বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : পরমাণু ধারণার প্রথম প্রবক্তা (তর্কযোগ্যভাবে) ভারতীয় বিজ্ঞানী কণাদ। খ্রিষ্টের জন্মের ৫০০ বছর আগে তিনি বস্তুর ক্ষুদ্রতম এককের কথা বলেন। তবে পরমাণু নিয়ে সত্যিকার অর্থে ভাবতে শুরু করেন গ্রিক বিজ্ঞানীরা। গ্রিসের তখন স্বর্ণযুগ।
তখন একজন দার্শনিক ছিলেন গ্রিসে। লিউসিপ্পাস। তিনি খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করেন, কোনো বস্তুকে ইচ্ছেমতো একের পর এক ভাঙা যাবে না। ভাঙতে ভাঙতে এমন একটা অবস্থায় পৌঁছাবে, তখন আর বস্তুটিকে শত চেষ্টা করলেও সম্ভব নয় ভাঙা।
বস্তুটি পৌঁছাবে একটা ক্ষুদ্রতম আকারে। কিন্তু সেই ক্ষুদ্রতম আকারের নামধাম, বৈশিষ্ট্য কেমন হবে, এ কথা বলে যাননি লিউসিপ্পাস।
পরমাণু তত্ত্বের সবচেয়ে আলোচিত প্রবক্তা ডেমোক্রিটাস। লিউসিপ্পাসের ছাত্র।
ডেমোক্রিটাস বস্তুর ক্ষুদ্রতম অবস্থার নাম দেন ‘অ্যাটম’। অ্যাটম শব্দের অর্থ অবিভাজ্য। বাংলায় আমরা যাকে বলি পরমাণু। কণাদ বা লিউসিপ্পাসের মতো ডেমোক্রিটাসের পরমাণুকেও আধুনিক পরমাণুর সঙ্গে মেলাতে গেলে ভুল হবে।
ডেমোক্রিটাসের জীবদ্দশাতেই জন্ম সর্বকালের অন্যতম সেরা দার্শনিক অ্যারিস্টোটলের।
সবকিছুতেই তিনি পাণ্ডিত্যের বহর দেখিয়েছেন। সমাজে ব্যাপক প্রভাব ছিল তাঁর। তাঁর কথাকে অমর বাণী মনে করত গ্রিকবাসীরা। ডেমোক্রিটাসের পরমাণুতত্ত্ব মানতে পারেননি অ্যারিস্টটল। তিনি ভাবতেন, বস্তুকে ইচ্ছেমতো একের পর এক ভাঙা যায়। সেই মত তিনি প্রকাশ্যে প্রচারও করেন। তবে ডেমোক্রিটাসকে সবাই কিন্তু উড়িয়ে দেননি।
খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকের দার্শনিক ছিলেন এপিকারুস। পেশায় তিনি শিক্ষক। পড়ানোর বিষয়গুলোতে যুক্ত করেন পরমাণুবাদ। পরমাণুবাদ নিয়ে বেশ কিছু পাঠ্যবইও লেখেন। খ্রিষ্টীয়ও প্রথম শতাব্দীতে আবির্ভাব ঘটে লুক্রেটিয়াস নামের আরেক কবি ও দার্শনিকের। রোমান ছিলেন তিনি। তিনি এপিকারুসের দর্শনে অনুপ্রাণিত হন। একটি দীর্ঘ কবিতায় এপিকারুসের পরমাণুবাদ তুলে ধরেন তিনি।
এরপর আবার পরমাণুবাদের অন্ধকার যুগের শুরু। যদিও আরব দার্শনিক ও বিজ্ঞানীরা পরমাণুবাদ নিয়ে কাজ করেছেন। তবে খ্রিষ্টধর্মের প্রভাবে সেসব হালে পানি পায়নি। খ্রিষ্টধর্মে অ্যারিস্টটলের দর্শনের প্রভাব ব্যাপক। তাই অ্যারিস্টটল যে পরমাণুর বিরোধিতা করেছিলেন, সেটা মধ্যযুগ পর্যন্ত টিকে থাকে। পোপ ও পাদরিদের ব্যাপক দাপট তখন। এপিকারুসের পরমাণু ধারণা মানতে পারেননি গির্জার পাদরিরা। তাই লুক্রেটিয়াসের লেখা বইটিকে নিষিদ্ধ করা হয়। ধ্বংস করা হয় তাঁর বইয়ের সব কপি। একটা কপিই কেবল টিকে ছিল। ১৪১৭ সালে সেটা উদ্ধার করা হয়। তৈরি করা হয় সেটার প্রতিলিপিও।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।