আমরা জানি গ্রহ নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘোরে। তাহলে কি নক্ষত্র বা কৃষ্ণগহ্বর অন্য কোনো কিছুকে কেন্দ্র করে ঘোরে? এটা তো নিশ্চয়ই ঠিক যে গ্রহ নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘোরে। এখন প্রশ্ন হলো নক্ষত্রগুলো কি অন্য কোনো মহাজাগতিক বস্তুকে কেন্দ্র করে ঘোরে? হ্যাঁ, নক্ষত্রও ঘোরে। আমাদের সূর্য ছায়াপথের কেন্দ্রের চারপাশে একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরছে। এর গড় বেগ ঘণ্টায় ৮ লাখ ২৮ হাজার কিলোমিটার। ছায়াপথের চারপাশে একবার ঘুরে আসতে সূর্যের প্রায় ২৩ কোটি বছর সময় লাগে। অন্যদিকে কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাকহোল হলো মহাশূন্যে এমন একটি এলাকা, যেখানে গ্র্যাভিটি ভীষণ শক্তিশালী। সে চারপাশের সবকিছু টেনে নেয়, এমনকি আলোও সেখানে আটকা পড়ে। মহাকাশবিজ্ঞানীরা বলেন, ব্ল্যাকহোলও একইভাবে…
Author: Yousuf Parvez
ওয়ার্মহোল আসলে একটি তাত্ত্বিক ধারণা। আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটির সঙ্গে এই ধারণা সংগতিপূর্ণ। ধারণাটি হলো, শত শত আলোকবর্ষ দূরের বা কম দূরত্বের অস্তিত্বশীল কোনো কিছু, সময়ের কোনো অবস্থান বা একাধিক বিশ্বের সঙ্গে ওয়ার্মহোল সংযোগ সাধন করে। ধারণাটি খুব মজার। এর সঙ্গে টাইম মেশিনের একটা যোগাযোগ আছে। এই টাইম মেশিন নিয়ে আমাদের কৌতূহলের শেষ নেই। ধরা যাক ঢাকায়, আমাদের বাসায় টাইম মেশিনে বসে অতীতে যাত্রা শুরু করলাম। একটা ওয়ার্মহোলের মধ্য দিয়ে সুড়ুৎ করে, ধরা যাক, দুই হাজার বছর অতীতে চলে গেলাম। তাহলে কী মজাই না হতো! স্থান একই, শুধু পার্থক্য চতুর্থ মাত্রার, মানে সময়ের। আমাদের বাসাটা চেনা যাচ্ছে না। চারপাশে…
ই-টি বা এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল প্রাণীর কথা আমরা সব সময়ই শুনি। কিন্তু এখন পর্যন্ত পৃথিবীর বাইরে ভিনগ্রহে কোনো বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। রেডিও ওয়েভের মাধ্যমে অনেক ধরনের সংকেত মহাবিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারপর মহাকাশ থেকে কোনো উত্তর আসে কি না, সেই অপেক্ষায় বিজ্ঞানীরা রয়েছেন। না, কোনো খবর নেই। এরপরও এ বিষয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। সনি পিকচার্স এন্টারটেইনমেন্ট সম্প্রতি এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল নিয়ে একটা সিনেমা তৈরি করেছে। সেখানেও কল্পিত কিছু দেখানো হয়েছে। কিন্তু পৃথিবীর বাইরে কোথাও বুদ্ধিমান প্রাণী থাকতে পারে কি না, সেটা সিনেমার বিষয়বস্তু নয়। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিনের, জুন ২০১৯ সংখ্যায় এ বিষয়ে একটি তথ্যবহুল লেখা ছাপা হয়েছে। আসুন দেখা যাক…
একনাগাড়ে ২-৩ মিনিট চোখের পলক না ফেলে কোনো দিকে তাকিয়ে থাকি, তাহলে চোখে পানি আসে কেন? প্রথমে বুঝতে হবে চোখের পলক পড়ে কেন। চোখের কোণে রয়েছে নেত্রনালি। এই নালি দিয়ে সব সময় তৈলাক্ত ও মিউকাস মিশ্রিত ঘন লবণাক্ত কিছু পানি বের হয়। ওই পানি চোখ ভালো রাখার জন্য খুব দরকার। সমস্ত চোখে ওই তরল ছড়িয়ে দিতে চোখের পলক পড়ে। চোখ সব সময় ভেজা রাখতে হয়। না হলে চোখের সমস্যা হতে পারে। যদি দীর্ঘ সময় চোখের পলক না পড়ে, একদৃষ্টিতে কোনো দিকে তাকিয়ে থাকি, তাহলে চোখ শুকিয়ে যাবে। তখন চোখে জ্বালাপোড়া হতে পারে। এ জন্য চোখে পানি আসতে পারে। নেত্রনালির পানি…
বেশির ভাগ মানুষের ধারণা, শুধু আগুন দিয়েই ত্বক পুড়ে যায়। আসলে আগুন ছাড়াও যেকোনো ধরনের শক্তির উত্স থেকে ত্বকে পোড়ার মতো ক্ষত তৈরি করতে পারে। এ ধরনের শক্তি উত্সগুলো ত্বকের নিচের প্রোটিন ও ফ্যাট টিস্যুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। পুড়ে গেলে ত্বকে বিভিন্ন মাত্রার ক্ষত তৈরি হয়। প্রথম মাত্রার পোড়া অতটা যন্ত্রণাদায়ক নয়। কিন্তু দ্বিতীয় মাত্রা পোড়ার ক্ষেত্রে জ্বলন অনেক বেশি হয়, বড় ফোসকা পড়ে। সপ্তাহ বা মাসখানেক লেগে যায় ক্ষতস্থান সারতে। তৃতীয় মাত্রার পোড়া সবচেয়ে ভয়াবহ। এই ক্ষত খুব গভীর হয়। স্থায়ীভাবে দাগ বসে যায়। রোগীর দেহের অন্য জায়গা থেকে ত্বক নিয়ে গ্রাফটিং করে ক্ষত পূরণ করা লাগে। তবে এত গভীর…
আমরা স্বপ্ন দেখি কেন? স্বপ্নের বিষয়টি কী হবে, সেটা মস্তিষ্ক নির্বাচন করে কীভাবে? স্বপ্নগুলো কি ঘুমন্ত অবস্থায় তৈরি ভ্রম?সাধারণত সারা দিনের বা কিছুদিন আগের কাজ নিয়ে আমাদের মাথায় অনেক সমস্যার বিষয় ঘুরেফিরে আসে। অনেক সময় আমরা টেনশনে থাকি। কোনো জরুরি সমস্যা আমাদের উদ্বিগ্ন করে। কোনো ফোন এসেছিল। দুপুরে কী খেয়েছি। একটু ঝাল লেগেছিল। অথবা ভাইয়া বকা দিয়েছিল। বা বন্ধুর জন্মদিনে অনেক আনন্দ করেছি। এসব বিষয় ঘুমের মধ্যে আবার একটু ভিন্নভাবে একেবারে বাস্তব ঘটনার মতো দেখা দেয়। একেই আমরা স্বপ্ন বলি। কোনো কোনো বিজ্ঞানী বলেন ‘রেম স্লিপ’ (র্যাপিড আই মুভমেন্ট)-এর সময় আমরা স্বপ্ন দেখি। তবে গবেষণায় এর সত্যতা এখনো প্রমাণিত হয়নি।…
প্রচলিত অর্থে কারও উচ্চতা বাড়ে না। নভোচারী আবার পৃথিবীতে ফিরে এলে তাঁর আগের উচ্চতা ফিরে পান। নিশ্চয় প্রশ্ন জাগছে, এটা কেন এবং কীভাবে ঘটে? আসলে আমরা যখন পৃথিবীতে থাকি, তখন সব সময় পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কেন্দ্রের দিকে আমাদের টেনে রাখে। ফলে মেরুদণ্ডের কশেরুকাগুলোর মধ্যবর্তী শূন্যস্থান সংকুচিত হয়ে আসে। কিন্তু মহাকাশে পরিভ্রমণের সময় শূন্য মহাকর্ষ (জিরো গ্র্যাভিটি) অবস্থানে কশেরুকাগুলোর ওপর আপাত কোনো আকর্ষণ বল কাজ করে না। তখন ওগুলো একটু প্রসারিত হয়। ফলে উচ্চতা বাড়ে। শুধু মহাশূন্যেই নয়, আমরা সারা দিন হাঁটি, চলাফেরা করি। এই সময় মাধ্যাকর্ষণের টানে আমাদের উচ্চতা সামান্য কিছু হলেও কমে। রাতে ঘুমের সময় উচ্চতা আবার কিছুটা বাড়ে।…
চিকুনগুনিয়া রোগ আমাদের অনেক কষ্ট দেয়। জ্বর চলে যায়, কিন্তু সারা শরীরে ব্যথা। বিশেষভাবে পিঠের নিচের দিকে, কোমরে দারুণ ব্যথা (লোয়ার ব্যাক পেইন) আমাদের কাহিল করে ফেলে। কী করব? অনেক সময় চিকিত্সকেরা ব্যথা কমানোর উঁচু মাত্রার ওষুধ দেন, কখনো অপারেশনের পরামর্শ দেন। কিন্তু এখন চিকিত্সকেরা বলছেন, এত কিছুর দরকার নেই। সামান্য অ্যাসপিরিনই যথেষ্ট। একটু অপেক্ষা করতে হবে। সময়ে সব ঠিক হয়ে যাবে। দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এর সায়েন্স টাইমস-এ বিষয়ে লিখেছেন গিনা কোলাটা। আমরা যদি নিয়মিত যোগব্যায়াম করি, কাজেকর্মে সক্রিয় থাকি, তাহলে ধীরে ধীরে পিঠের ব্যথা সেরে যায়। কখনো আমাদের ফ্রোজেন শোল্ডার হয়। হাত উঁচু করতে পারি না। ভীষণ ব্যথা হয়। এরও…
ইলন মাস্কের মূল চিন্তাটাই হলো একই রকেট বারবার ব্যবহারের প্রযুক্তি উদ্ভাবন। তিনি সফল হয়েছেন। তাঁর উদ্ভাবিত ফ্যালকন হেভি রকেটে মহাকাশযাত্রার ব্যয় এক-তৃতীয়াংশে নেমে আসবে। কারণ একই রকেট বারবার ব্যবহার করা যায়। রকেটের কয়েকটি অংশ থাকে। মূল রকেটের সঙ্গে থাকে একটি বা দুটি বুস্টার রকেট। এদের কাজ হলো উৎক্ষেপণের পর প্রায় ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উচ্চতায় উপগ্রহটিকে নিয়ে কক্ষপথে স্থাপন করা। এরপর মূল রকেট থেকে আলাদা হয়ে বুস্টার রকেট পৃথিবীতে ফিরে আসে। এ সময় বাতাসের সঙ্গে ঘর্ষণে ওগুলো জ্বলে-পুড়ে যায়, যেটুকু ফিরে আসে তা আর ব্যবহারযোগ্য থাকে না। সাধারণত ওই রকেটগুলো সাগরে পড়ে। এখন সাগর-মহাসাগরের তলদেশে হাজার হাজার রকেট শেল জমা হয়ে…
এককথায় বলা যায়, মহাশূন্য প্রচলিত অর্থে ঠান্ডাও না আবার গরমও বলা যাবে না। কারণ মহাশূন্যে তো কোনো বস্তু নেই। আর সে ক্ষেত্রে উষ্ণতা পরিমাপের কোনো সুযোগও থাকে না। এখন ধরা যাক, কোনো তপ্ত বস্তু মহাশূন্যে গেল। যেমন কোনো রকেট। তাহলে সে মহাশূন্যে তাপ হারাতে থাকবে এবং এর তাপমাত্রা হবে মাইনাস ২৭০.৫৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটা হলো মহাজাগতিক পটভূমি বিকিরণের (CMB) তাপমাত্রা। মানে জমে বরফের চেয়েও বরফ। ওদিকে তার হারানো তাপ আশপাশের কোনো বস্তু থাকলে তাকে উত্তপ্ত করবে, কিন্তু সে-ও তাপ হারিয়ে শেষ পর্যন্ত এই তাপমাত্রায় চলে যাবে। অবশ্য সূর্যের আলোয় সে উত্তপ্ত হবে। কিন্তু যে দিকটা সূর্যের আলো পাবে না, সেটা…
আমরা ঘুমাতে যাওয়ার আগে অনেক সময় ক্লান্ত থাকার কারণে আড়মোড়া ভাঙি। আবার ঘুম থেকে ওঠার পর ফ্রেশ অবস্থায়ও আড়মোড়া ভাঙি। এটা কেন হয়? এটা কি শুধুই শরীরের আড়ষ্টতা কাটানোর জন্য—নাকি এর পেছনে কোনো বৈজ্ঞানিক কারণ আছে? প্রশ্নগুলো সত্যিই বুদ্ধিদীপ্ত। কারণ, প্রতিদিন আমাদের চোখের সামনে যেসব ঘটনা ঘটে চলেছে, আমরা দেখছি, কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগে না। বিজ্ঞানমনস্কতার প্রথম কথা হলো, যা দেখি, তার কারণ অনুসন্ধান। এটা সত্যিই এক প্রশ্ন বটে যে ঘুমের আগে যদি আমরা ক্লান্ত থাকার জন্য আড়মোড়া ভাঙি, তাহলে ঘুম থেকে উঠে আবার কেন সেই একই কাজ করি, অর্থাৎ আড়মোড়া ভাঙি? ঘুমে তো ক্লান্তি দূর হয়। তাহলে কেন আড়মোড়া?…
মহাবিশ্ব যদি প্রসারণশীল হয় ও মহাবিশ্বের সব পদার্থ একে অপর থেকে দূরে সরে যায়, তাহলে অ্যান্ড্রোমিডা মিল্কিওয়ে থেকে দূরে সরে যাচ্ছে না কেন? মহাকাশবিজ্ঞানীরা বলছেন, এখন থেকে প্রায় ৪০০ কোটি বছর পর আমাদের মিল্কিওয়ে ছায়াপথ ও অ্যান্ড্রোমিডার সংঘর্ষ ঘটবে। এই সংঘর্ষ অনিবার্য। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কেন? যেখানে মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে ও সব ছায়াপথ প্রচণ্ড বেগে একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, তাহলে অ্যান্ড্রোমিডা কেন দূরে সরে না গিয়ে আমাদের ছায়াপথের দিকে আসছে? এর কারণ হলো, দূরে সরে যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু এই দুই গ্যালাক্সি বা ছায়াপথের মধ্যে মহাকর্ষ বলের প্রভাব আরও বেশি। ফলে এরা সম্প্রসারণশীল এই মহাবিশ্বে পরস্পরের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে।…
সব খেলাই জনপ্রিয়, তবে ফুটবলের একটু বেশি সুবিধা। মাত্র ৯০ মিনিটের খেলা। এর মধ্যেই হার-জিত।কম সময়ে প্রবল উত্তেজনা সবাইকে আবিষ্ট করে রাখে। হকি খেলাও কম সময়ের, কিন্তু ফুটবলের আছে নানা বৈচিত্র্য। আপনি হেড করে, পায়ের সামনে-পেছনে, ডানে-বাঁয়ে, পিঠে, হাঁটুতে, মাঠে হঠাৎ শুয়ে-পড়ে ব্যাক শট, কত ভাবেই না খেলতে পারেন। প্রতি মুহূর্তে আপনার প্রিয় খেলোয়াড় নতুন কিছু কারুকার্য দেখাতে পারেন।এত বৈচিত্র্য অন্য খেলায় প্রায় নেই। সেজন্যই টেনিস, বাস্কেটবল, পিংপং প্রভৃতি খেলার তুলনায় ফুটবলের স্টেডিয়াম অনেক বড়। ক্রিকেট খেলাও কম জন প্রিয় নয়। তবে অনেক বেশি সময় নেয়। ফুটবলের মজা হলো মাত্র দেড় ঘণ্টায় এসপার-ওসপার হয়ে গেল। আরেকটি বড় ব্যাপার হলো, খেলার…
আমরা আজকাল দেখি, পুলিশ মাদক বা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য কুকুরের সাহায্যে অনুসন্ধান চালায়। কোনো জায়গায় লুকানো মাদকের সন্ধান পেলে কুকুর ঘেউ ঘেউ শুরু করে। তখন পুলিশ সতর্কতার সঙ্গে অনুসন্ধান চালিয়ে অবৈধ মাদক বা অস্ত্র উদ্ধার করে। এখন প্রশ্ন হলো কুকুরের এই প্রশিক্ষণ কীভাবে দেওয়া হয়? আমরা জানি কুকুরের ঘ্রাণশক্তি খুব বেশি। আবার বিশেষ জাতের কুকুর বেশি দক্ষ। যেমন জার্মান শেফার্ড ও বিগলসজাতীয় কুকুরের ঘ্রাণ গ্রহণ দক্ষতা সবচেয়ে বেশি। এদেরই বিশেষ প্রশিক্ষণের জন্য বাছাই করা হয়। প্রশিক্ষণের কৌশলটিও চমত্কার। প্রথমে একটি পরিষ্কার তোয়ালে গোলাকার বলের মতো করে সামনে ছুড়ে দেওয়া হয়। নরম তোয়ালের বলটি কুকুর খেলার উপকরণ হিসেবে নেয়। সে…
রেডিও শব্দটি এখন বেতারযন্ত্রের জন্যই বেশি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু ইংরেজি এই রেডিও শব্দের উত্পত্তি হয়েছে ল্যাটিন শব্দ রেডিয়াস (Radius) থেকে, যার মূল অর্থ চাকার স্পোক বা আলোর রশ্মি বিকিরণ রেখা। অর্থাৎ রশ্মির সঙ্গে সম্পর্ক বোঝাতে এই শব্দ ব্যবহৃত হতো। আবার এই শব্দ থেকেই বৃত্তের রেডিয়াস বা ব্যাসার্ধ শব্দটির উত্পত্তি। যোগাযোগের ক্ষেত্রে ১৮৮১ সালে ফরাসি বিজ্ঞানী আর্নেস্ট মারকাডিয়ারের পরামর্শে প্রথম রেডিওফোন শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন টেলিফোনের উদ্ভাবক আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল। ‘বিচ্ছুরিত শব্দ’ বোঝাতে রেডিওফোন শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছিল সেবার। ১৮৬৫ সালে বিদ্যুৎচুম্বকবিষয়ক ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্ব প্রকাশিত হয়েছিল। এতে বিদ্যুৎচুম্বকীয় তরঙ্গের বেগ সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল। বিজ্ঞানী ম্যাক্সওয়েলের এই ভবিষ্যদ্বাণী ১৮৭৯ সালে প্রমাণ করেছিলেন হেনরিক হার্জ।…
প্রশ্নটা শুনলে অবাকই লাগে। চাঁদের যে মালিকানার ব্যাপার থাকতে পারে, সে ধরনের চিন্তা সাধারণত মাথায় আসে না। আমরা দেখেছি ঔপনিবেশিক আমলে নতুন কোনো দেশ জয় করে পতাকা উড়িয়ে দিলেই সেখানে তার মালিকানা প্রতিষ্ঠা হয়ে যেত। এখন দেখছি, ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই চাঁদের পিঠে নেমে নিল আর্মস্ট্রং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা উড়িয়ে দিয়েছেন। আগের ধারায় তাহলে কি যুক্তরাষ্ট্র চাঁদের মালিকানা পেয়ে গেল? না, সেটা হবে না। কারণ এর দুই বছর আগেই ১৯৬৭ সালে আমেরিকানরা ‘জাতিসংঘ আউটার স্পেস ট্রিটি’ বা মহাশূন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। সেখানে স্পষ্ট বলা আছে, কোনো দেশ চাঁদ বা মহাজাগতিক কোনো বস্তুর ওপর সার্বভৌমত্ব দাবি করতে পারবে না। ওগুলো সবার…
দুধ-আনারসে বিষক্রিয়া? কথাটা সত্য নয়। আনারসের সঙ্গে গরুর দুধের কোনো শত্রুতা নেই। বিষক্রিয়ারও কোনো আশঙ্কা নেই। মানুষ মারা যাওয়ার মতো ঘটনার সুযোগ নেই। তবে বলব, এর সত্য-মিথ্যা পরীক্ষা করতে যেও না কিন্তু। কারণ, তোমার যদি ‘ল্যাকটোজ ইন টলারেন্স’ থাকে, তাহলে সমস্যা হতে পারে। দুধের একটি মূল উপাদান হলো ল্যাকটোজ। অনেকের পাকস্থলি ল্যাকটোজ পরিপাক করতে পারে না। তাই দুধ খেলে বমি হতে পারে। আর যদি এর আগে-পরে ঘটনাক্রমে আনারস খেয়ে থাকো, তাহলে তো কথাই নেই। মনে হবে দুধ-আনারসের জন্যই দুর্ভোগ! হয়তো কোনো কালে কারও দুধ-আনারসে প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। হয়তো তার ছিল ল্যাকটোজ ইন টলারেন্স। চিকিত্সকদের ধারণা, এ রকম কোনো ঘটনা থেকে ‘দুধ-আনারসের’…
আমরা প্রতিদিন নিজেদের ঘরদোর ধুয়েমুছে পরিষ্কার করে রাখি। কিন্তু মহাকাশে যে জঞ্জাল জমছে, তার কথা কয়জন ভাবি? অবশ্য সাধারণ চোখে মনে হয়, মহাকাশ তো বেশ স্বচ্ছ, তাহলে আবার পরিষ্কারের প্রশ্ন কেন? আসলে মেঘের ওপরে, আরও কিছু দূরে, পৃথিবীর ‘নিচু কক্ষপথ’ প্রান্তরে (লো আর্থ অরবিট) মহাশূন্যের আবর্জনা ছড়িয়ে পড়ছে। ইংরেজিতে একেই বলি ‘স্পেস জাঙ্ক’। এদের বেশির ভাগই মানুষের অনিয়ন্ত্রিত কাজের ফল। যেমন মহাশূন্যযানের অংশ, ওই সব যান থেকে ছিটকে পড়া ছোট ছোট বস্তু, রকেটের খসে পড়া টুকরা, এখন আর কাজ করছে না এমন কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ, অথবা এসব বস্তুর মধ্যে সংঘর্ষের ফলে সৃষ্ট আরও অসংখ্য বস্তু খণ্ড প্রভৃতি। মহাশূন্যে শুধু মানুষের তৈরি…
সব পাখি আকাশে ওড়ার সময় ডানা ঝাপটায়, কিন্তু চিল পাখি ডানা না ঝাপটিয়ে আকাশে কীভাবে ওড়ে। পাখির ওড়ার সঙ্গে ডানা ঝাপটানোর সম্পর্ক কী? সুন্দর প্রশ্ন। আমার যদি পাখা থাকত, তাহলে মহা আনন্দে আকাশে ভেসে বেড়াতে পারতাম। কিন্তু এর প্রয়োজন রইল না। কারণ আমাদের আছে উন্নত মস্তিষ্ক। আবিষ্কার করেছি উড়োজাহাজ। পাখিদের চেয়েও অনেক উঁচুতে উড়তে পারি, তাই না? উড়োজাহাজ আর পাখির আকাশে ওড়ার কৌশল কিন্তু একই। তবে পাখির মতো উড়োজাহাজ পাখা ঝাপটায় না। মূল কথা হলো, এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, যেন পাখি বা উড়োজাহাজের শরীরকাঠামোর ওপরের অংশের বাতাসের চাপ নিচের অংশের চেয়ে কম থাকে। ওপরের অংশের বাতাসের ঘনত্ব কমিয়ে চাপ…
মাছেরা চলাচলের সময় লেজ আঁঁকাবাঁকা করে চলে, কিন্তু রুই মাছ খুব কমই লেজ নাড়ে। তাহলে এটি চলতে পারে কীভাবে? মাছের চলনের সঙ্গে লেজ নাড়ানোর সম্পর্ক কী? রুই বা অন্য কাঁটাযুক্ত বড় মাছের পেটের দিকে, মেরুদণ্ডের নিচে বায়ুথলি থাকে। মাছ প্রয়োজনমতো সেটা বাতাসে ফুলিয়ে নেয়। এর সাহায্যে সে পানির নিচে ভেসে থাকে। কিন্তু পানির মধ্যে চলাফেরার জন্য তাকে লেজ নাড়াতে হয়। পানির মধ্যে কোন দিকে যাবে, তার ওপর নির্ভর করে তার লেজ সে কোনো দিকে কম বা বেশি নাড়াবে। রুই মাছ আলাদা কিছু নয়। তবে বড় মাছ বলে সে সামান্য লেজ নাড়িয়েই অনেক দূর যেতে পারে। ছোট মাছের পক্ষে সেটা সম্ভব…
রসুনের অনেক গুণ। এটা রক্তচাপ কমায়। শরীরের ত্বক ভালো রাখে। কারও ঠান্ডা লেগে নাকে পানি ঝরতে থাকলে কিছুক্ষণ এক কোষ রসুনের গন্ধ সরাসরি নাকে নিলে বিরক্তিকর সর্দির যন্ত্রণা কমে যায়। কিন্তু সমস্যা হলো এর গন্ধ খুব তীব্র। পেঁয়াজেও এ রকম সমস্যা আছে, কিন্তু এত তীব্র না। আর তা ছাড়া পেঁয়াজের গন্ধ মুখে বেশিক্ষণ থাকে না। কিন্তু রসুনের গন্ধ আপনাকে সহজে ছাড়বে না। সকালে নাশতার সঙ্গে এক কোষ রসুন খেলেন তো গেলেন। অনেকক্ষণ কারও সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। তীব্র গন্ধে সবাই দূরে সরে যাবে। আর যদি আপনি নিজ হাতে রসুনের খোসা ছাড়িয়ে কোষ বের করেন, তাহলে হাতে–গায়ে গন্ধ লেগে থাকবে।…
মশা কামড় দিলে সেই জায়গাটিতে চুলকায় কেন? প্রশ্নটা খুব সহজ। কিন্তু এর সূত্র ধরে একটু গভীরে গেলে মজার একটা ব্যাপার আমরা জানতে পারব। মশা কামড় দিলে আমাদের ত্বকের স্পর্শানুভূতি মস্তিষ্কে খবর পাঠায় যে কিছু একটা খোঁচা দিচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশ—হাত চলে যাও, দেখো কী হচ্ছে। একটু চুলকে দিলেই হয়তো চলবে। এই হলো ব্যাপার। কিন্তু আসল ব্যাপার একটু অন্য রকম। মশা তো জানে হাত চুলকাতে এলে তো সে রক্ত চুষে নিতে পারবে না। আর তা ছাড়া ত্বক ফুটো করে হুল ফোটানোও কঠিন। তাই প্রথমে সে তার হুল থেকে একধরনের রাসায়নিক পদার্থ বের করে, যা ত্বকের ওই অংশকে কিছুটা তেলতেলে ও নরম…
সব সময় দেখি, ঘোড়া দাঁড়িয়ে থাকে, এমনকি ঘুমায়ও দাঁড়িয়ে। তাই সহজে প্রশ্ন জাগে না। কিন্তু এটা যে সে কথা নয়। এমন বিশাল শরীর নিয়ে ঘোড়া কেন সব সময় দাঁড়িয়ে থাকে? এর সহজ উত্তর হলো, দাঁড়িয়ে থাকলে একটা সুবিধা আছে। কেউ হঠাৎ আক্রমণ করলে চট করে দৌড়ে পালানো যায়। বসে থাকলে সে সুযোগটা কম। তাই ঘোড়া সব সময় দাঁড়িয়ে থাকে। সেটা সেই আদি যুগের কথা। যখন ওরা বনে–জঙ্গলে থাকত। বাঘ–সিংহের ভয় ছিল। এখন শহরে বা গ্রামে সে ভয় নেই। যাক, বুঝলাম সবই। কিন্তু আক্রমণের ভয়ে দাঁড়িয়ে থাকার ব্যাখ্যাটা সহজে কেউ মেনে নেবে না। কারণ আমরা দেখছি গরু তো শুয়ে ঘুমায়। তার…
সাধারণত জন্মের সময় থেকেই তিল থাকে। তবে পরেও হয়। কিন্তু তিল কেন হয়? কারণ তার গঠনপ্রক্রিয়ার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। ত্বকের কোনো ছোট অংশে যদি মেলানোসাইটস নামে পরিচিত ত্বকের কিছু জীবকোষ (সেল) একসঙ্গে দলা পাকিয়ে যায়, তখন তা ছোট গুটলি আকারে ত্বকের ওপর একটু উঁচু হয়ে থাকে। এটাই তিল। মেলানোসাইটস ত্বকের রং নির্ধারণ করে। সেটা সাদা, বাদামি বা কালো হতে পারে। কিন্তু দলা পাকিয়ে গেলে সেই স্বাভাবিক রং থাকে না। মানুষের গায়ের তিল সাধারণত ঘন কালো রঙের হয়। কখনো বাদামি। তবে মুখে ছোট কালো তিল সৌন্দর্য বাড়ায়। এ জন্য ইংরেজিতে বলা হয় বিউটি স্পট। তিলের ভেতরের জীবকোষগুলো একসঙ্গে জমাট বেঁধে থাকে।…