আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং জনপ্রিয়তার কারণে উত্তরাখণ্ডের শৈল শহর আউলিকে মিনি সুইজারল্যান্ড বলা যেতে পারে। এখানে প্রায় সারা বছরই বরফ উপভোগ করতে পারেন। বরফের মরশুম না থাকলেও পর্যটক বা লোকজনের জন্য এখানে বরফের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
অগণিত সুন্দর স্থান দিয়ে ঘেরা একটি দেশ এই ভারত। লোকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা উঠলে সুইজারল্যান্ডের কথা তোলেন। কিন্তু জানেন কি, ভারতে ওইরকম একাধিক ‘সুইজারল্যান্ড’ রয়েছে? আজ্ঞে হ্যাঁ, সুইজারল্যান্ডের সৌন্দর্যের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে এরকম অনেকগুলি স্থানই রয়েছে আমাদের দেশে। বাংলার দার্জিলিং কিংবা হিমাচল প্রদেশের খাজ্জিয়ার বা চোপতা সুইজারল্যান্ডের থেকে কম কিছু নয়। এগুলিকে বলা হয় বলা হয় ভারতের মিনি সুউজারল্যান্ড। এরকমই আপরেকটি অপূর্ব সুন্দর স্থান হল আউলি। তুষারপাতের কারণে এই স্থান সাদা বরফে ঢেকে যায়। আর তখনই একে দেখতে লাগে একেবারে সুইজারল্যান্ডের মতো।
মজার ব্যাপার হল ফলিতে যখন তুষারপাত হয় না, তখন সেখানকার হাসিন্দারা নিজেরাই হাতে করে তুষার পাহাড় তৈরি করে ফেলে। ভারতের এই মিনি সুইজারল্যান্ড আউলির সৌন্দর্যের কোনও তুলনা হয় না। কেউ যদি আউলি যাওয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে চলুন আজকে এই জায়গাটি সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য জেনে নিই। আর কেন এই স্থানকে মিনি সুইজারল্যান্ড বলা হয় তাও জেনে নিই।
জোশীমঠ থেকে আউলিকে সংযুক্ত করার জন্য একটি ৪.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রোপওয়ে রয়েছে। এটি হল এশিয়ার দ্বিতীয় দীর্ঘতম রোপওয়ে। এই রোপওয়ে টাওয়ারের মাধ্যমে মানুষ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দশ হাজার ফিট উচ্চতায় অবস্থিত আউলির দিকে নিয়ে যায়। ৪.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রোপওয়েটি এশিয়ার দ্বিতীয় দীর্ঘতম রোপওয়ে, শুধু তাই নয়, এর গতি অন্যান্য দেশের রোপওয়ে থেকে অনেক বেশি। একটি কেবিনে ২৫ জন পর্যটক বসতে পারেন। হয়তো সুইজারল্যান্ডের ছবিতে এধরনের রোপওয়ে দেখে থাকবেন।
এখানে আছে স্লিপিং বিউটি
আউলির ঠিক সামনেই রয়েছে একটি পাহাড়, যা বরফে ঢাকা পড়ার পর দেখলে মনে হয় যেন একজন সুন্দরী মেয়ে শুয়ে রয়েছে। পাহাড়ের এই আকারের কারণেই অনেকে এটিকে স্লিপিং বিউটি বলে। আর এই কারণে এই জায়গাটির নামকরণও হয়েছে স্লিপিং বিউটি। এছাড়াও এখানে আশপাশের অনেক প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। শুধু তাই নয়, এখানে শান্তিতে চুপচাপ বসে প্রকৃতি দেখার আনন্দ আর কোথাও পাওয়া যাবে না।
স্কিইং রেস
আউলিকে স্কিইং রেসের জন্য অনুমোদন দিয়েছে FIS। স্কিইং-এর জন্য এখানে একটি ১৩০০ মিটার দীর্ঘ ট্র্যাক রয়েছে। সেখানকার যে কোনও স্থানই স্নো ট্রেকিং উপভোগ করতে পারেন। ট্রেকিং-এ আগ্রহীদের জন্য এখানে অনেক পর্বত চূড়া রয়েছে। যেমন নন্দা দেবী, কামেত, মান পর্বত, দুনাগিরি এবং জোশীমঠ। রেঞ্জের অন্যান্য ছোটো শৃঙ্গগুলির মধ্যে রয়েছে গরসন, টালি, কুয়ারি পাস, খুলারা এবং তপোবন।
তুষারপাত না হলে এখানে বরফ তৈরি করা হয়
বিশ্বের সর্বোচ্চ কৃত্রিম হ্রদটি রয়েছে আউলিতে। ২৫ হাজার কিলোমিটার ধারণক্ষমতার এই হ্রদটি ২০১০ সালে নির্মিত হয়েছিল। আউলিতে যখন তুষারপাত হয় না, তখন এই লেকের জল দিয়ে কৃত্রিম তুষার তৈরি করা হয়। বরফ তৈরির জন্য ফ্রান্স থেকে কৃত্রিম মেশিন বসানো হয়েছে এখানে।
আউলি ঘোরার সেরা সময়
বছরের ৩৬৫ দিনের যে কোনও সময়ই আউলি ঘুরে দেখা যেতে পারে। তবে এই স্থান দেখার সেরা সময় নভেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভারী তুষারপাতের কারণে এখানকার জলবায়ু খুব ঠান্ডা থাকে। মে থেকে নভেম্বরের মধ্যে এখানকার আবহাওয়া মনোরম থাকে।
কীভাবে আউলি যাবেন
বিমান, রেল এবং সড়কপথে আউলি পৌঁছোনো যায়। সড়কপথে আউলি যেতে চাইলে ভ্রমণ সবচেয়ে আনন্দদায়ক হতে পারে। কারণ সড়কপথে চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সহ নানা আকর্ষণীয় জিনিস চোখে পড়বে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।