ইলিশ মাছের মতো অধিক কাঁটাযুক্ত মাছে কেন অসংখ্য সূক্ষ্ম কাঁটা থাকে? এদের কাজ কী? হয়তো মাছ খুব চালাক। ওরা জানে, বেশি কাঁটা থাকলে মানুষ রান্না করে খাওয়ার জন্য ধরবে না, কারণ ওদের খাওয়া কঠিন। গলায় কাঁটা লাগার ভয়! তাই ছোট ও সূক্ষ্ম কাঁটাযুক্ত মাছের আত্মরক্ষার এটি একটি চমৎকার উপায় হতে পারে। কিন্তু ইলিশ মাছ তো আর জানে না তাদের কী চমৎকার স্বাদ! রান্না করে খেতে কী মজা! তাই যত কাঁটাই থাকুক না কেন, ইলিশে কারও ভয় নেই। এটা অবশ্য একটা হালকা যুক্তি। আসল কথা হলো, বেশির ভাগ মাছ মেরুদণ্ডী। এদের সে জন্যই কাঁটা থাকে। আমাদের শরীরে যেমন হাড়, তারই ক্ষুদ্র…
Author: Yousuf Parvez
এবার হাড় কাঁপানো শীত পড়েছে। মজার ব্যাপার হলো প্রচণ্ড শীতে মশা উধাও। কেন? শীতের মধ্যে কি মশাদের কিছু না খেলেও চলে? অনেকেই জানি, ইউরোপ–আমেরিকায় বিশেষভাবে শীতকালে মশা থাকে না। মশার কামড়ও তেমন সহ্য করতে হয় না। স্ত্রী মশারা ডিম পাড়ার আগে আমাদের দেহে হুল ফুটিয়ে রক্ত চুষে নেয়। তাদের ডিমের পুষ্টি সাধনের জন্য রক্ত দরকার। কিন্তু শীতকালে এরা বিপদে পড়ে। এর কারণ, এক প্রজাতির মশা ঠান্ডা রক্তের পতঙ্গ। এর অর্থ হলো এদের শরীরের তাপমাত্রা বাইরের আবহাওয়ার তাপমাত্রার সঙ্গে ওঠানামা করে। ২৬–২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এরা বেশ আরামে থাকে। কিন্তু তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে অস্বস্তি বোধ করে। এ…
পুরুষদের চেয়ে নারীদের গড় আয়ু বেশি হয় কেন?এটা ঠিক যে নারীর গড় আয়ু পুরুষের চেয়ে বেশি। এর কারণ হলো যদি তা না হতো, তাহলে হয়তো পৃথিবীতে মানুষের টিকে থাকা কঠিন হতো। বিষয়টা ভালোভাবে বোঝার জন্য আমরা মানব প্রজাতির আদি যুগে ফিরে যাব। সে সময় অনেক প্রতিকূল পরিবেশে বনজঙ্গলে বাঘ–ভাল্লুকের সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হতো। শিশু জন্মের পর হয়তো শিশুর বাবা বা সেই জনগোষ্ঠীর মানুষেরা বন্য প্রাণীর আক্রমণে মারা পড়ত। এ অবস্থায় শিশুর যত্ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব এসে পড়ে মায়ের ওপর। আসলে সেই আদি যুগে সব শিশুকে খাইয়ে–পরিয়ে বড় করার দায়িত্ব অবধারিতভাবে এসে পড়ত মায়ের ওপর। সুতরাং মায়ের…
ধূমকেতু হলো উল্কাবৃষ্টির উৎস। ধূমকেতু সাধারণত বেশ লম্বা উপবৃত্তাকার পথে সূর্যের চারপাশে একবার ঘুরে দূরে চলে যায় এবং আবার হয়তো অনেক বছর পর আসে। সূর্য প্রদক্ষিণের সময় ধূমকেতুর উপাদান উত্তপ্ত হয়ে ধূলিকণার লম্বা লেজের মতো বিস্তৃত হয়। এ সময় কিছু খণ্ড খণ্ড পাথরের টুকরা আকাশে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়ে। সূর্য প্রদক্ষিণের সময় পৃথিবী যদি এই এলাকার মধ্য দিয়ে যায়, তাহলে পাথুরে টুকরাগুলো মাধ্যাকর্ষণ বলের টানে পৃথিবীর দিকে পড়তে থাকে এবং পৃথবীর বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষে জ্বলে ওঠে। তখন মনে হয় আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো জ্বলন্ত উল্কাপিণ্ড পড়ছে। একেই আমরা বলি উল্কাবৃষ্টি। বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়েই সাধারণত উল্কাবৃষ্টি হয়। কারণ, একটি নির্দিষ্ট ধূমকেতু মহাকাশের…
রাস্তার মাঝখানে অথবা পাশে যদি ময়লা–আবর্জনা পড়ে, তাহলে দুর্গন্ধ ছড়ায়। পথিকেরা দুর্গন্ধ পেলে থুতু ফেলে। নাকে দুর্গন্ধ এলে থুতু ফেলি কেন? গন্ধ পেলাম নাকে কিন্তু থুতু ফেললাম মুখ থেকে। এটা আসলেই এটা উল্টাপাল্টা ব্যাপার। নাকের অস্বস্তির প্রতিক্রিয়া কেন নাকের মাধ্যমে প্রকাশ করলাম না, তাই না? এর উত্তরে বলা যায়, কখনো কারও মুখে দুর্গন্ধ হলে তা দূর করার জন্য আমরা থুতু ফেলি। যদিও অবশ্য থুতু ফেলে সেই দুর্গন্ধ দূর হয় না। তা সত্ত্বেও দুর্গন্ধের সঙ্গে থুতু ফেলার একটা পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। এ অবস্থায় রাস্তায় হাঁটার সময় নাকে দুর্গন্ধ এলে অভ্যাসবশত আমরা থুতু ফেলি। অন্যভাবেও আমরা এই অভ্যাসের একটি ব্যাখ্যা দিতে পারি।…
ভূ–উপগ্রহ মাটিতে আছড়ে পড়ার ভয় কিন্তু আছে। তবে তার ফলে যেন কোথাও কোনো বিপর্যয় না ঘটে, সে ব্যবস্থাও আছে। কোনো কৃত্রিম উপগ্রহ (ভূ–উপগ্রহ) যদি কোনো কারণে তার কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে মাটিতে আছড়ে পড়ে, সেটা যেন নিয়ন্ত্রিতভাবে কোথাও পড়ে, যেখানে পড়লে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হবে না, সে রকম ব্যবস্থা করা থাকে। প্রকৃতপক্ষে এ রকম একটি ঘটনা সম্প্রতি ঘটেছেও। মির স্পেস স্টেশনকে নিয়ন্ত্রিতভাবে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এনে ফেলা হয়। আরও বেশ কিছু ভূ–উপগ্রহ বিভিন্ন সময়ে ঘটনাক্রমে কক্ষচ্যুত হলে এভাবে পৃথিবী পৃষ্ঠে ফেলা হয়েছে। প্রশ্ন হলো, কৃত্রিম উপগ্রহগুলোর পতন ঘটে কেন? এর অনেক কারণ আছে। তবে কোনো কারণে যদি এদের কক্ষপথ পরিভ্রমণের…
রংধনু বিশেষত পাহাড়ের ওপর ও বৃষ্টির পর কেন দেখা যায়? বৃষ্টি ছাড়া অন্য সময় নয় কেন? যদি আমরা দুই বন্ধু দুটি পাশাপাশি ভবনের ওপর থেকে রংধনু দেখার চেষ্টা করি, তাহলে কেউ ঝাপসা, কেউ স্পষ্ট আবার কেউ সম্পূর্ণ দেখতে পাই না। আর অবস্থান পরিবর্তন করলে কখনো কখনো রংধনু দেখা যায় না। এসবের কারণ কী? বৃষ্টির পর বায়ুমণ্ডলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানির কণা ভেসে বেড়ায়। আর সূর্যের আলো যখন এই পানির কণার মধ্য দিয়ে যায়, তখন তার রঙের সাতটি রশ্মি বিভিন্ন কোণে প্রতিফলিত ও প্রতিসরিত হয়। পানির কণাগুলো প্রিজমের কাজ করে। এই প্রিজমের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় সূর্যের স্বাভাবিক সাদা রং আর সাদা…
কোনো পদার্থের কেন্দ্রে থাকে প্রোটন ও নিউট্রন এবং এর চারপাশে বিভিন্ন কক্ষপথে ইলেকট্রন ঘোরে। এটা আমরা সবাই জানি। এখন প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, প্রোটন বা নিউট্রন কেন ইলেকট্রনের মতো ঘোরে না? এর কারণ হলো, নিউক্লিয়াসের প্রোটন ও নিউট্রন মৌলিক কণা (এলিমেন্টারি পার্টিকেল) দ্বারা গঠিত। এদের বলা হয় কোয়ার্ক। এরা শক্তিশালী নিউক্লিয়ার ফোর্স বা পারমাণবিক বল দিয়ে বাঁধা থাকে। এই শক্তিই নিউট্রন ও প্রোটনকে শক্ত বন্ধনে আটকে রাখে। সে জন্য তারা সেভাবে ঘুরতে পারে না। কিন্তু ইলেকট্রন এই শক্তির অধিকারী নয়। এরা নিউক্লিয়াসের চারপাশে ঘোরে। তবে ঠিক আক্ষরিক অর্থে কক্ষপথে ঘোরে না। এরা বাস্তবে নিউক্লিয়াসের চারপাশের একধরনের মেঘাচ্ছন্ন অস্বচ্ছ (ক্লাউড) অবস্থায় থাকে।…
তেল ও পানি উভয়েই তরল। অথচ পানি একটি পাত্রে রেখে দিলে বাষ্পীভূত হয়ে উড়ে যায়, কিন্তু তেলের বেলায় সেটা দেখা যায় না। এটাই তো তোমার প্রশ্ন, তাই না? তাহলে আমি বলব কিছু তেল কিন্তু পানির চেয়েও দ্রুত উবে যায়। যেমন পেট্রল। এখন তুমি বলতে পারো, ওটা তো জ্বালানি তেল। আলাদা ব্যাপার। সেটা ঠিক। সয়াবিন, সরিষা বা নারকেল তেল কিন্তু সহজে উবে যায় না। এর কারণ হলো তেলের অণুগুলো নিজেদের মধ্যে একটু বেশি দৃঢ়ভাবে আটকে থাকে। এরা সহজে নিজেদের মধ্যে অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে না। পানির অণুগুলোর মধ্যে সংযুক্তি একটু শিথিল। তাই পানির অণুগুলো বাতাসের সাধারণ তাপমাত্রায় ধীরে ধীরে বাষ্পীভূত হয়ে…
মোবাইল ফোন এখন সর্বব্যাপী। কিন্তু মহাশূন্যে অচল। কেন? সেটা বোঝার জন্য প্রথমে আমাদের বুঝতে হবে মোবাইল ফোন কীভাবে কাজ করে। আমরা দেখেছি ঢাকা বা অন্যান্য শহরে বিভিন্ন উঁচু ভবনের ছাদে মোবাইল ফোন সেল টাওয়ার রয়েছে। এরা মুঠোফোনের সংকেত গ্রহণ করে ও চারপাশে ছড়িয়ে দেয়। যার নম্বরে ফোন করা হয়, তিনি যদি ওই এলাকায় না থাকেন, তাহলে সেই সংকেত অন্যান্য সেল টাওয়ারে যায়। মোবাইল ফোনের সংকেত গ্রহণ ও প্রেরণের জন্য এভাবে ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন এলাকা কয়েকটি সেলে ভাগ করে দেওয়া হয়। কথা বা তথ্যের সংকেত এক সেল থেকে অন্য সেলে যায়। এ জন্যই মোবাইল ফোনের আনুষ্ঠানিক নাম সেলফোন। মহাকাশচারীদের পক্ষে কোনো স্পেসস্টেশন…
ছারপোকার যন্ত্রণা এমনকি বিলাত–আমেরিকার মতো দেশেও আছে। আমাদের দেশে তো বটেই, এমনকি উন্নত দেশগুলোর হোটেলের বিছানায়ও ছারপোকা থাকে। সোফায় বসবেন, কুট কুট করে কামড়াবে। এই সর্বব্যাপী সমস্যা নিয়ে মাঝেমধ্যে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেখা যায়। কিন্তু কেউ উল্লেখযোগ্য সমাধান দিতে পারে না। ছারপোকা কেন দমন করা যায় না? এর অন্যতম একটি কারণ হলো, এরা খুব সহজেই কীটনাশক–সহনীয় হয়ে উঠতে পারে। বাসে, ট্রেনে এমনকি অ্যারোপ্লেনের আসনগুলোতে ছারপোকা থাকতে পারে। দীর্ঘ পথে ভ্রমণের পর বাসায় যখন যাবেন, ছারপোকাও যাবে। এরা বালিশের কোনায় বা বিছানার নিচে ঘাপটি মেরে থাকে। ঘুমিয়ে পড়লে বেরিয়ে এসে আমাদের রক্ত চোষা শুরু করে। ডিডিটির মতো বিষাক্ত পাউডারে হয়তো এরা মারা…
শূন্যস্থানে সময় আলোর ওপর প্রভাব ফেলে কি না, এর চেয়ে বরং আমরা প্রশ্নটি করতে পারি, আলোর গতি সময়কে প্রভাবিত করে কি না। দুটি প্রশ্নের বিষয়বস্তু অবশ্য একই। আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাতত্ত্ব বা থিওরি অব রিলেটিভিটি অনুযায়ী শূন্যস্থানের মধ্য দিয়ে আলো সব সময় এই গতিতে চলে। সেটা সেকেন্ডে প্রায় ৩ লাখ কিলোমিটার বা ১ লাখ ৮৬ হাজার মাইল। এটাই পরম গতি, এর চেয়ে বেশি গতি সম্ভব নয়। কোনো বস্তু যদি আলোর গতির কাছাকাছি গতিতে চলতে থাকে, তাহলে সময় প্রভাবিত হবে। সেই ভীষণ গতিশীল বস্তুর ভেতরে যদি তুমি থাকো, তাহলে তোমার ঘড়ি ধীরে চলবে। একে ‘টাইম ডায়ালেশন’ বলে। তুমি যদি আলোর কাছাকাছি গতিতে মহাশূন্যে…
ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে স্পেসস্টেশনে নভোচারীদের ভিডিও দেখা যায়। এখন পর্যন্ত এই ইন্টারনেটের গতি খুব ধীর। ইন্টারনেট সংযোগের জন্য রয়েছে বিশেষ নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্ক তথ্যের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও পরিচালনের কাজে নিয়োজিত স্যাটেলাইটের মাধ্যমে কাজ করে। তথ্য আদান–প্রদানের এই একই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে নাসা স্পেসস্টেশনের নভোচারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। মাত্র পাঁচ বছর আগে নভোচারীদের ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা অনুমোদন করা হয়। নাসা মনে করে, মহাশূন্যে নভোচারীদের একাকিত্ব দূর করা ও জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য সৃষ্টির জন্য এর প্রয়োজন আছে। এখন নভোচারীরা স্পেসস্টেশনে ল্যাপটপও ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো এই যুগেও কেন মহাকাশে ইন্টারনেট ধীরগতিতে চলে? কেন ভূপৃষ্ঠে প্রচলিত ব্রডব্যান্ডের মতো বেশি গতিতে চলে…
সৌর প্যানেলের কাজ হলো সূর্যের আলোর শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। এ জন্য প্যানেলে রাখা হয় অনেক ফটো ভোল্টাইক সেল। ফটো ভোল্টাইকের অর্থ হলো সূর্যরশ্মি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের এক বিশেষ ধরনের ব্যবস্থা। এরা সূর্যরশ্মির ফোটন ব্যবহার করে সিলিকন সেলের ইলেকট্রনগুলোকে আলোড়িত করে। এর ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। কিন্তু সেই বিদ্যুৎ যদি রাতে ব্যবহার করতে চাই, তাহলে তা সঞ্চয় করে রাখার একটি ব্যবস্থা দরকার। ব্যাটারির সাহায্যে সেটা করা হয়। যেমন আইপিএসের ব্যাটারি আমরা বাসার বিদ্যুৎ দিয়ে চার্জ করে রাখি, হঠাৎ বিদ্যুৎ কোনো কারণে চলে গেলে আইপিএসে সঞ্চিত বিদ্যুৎ ব্যবহার করি। সৌরবিদ্যুতের ক্ষেত্রেও প্রায় সে রকম ব্যবস্থাই করা হয়। সূর্যের…
মহাকাশে কি ক্ষতিকর রশ্মি (আলফা, গামা, বিটা) ছড়িয়ে রয়েছে? আমাদের সূর্যের ভেতর অনবরত হাইড্রোজেন বিস্ফোরণ ঘটছে। সেখানে সেকেন্ডে প্রায় ৬০ কোটি টন হাইড্রোজেন পুড়ছে। তাহলে বুঝতেই পারছ মহাশূন্যে কী পরিমাণ রশ্মি ছড়িয়ে পড়ছে। এগুলোকে কসমিক রে বা মহাজাগতিক রশ্মি বলে। এখন প্রশ্ন হলো এগুলো আমাদের জন্য ক্ষতিকর কি না। অবশ্যই ক্ষতিকর। কিন্তু সূর্য তো আমাদের থেকে ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল দূরে। তাই এর ক্ষতি সাধনের ক্ষমতা বেশ কমে যায়। আলফা, বিটা, গামা সব ধরনের রশ্মিই মহাকাশে ছড়িয়ে রয়েছে। তবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে আসে বলে সব সময় এই সব রশ্মি আমাদের ক্ষতি করতে পারে না। আর মহাশূন্যে তো যথেষ্ট…
হাইড্রোজেনের একটি আইসোটোপের নিউক্লিয়াস শুধু প্রোটন দিয়েই তৈরি, যা প্রকৃতিতে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। প্রোটন ধনাত্মক। এর সঙ্গে ইলেকট্রন ঋনাত্মক হওয়ায় এদের তীব্র আকর্ষণে আর পরমাণুটি থাকার কথা নয়। যদি এই হাইড্রোজেন অণুকে ভেঙে পরমাণুতে আনা হয়, তাহলে এর অস্তিত্ব থাকবে কি? তোমার প্রশ্নের উত্তর দিতে একটু ভাবতে হয়। কারণ প্রোটন ধনাত্মক ও ইলেকট্রন ঋণাত্মক চার্জযুক্ত হওয়ার ফলে একে অপরকে আকর্ষণ করারই কথা এবং এর ফলে পরমাণুটিরই থাকার কথা নয়। এটা শুধু হাইড্রোজেন কেন, অন্য সব মৌলিক পদার্থের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। অথচ আমরা তো দেখছি পরমাণু ভেঙেচুরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে না। তাহলে পদার্থের অস্তিত্ব কীভাবে টিকে থাকছে? প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। এর…
মহাকাশে যাওয়া আর মহাকাশ নিয়ে গবেষণা করা দুটো ভিন্ন ব্যাপার। মহাকাশে যেতে হলে কী পড়তে হবে, সেটা বড় নয়, বরং বাংলাদেশ থেকে মহাকাশচারী হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু, সেটা বিচার্য। এই মুহূর্তে মহাকাশে যেতে হলে রুশ বা মার্কিন নাগরিকদের অগ্রাধিকার বেশি, কারণ তাদের দেশের প্রোগ্রাম অনুযায়ী মানুষ মহাকাশে যাচ্ছে। তবে জাপান, ইউরোপের কয়েকটি দেশ থেকেও কিছু মহাকাশচারী আছে, কারণ ওই দেশগুলো আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের কাজে অংশগ্রহণ করে এবং সেটার খরচ বহন করে। বাংলাদেশ আপাতত এই প্রোগ্রামের অংশ নয়। যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার জন্য গিয়ে সেখানকার নাগরিকত্ব গ্রহণ করে মহাকাশচারী হওয়ার চেষ্টা করা যেতে পারে, পথটি অসম্ভব নয়, তবে বর্তমান রাজনৈতিক আবহাওয়ায় এর সম্ভাবনা আগের…
প্রতিদিনই রাস্তায় হরেক রকম গাড়ির দেখা মেলে। আকার আকৃতি বা বর্ণে সেসবে থাকে নানা বৈচিত্র্য। যে কোনো গাড়ি বা যানবাহনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় অংশ হচ্ছে এর চাকা। প্রায় সব গাড়ির চাকা তৈরি হয় রাবারের টায়ার ব্যবহার করে। গাড়ি যেমনই হোক, টায়ারের রঙটা কিন্তু সবসময় কালো হয়। কালো রঙের টায়ার তৈরির পিছনে আসলে কারণ কী? রাবারের প্রাকৃতিক রঙ হচ্ছে দুধসাদা। প্রথম দিককার টায়ারগুলো সাদা রঙেরই হতো। পরে এর স্থায়ীত্ব এবং কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তাতে কার্বন ব্ল্যাক মিশিয়ে টায়ার তৈরি শুরু হয়। কার্বন ব্ল্যাক হচ্ছে তেল বা গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানীর উপজাত। স্ট্যাবিলাইজিং পদার্থ হিসেবে এর পরিচিতি আছে। এটা অন্যন্য পলিমারের সাথে যুক্ত…
যদি HCL+NaOH = H2O + NaCl হয়, তাহলে H2O + NaCl = HCL+NaOH হয় না কেন? পানিতে NaCl (খাবার লবণ) যোগ করলে এটি আয়নিত হয়ে সোডিয়াম আয়ন (Na+) ও ক্লোরাইড আয়ন (Cl-) হিসেবে পানিতে ছড়িয়ে পড়ে। কারণ, NaCl একটিসর্ম্পূণ আয়নিক যৌগ এবং পানি (H2O) একটি উত্কৃষ্ট পোলার দ্রবক। ফলে পানির ঋণাত্মক মেরু অক্সিজেন (Oδ-) কর্তৃক সোডিয়াম আয়ন (Na+) আকৃষ্ট হয় এবং পানির ধনাত্মক মেরু হাইড্রোজেন (Hδ+) কর্তৃক ক্লোরাইড আয়ন (Cl-) আকৃষ্ট হয়ে NaCl পৃথক হয়ে পড়ে। Na+ ও Cl- এর চারপাশে হাইড্রেশন স্তর সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ NaCl পানির সঙ্গে বিক্রিয়া করে নতুন পদার্থ HCL ও NaOH হওয়ার সুযোগ পায় না। NaCl পানিতে…
চাঁদের নিজের আলো নেই। সূর্যের আলো চাঁদের গায়ে প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে যখন আসে তখন আমরা চাঁদকে দেখতে পাই। দিনের বেলা আমাদের আকাশে সূর্যের তীব্র আলোর কারণে চাঁদ দেখা যায় না। চাঁদের একদিন (অর্থাৎ চাঁদ নিজের অক্ষের ওপর একবার ঘুরতে যে সময় নেয়) পৃথিবীর প্রায় এক মাসের সমান। পৃথিবী থেকে যখন চাঁদ দেখি – চাঁদের কিছু অংশ প্রতিদিন সরে যায় আমাদের চোখের সামনে থেকে। পৃথিবীর যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা চাঁদ দেখছি, সেখান থেকে চাঁদের যে আলোকিত অংশটি দেখতে পাই সেটাকেই সেই সময়ের চাঁদের একটা নির্দিষ্ট তিথি বলছি। চাঁদ দেখা তাই চাঁদ, পৃথিবী ও সুর্যের পারস্পরিক অবস্থানের উপর নির্ভরশীল। চাঁদ যখন…
আমরা জানি মহাবিশ্বে অক্সিজেন নেই এবং অক্সিজেন ছাড়া আগুন জ্বলে না। তাহলে সূর্য কীভাবে জ্বলে? আগুন হলো জ্বালানির সাথে অক্সিজেনের রাসায়নিক বিক্রিয়া। অক্সিজেনের অভাবে আগুন জ্বলে না। কিন্তু আগুন যখন জ্বলে তখন রাসায়নিক অণুর পরিবর্তন ঘটে কিন্তু পরমাণুর মৌলিক পরিবর্তন ঘটে না। কিন্তু সূর্যে যা ঘটে তা সাধারণ অর্থে আগুন জ্বলার মত রাসায়নিক বিক্রিয়া নয়। সূর্যে পারমাণবিক বিক্রিয়া ঘটে। সূর্যসহ সব নক্ষত্র নিজের শক্তি নিজে তৈরি করে। নিউক্লিয়ার ফিউশনের মাধ্যমেই এই শক্তি উৎপন্ন হয়। নিউক্লিয়ার ফিউশনে দুইটি হাইড্রোজেন পরমাণু যোগ হয়ে একটা হিলিয়াম পরমাণুর সৃষ্টি হয় এবং কিছু শক্তির সৃষ্টি হয়। এরকম কোটি কোটি হাইড্রোজেন পরমাণু একই সঙ্গে হিলিয়াম পরমাণুতে…
সকালে ঘুম থেকে ওঠা এতই স্বাভাবিক ব্যাপার যে এটা নিয়ে সাধারণত প্রশ্ন দেখা দেয় না। আদিমকাল থেকেই মানুষ সূর্যাস্তের পর রাতে ঘুমিয়ে পড়ে আর ঘুম ভাঙে সকালে সূর্যোদয়ের পর। আদিম যুগে সন্ধ্যার পর অন্ধকার গুহায় ঘুমানো ছাড়া মানুষের আর কিছু করার ছিল না। আবার সকালে ঘুম থেকে জেগে শিকারে না বেরোলে খাবার জুটবে না, তাই সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ঘুম থেকে উঠতে হতো। মনে হয়, এটা মানুষের অভ্যাস হয়ে গেছে। সেটা তো আছেই, কিন্তু আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য মস্তিষ্কের ওপর আলোর ক্রিয়া–প্রতিক্রিয়ার বিষয়টিও মনে রাখতে হবে। ঘুম নিয়ন্ত্রণে মস্তিষ্কে কিছু রাসায়নিক প্রক্রিয়া প্রভাব ফেলে। কয়েক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব…
দুপুরে খাওয়ার পর যদি বেশি ক্লান্তিবোধ না হতো, তাহলে তো দিবানিদ্রার আনন্দটাই আমরা পেতাম না, তাই না? অবশ্য এই ক্লান্তিবোধের একটি বিজ্ঞানসম্মত কারণ আছে। সাধারণত আমরা দুপুরের খাবারটা একটু বেশিই খাই। তখন মস্তিষ্কে খবর যায় যে পেটে প্রচুর খাবার। সে তখন হুকুম দেয়, সব রক্ত পেটের দিকে চলে যাও, কারণ খাবার পরিপাকের সময় পুষ্টি সংগ্রহ করতে হবে। কাজটা করবে রক্ত। এ কারণে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ–প্রত্যঙ্গে, বিশেষ করে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ কমে যায়। মস্তিষ্ক দেখে মহাবিপদ। রক্তপ্রবাহ ছাড়া বেশি কাজ তো করা যায় না। তখন মস্তিষ্ক দ্বিতীয় হুকুম দেয়, কিছুক্ষণ ঘুমাও, কাজ করার দরকার নেই। আগে শরীরে পুষ্টি দরকার! তাহলে বুঝতেই…
গাছ মাটি ছাড়া বেঁচে থাকতে পারে? গাছের বেঁচে থাকার জন্য মাটি অপরিহার্য। কারণ গাছের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান নাইট্রোজেন ও লবণ মাটি থেকেই আসে। যদিও বায়ুমণ্ডলের ৭৮ শতাংশই নাইট্রোজেন। কিন্তু গাছ সরাসরি এই নাইট্রোজেন গ্রহণ করতে পারে না। বরং মাটিতে থাকা নাইট্রোজেন খনিজ আকারে গ্রহণ করে। যদি তর্কের খাতিরে কিছু সময়ের জন্য ধরেও নিই, মাটি ছাড়া গাছের বেঁচে থাকা সম্ভব, কিন্তু তাতেও গাছের বৃদ্ধি সম্ভব নয়। তবে কিছু গাছ আছে, যেগুলোর পক্ষে মাটি ছাড়া বেঁচে থাকা ও বৃদ্ধি দুটিই সম্ভব। অনেকেই ঘরের টেবিলে মানি প্ল্যান্ট রাখেন। একটা পাত্রে পানি রেখে তাতে রাখলে দিব্যি বেঁচে থাকে এই শোভাবর্ধক উদ্ভিদটি। অবশ্য মানি প্ল্যান্ট…