জুমবাংলা ডেস্ক : ব্যাপক প্রশাসনিক প্রস্তুতিতে আতঙ্ক ছড়ালেও ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাব তেমন একটা পড়েনি সরাসরি আঘাত হানা ভারতের দুই রাজ্যে। সামান্য বৃষ্টিপাত ও কালবৈশাখের মতো সাময়িক দমকা হাওয়াতেই পশ্চিমবঙ্গে মিলিয়ে গেল সামুদ্রিক ঝড়টি। অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব তেমন না থাকলেও ভারী বৃষ্টিপাতে কিছুটা প্রভাব পড়েছে ওড়িশার জনজীবনে। সব মিলিয়ে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় দানাকে ঘিরে প্রশাসনিক আতঙ্ক কাটিয়ে ক্রমশ জনজীবন স্বাভাবিক হচ্ছে ভারতের উড়িষ্যা এবং পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে।
সব মিলিয়ে সাড়ে পাঁচশোর বেশি ট্রেন, তিনশোর বেশি বিমান যাত্রা বাতিল! ওড়িষার ১৪ জেলাকে বিপদজনক ঘোষণা, ৬ হাজার সাইক্লোন শেল্টারে ১০ লাখ ৬৬ হাজার মানুষকে রাতারাতি স্থানান্তর, ২৮৮ উদ্ধারকারী দল মোতায়েন, পশ্চিমবঙ্গে ৪ জেলাকে বিপদজনক ঘোষণা, ৮৯১ সেন্টারে ১ লাখ ৬৬ হাজার মানুষকে স্থানান্তর। ১৫০ বেশি উদ্ধারকারী দল মোতায়েন। ব্যাপক ত্রানের ব্যবস্থা। ঘূর্ণিঝড় দাদাকে কেন্দ্র করে প্রশাসক তৎপরতা ছিল তুঙ্গে। ঝড়ের পরিবেশ ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য শুক্রবার রাতভর পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক কার্যালয় নবান্নের রাত কাটান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ তার সচিবালয়ের কর্মকর্তারা। উড়িষ্যায় সাইক্লোন কমান্ড শেল্টারের রাতভর পর্যবেক্ষণে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি।
পশ্চিমবঙ্গ-ওড়িশার পাশাপাশি বিপত্তি এড়াতে অন্ধ্রপ্রদেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী পর্যটন কেন্দ্র পর্যন্ত পর্যটক শূন্য করে দেয়া হয়েছিল প্রশাসনের তরফ থেকে।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে কলকাতা ও ভুবেনশ্বরসহ দুই রাজ্যেই সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল বিমান ও রেল পরিষেবা। তবে ঘূর্ণিঝড়ে তেমন কোনো বড় ক্ষয়ক্ষতি কিংবা জীবনহানির ঘটনার কোন খবর নেই। তবে অমাবস্যার মড়া কোটালের জেরে সৃষ্ট সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস ও দমকা হাওয়ায় ওড়িশার পুরী ও ভদ্রকসহ ১৪ টি জেলায় ভারী বৃষ্টি, গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়া, বেশ কয়েকটি কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি ভদ্রক জেলার ধামারা ও ভিতরকণিকা অঞ্চলে সমুদ্রের তীরবর্তী বাঁধ ভেঙে বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত খবর নিশ্চিত করেছে ওড়িশা প্রশাসন।
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণায় এবং পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুরে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় ভাঙ্গন এবং জলোচ্ছ্বাসের ফলে বেশ কিছু গ্রাম জলমগ্ন ওর খবর নিশ্চিত করেছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার। তবে বড় কোন বিপত্তি ছাড়াই উতরে গিয়েছে ডানা সংকট। শুক্রবার সকাল ১১ টা থেকে রেল ও বিমান পরিষেবা পুনরায় চালু হয়ছে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জনজীবন।
কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর বলছে বঙ্গোপসাগরে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ডানার কারণে অতিরিক্ত নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে। যার কারনে শনিবার দিনভোর বৃষ্টি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য সৃষ্ট ঘূর্ণাবর্ত পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বিহার, ঝাড়খন্ড ও উত্তরপ্রদেশে দিকে এগোচ্ছে। যার ফলে এই রাজ্যগুলিতেও মেঘলা আকাশ ও ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
শুক্রবার দুপুর থেকে ফের পর্যটন কেন্দ্রে মানুষের ঢল নামে। শারদীয়া মশরুম চলছিল তার মধ্যে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় দানা এসে পড়ায় রীতিমতো কপালে চিন্তার ভাজ ফেলেছিল কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত কালীপুজো উদ্যোক্তাদের কপালে। যদিও দুর্যোগ কাটিয়ে উঠে পুনরায় উৎসবমুখী হতে পারবে বাঙালি এমনটাই আশা।
অন্যদিকে দুই রাজ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের নামে আতংক সৃষ্টি করে ত্রাণ বাণিজ্যের অভিযোগে সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।