বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : পৃথিবীর একেবারে কাছ দিয়ে চলে গেলো মিনিবাসের সমান আকৃতির একটি গ্রহাণু। এটি আমাদের এত কাছ দিয়ে গেছে যে, অনেক স্যাটেলাইটও এর অনেক উপরে ছিল। রাশিয়ার ক্রাইমিয়া অঞ্চলের বাসিন্দা গেনাদি বরিসভের চোখে প্রথম ধরা পড়ে এই গ্রহাণুটি। তিনি একজন শখের জ্যোতির্বিজ্ঞানী। এই গ্রহাণুর নাম দেয়া হয়েছে ২০২৩ বিইউ।
বিবিসি জানিয়েছে, এটি পৃথিবীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দক্ষিণ আমেরিকার উপরে ছিল। গ্রহাণুটি প্রায় ৩৬০০ কিলোমিটার কাছ দিয়ে পৃথিবীকে অতিক্রম করে। পৃথিবীর আশেপাশেই ঘুরছে এমন অসংখ্য গ্রহাণু। যে কোনো সময় এই গ্রহাণুগুলো প্রাণের অস্তিত্বকে হুমকিতে ফেলতে সক্ষম। যদিও তাদেরকে নিয়মিত নজরে রাখেন বিজ্ঞানীরা।
তারা এসব গ্রহাণুর কক্ষপথ বের করেন। এতেই নিশ্চিতভাবে জানা যায়, ভবিষ্যতে কোন কোন গ্রহাণু পৃথিবীর কাছ দিয়ে যাবে।
২০২৩ বিইউ আকৃতিতে বেশ ছোট গ্রহাণু। এটি যদি পৃথিবীতে আঘাত হানত, তাহলেও খুব বেশি ক্ষতি হতো না। এর দৈর্ঘ্য মাত্র ৩.৫ মিটার থেকে ৮.৫ মিটার। এই আকৃতির গ্রহাণু সাধারণত বায়ুম-লেই পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তবে এক্ষেত্রে আকাশে বড় আগুনের গোলা দেখা যেত।
২০১৩ সালে রাশিয়ার চেলিয়াবিনস্কে এমন একটি গ্রহাণু আছড়ে পড়ে। এটি প্রায় ২০ মিটার লম্বা ছিল। এটি এত জোরে আছড়ে পড়েছিল যে, এর শকওয়েভে আশেপাশের শহরের বাড়ির জানালা ভেঙে গিয়েছিল। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রহাণু ২০২৩ বিইউ পৃথিবীর কাছে চলে আসার কারণে সূর্যের চারপাশে এর কক্ষপথ কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে। আমাদের গ্রহের মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবই তার কারণ।
বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর কাছের বেশি বড় গ্রহাণুগুলো খুঁজে বের করার জন্য সার্বক্ষণিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যাতে আগে থেকে সাবধান হওয়া যায়। সেগুলো পৃথিবীতে আঘাত করলে সত্যিই ক্ষতি হতে পারে। যেমন ছয় কোটি বছর আগে ১২ কিলোমিটার প্রশস্ত একটি শিলার আঘাতেই পৃথিবী থেকে অতিকায় প্রাণী ডাইনোসররা নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। এইসব বড় গ্রহাণুর মধ্যে সম্ভবত সবগুলোই শনাক্ত করা হয়েছে। এ কারণে তা উদ্বেগের কারণ নয়। তবে আকারে অনেক ছোট গ্রহাণুর ক্ষেত্রে মাত্র ৪০ শতাংশের মতো শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এগুলোর কোনটি পৃথিবীকে আঘাত করলে একটি গোটা শহর ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। বৃটেনের ওয়ারউইক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডন পোলাকো বলেন, এখনো পৃথিবীর কক্ষপথ অতিক্রমকারী এমন কিছু গ্রহাণু আছে, যেগুলো আবিষ্কৃত হয়নি। ২০২৩ বিইউ একটি অতি সাম্প্রতিক আবিষ্কৃত বস্তু। এটি অবশ্যই পৃথিবীর কক্ষপথ আগেও হাজার হাজারবার অতিক্রম করেছে। তবে ঘুরতে ঘুরতে এবারই এত কাছে এলো। অতিক্রমের সময় চাঁদের তুলনায় মাত্র এক শতাংশ দূরত্বে ছিল এটি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।