বিনোদন ডেস্ক : ভারতের সর্বকালের সেরা সুরকার হিসেবেই খ্যাতি তাঁর। ভারতীয় সুরকার হিসেবে জিতেছেন অস্কার। পেয়েছেন একাধিক সম্মাননা, অ্যাওয়ার্ড। এ আর রহমান, শুধু এই নামটিই যথেষ্ট।
তাকে চেনেন না, বিশ্বজুড়ে এমন সংগীতানুরাগী পাওয়া যাবে না। আজ সাফল্যের চূড়ায় তিনি। তবে জানেন কি, এ আর রহমান একটা সময় ছিলেন ব্যর্থতায় জর্জরিত এক মানুষ। এমনকি নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন এই সুরের সম্রাট! প্রায়ই আত্মহত্যার ভাবনা লালন করতেন মনে! সম্প্রতি অতীতের সেইসব কালো স্মৃতিই স্মরণ করলেন এ আর রহমান।
অক্সফোর্ড ইউনিয়ন ডিবেটিং সোসাইটির একটি অনুষ্ঠানে সম্প্রতি যোগ দিয়েছিলেন এ আর রহমান। সেখানেই তিনি ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তাঁর মায়ের কথা স্মরণ করেন। বলেন, ‘আমি যখন ছোট ছিলাম, আমার আত্মহত্যা করার কথা মনে হতো। তখন আমার মা আমায় বলতেন যখন তুমি নিজের বদলে অন্য কারো জন্য বাঁচতে শুরু করবে তখন দেখবে আর এসব ভাবনা আসবে না।
এটাই বোধ হয় আমার মায়ের আমাকে দেওয়া অন্যতম সুন্দর পরামর্শ ছিল।’ মায়ের কথামতো সেদিন থেকে তিনি নিজের স্বার্থের বদলে অন্যদের জন্য কিছু করার ওপর বেশি জোর দেন। অস্কারজয়ী সুরকার বলেন, ‘তুমি যখন অন্য কারো জন্য বাঁচবে তখন তুমি আর স্বার্থপর থাকবে না। তোমার জীবন একটা নতুন উদ্দেশ্য পাবে। আমি এই পরামর্শটা খুব সিরিয়াসলি নিয়েছিলাম।
কারো জন্য কম্পোজ করা হোক বা কারো জন্য লেখা হোক কিংবা কাউকে খাবার কিনে দেওয়া হোক- এই জিনিসগুলো আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। এগিয়ে নিয়ে যায় জীবনে।’
এ আর রহমান আরো জানান, ‘অনেক সময় মনে হয় যে জীবন একঘেয়ে হয়ে গেছে, এক জিনিস ঘটে চলেছে। কিন্তু তখনই যেন মনে পড়ে, আমাদের জীবনের একটা বৃহত্তর উদ্দেশ্য আছে।’
ভারতীয় বিনোদন জগতে তিন দশকেরও বেশি সময় কাটিয়ে দিয়েছেন এ আর রহমান। শুধু দক্ষিণ ভারত নয়, ভারতীয় কিংবা বলিউড নয়, এ আর রহমান আন্তর্জাতিক মানের এক শিল্পী, যাঁর কদর করে প্রথম বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশ। আর কদর করে বলেই এ আর রহমানের নামে গোটা একটি রাস্তার নামকরণ হয়েছে কানাডার শহর মারখামে। নাম-যশ-খ্যাতি সব পেয়েছেন তিনি। কিন্তু এত সাফল্যের পরেও এ আর রহমান মাটির কাছাকাছি থাকতেই ভালোবাসেন। মৃদুভাষী সংগীত পরিচালকের সমস্ত কথা হয় সুরের সঙ্গে। নাম না জানা অসংখ্য বাদ্যযন্ত্রের আবিষ্কারক তিনি। নিজের গানে সেইসবের ব্যবহারও করেছেন রহমান। বলিউডে গানের জগতে নতুন প্রতিভাদের প্রতিষ্ঠা করার ব্যাপারেও তাঁর দক্ষতা অসীম।
রহমানের তিন সন্তান আমিন, খতিজা এবং রহিমা। হিন্দু পরিবারে জন্ম হলেও পরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এ আর রহমান। প্রথমে নাম ছিল দিলীপ কুমার। কিন্তু ২৩ বছর বয়সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে দিলীপ হয়ে যান আল্লারাখা রহমান। গুরুতর অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন রহমানের বোন। এক সুফি সাধু তাঁর বোনকে সুস্থ করে তোলেন। এরপরই ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হন এ আর রহমান। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রতিটা পদক্ষেপে এ আর রহমান নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। সেগুলো মোকাবেলা করে আজ তিনি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। তিন দশক পেরিয়েও সুরের জগতে অদ্বিতীয় একজন হয়েই নিজের জাদু ছড়িয়ে যাচ্ছেন এ আর রহমান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।