে পারেনি। সে বারবার মাকে গ্রামে পাঠাতে পলাশকে চাপ দিত, কিন্তু পলাশ রাজি হতেন না। কারণ, সে মাকে ও স্ত্রী দুজনকেই ভালোবাসত।”
তিনি আরও বলেন, “বুধবার (৭ মে) সকালে সামান্য বিষয় নিয়ে সুস্মিতা আমার মা ও ভাইয়ের গায়ে হাত তোলে। এই অপমান কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি পলাশ। আমাদের ধারণা, এই কারণেই সে আত্মহত্যা করেছে।”
আজ দুপুরে চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে র্যাব-৭-এর ব্যাটালিয়ন সদর দফতর থেকে পলাশ সাহার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে, যা থেকে আত্মহত্যার ইঙ্গিত মিলেছে।
চিরকুটে লেখা ছিল, “আমার মৃত্যুর জন্য মা বা বউ কেউ দায়ী নয়, আমি নিজেই দায়ী। কাউকে ভালো রাখতে পারিনি। বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে। মায়ের দায়িত্ব দুই ভাই নিক, তারা যেন মাকে ভালো রাখে। স্বর্ণ বাদে সবকিছু মায়ের জন্য। দিদি যেন সব কিছু কো-অর্ডিনেট করে।”
জানা গেছে, ৩৭ বছর বয়সী পলাশ সাহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১০-২০১১ সেশনের ছাত্র ছিলেন এবং ৩৭তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে যোগ দেন। এর আগে তিনি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
র্যাব-৭ চট্টগ্রামের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এ. আর. এম. মোজাফফর হোসেন জানান, “পলাশ সাহা বহদ্দারহাট ক্যাম্পে অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অস্ত্র ইস্যু করে তিনি অফিস কক্ষে যান। কিছুক্ষণ পর গুলির শব্দ শুনে অন্য র্যাব সদস্যরা ছুটে গিয়ে তাঁকে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পান। তার নামেই ইস্যুকৃত পিস্তল নিচে পড়ে থাকতে দেখা যায় এবং টেবিলে সুইসাইড নোট পাওয়া যায়।”
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বলেন, “দুপুর ১২টার দিকে পলাশ সাহাকে হাসপাতালে আনা হয়, তবে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর কানের পাশে গুলির মতো ক্ষত ছিল, কিন্তু এটি গুলির আঘাত কি না, তা নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত প্রয়োজন।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।