জুমবাংলা ডেস্ক : জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ ০৪-০৫-১৯৬৮। সেই হিসেবে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ৩ বছর। বয়স অনুসারে যুদ্ধকালীন তিনি শিশু বয়সি থাকলেও বর্তমানে কাগজে কলমে তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পাওয়া গেছে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার রামভদ্রপুর ইউপির বাসিন্দা ফজলুল হক বেপারীর বিরুদ্ধে। রামভদ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত ইউসুব আলী বেপারীর ছেলে তিনি।
স্থানীয়দের মতে, যুদ্ধকালীন শিশু বয়সি ফজলুল কিভাবে মুক্তিযোদ্ধার খাতায় নাম লেখালেন?
সরেজমিন জানা যায়, ২০০৮ সালে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন ফজলুল হক। সেই সময় জন্মসাল ১৯৬৮ থাকলেও ২০১৫ সালে এসে জন্ম সাল ১৯৫৬ চেয়ে এনআইডির তথ্য পরিবর্তনের জন্য কমিশন বরাবর আবেদন করতে চেয়েও ব্যর্থ হন তিনি।
মুক্তিযোদ্ধা হতে সমর্থনকারী দুজন মুক্তিযোদ্ধা সাক্ষীর মাধ্যমে তিনি মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন বলে দাবি স্থানীয়দের। সেক্ষেত্রে ওই মুক্তিযোদ্ধাদের মোটা অংকের টাকাও দেন তিনি। এখন তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্য সব সুবিধাও পাচ্ছেন।
ফজলুল হকের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের বেসামরিক গেজেট ১৩০০ ও মুক্তিযোদ্ধার নম্বর ০১৮৬০০০১৯৯৪ মূলে ফজলুল হককে মুক্তিযোদ্ধা ঘোষণা করা হয়। এছাড়া ভারতীয় তালিকা নম্বর ৭৫৬৭ ও লাল মুক্তিবার্তা নম্বর ০১১২০৫০১২৬। জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার- ২৩৬০৪৭৩৪৩৯।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ফজলুল হক ব্যাপারী দুজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হাত করে মিথ্যা সমর্থন পেয়েছেন। তার আসলে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তিন বছর ছিল।
মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক বেপারি বলেন, আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমি ভারতে ট্রেনিং করেছি। আমি একাত্তরের যুদ্ধ করেছি। তবে আমার জন্ম নিবন্ধনে আমার বয়স ঠিক আছে। কেন জানি না ভোটার আইডি কার্ডে আমার বয়স তিন বছর হলো। আমি আমার ভোটার আইডি কার্ড ঠিক করার জন্য অনেক জায়গায় গিয়েছি; কিন্তু আইডি কার্ডটি ঠিক করতে হলে অনেক প্রমাণ চায় নির্বাচন অফিস এবং এক দালালের মাধ্যমে করতে গিয়ে অনেক টাকা লাগবে তাই আমি আর এই ভোটার আইডি কার্ড ঠিক করার জন্য চাচ্ছি না। তবে আমার জন্ম প্রকৃতপক্ষে ১৯৫৬ সালে। ভুলক্রমে জাতীয় পরিচয় পত্রে ১৯৬৮ সাল হয়েছে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধাকালীন কমান্ডার বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ভোটার আইডি কার্ডে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স সাড়ে ১২ বছরের উপরে হতে হবে। সেক্ষেত্রে কারো কম থাকলে সরকারিবিধি মোতাবেক যে ব্যবস্থা নেয় আমি সেটার পক্ষে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের করণীয় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিন্দ্য মণ্ডল বলেন, যদি কারো বিষয়ে এনআইডিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সাড়ে ১২ বছরের কম এমন কোনো অভিযোগ উঠে তাহলে আমরা প্রাথমিকভাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দেব; যেন তারা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী সিদ্ধান্ত আমরা বাস্তবায়ন করব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।