মানুষের রক্ত স্বাভাবিক অবস্থায় লাল। রক্তের হিমোগ্লোবিনের রং লাল বলে রক্ত লাল। হিমোগ্লোবিনের প্রোটিনের উপাদানগুলোর একটি হলো হিমস (hemes)। এরা আয়রন পরমাণুর সঙ্গে যুক্ত হয় এবং তখন সে নিজের সঙ্গে অক্সিজেন যুক্ত করে। আয়রন ও অক্সিজেনের সঙ্গে ক্রিয়া–প্রতিক্রিয়ায় রক্ত লাল রং ধারণ করে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। রক্তে যত বেশি অক্সিজেন থাকে, তত বেশি লাল হয়। হার্ট থেকে বেরিয়ে ধমনির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় রক্ত সবচেয়ে বেশি লাল থাকে। কিন্তু যখন দেহকোষে অক্সিজেন দিয়ে কার্বন ডাই–অক্সাইডসমৃদ্ধ রক্ত শিরার মধ্য দিয়ে অক্সিজেন গ্রহণের জন্য ফুসফুসে ফিরে আসে, তখন ত্বকের ভেতরের রক্ত অনেকটা নীলচে দেখায়। মানুষের রক্ত…
Author: Yousuf Parvez
পৃথিবীর কেন্দ্রে মাধ্যাকর্ষণজনিত ত্বরণ ‘g’–এর মান শূন্য—এটা তোমার প্রশ্নের মধ্যেই উল্লেখ করেছ। এখন তোমার আসল প্রশ্ন হলো, কীভাবে শূন্য হয়, এটা তো অসংজ্ঞায়িত হওয়ার কথা। কারণ, গাণিতিক সূত্র অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে g = 0/0 = অসংজ্ঞায়িত। এই যুক্তির পেছনে কিছু বাস্তবতা আছে। তবে এটা অন্যভাবে দেখতে হবে। প্রথমে আমরা দেখব, শূন্য বলা হয় কেন। আসলে কোনো বস্তু যদি পৃথিবীর কেন্দ্রে অবস্থান করে, তাহলে তার ওপর পৃথিবীর চারপাশের ভর তাকে সমভাবে টানবে এবং এর ফলে একে অপরকে নাকচ করবে। ফলে ওই বস্তুর ওপর মাধ্যাকর্ষণ বল শূন্য হয়ে যাবে। তাহলে কি বলব এখানে মহাকর্ষ বলের সূত্র কাজ করে না? আসলে নিউটনের মহাকর্ষ…
সাধারণ অভিজ্ঞতায় দেখেছি, নতুন কম্পিউটারে গতি বেশ দ্রুত থাকে। কিন্তু কিছুদিন পর গতি কমতে থাকে। পুরোনো সব যন্ত্রপাতিরই গতি কমে যায়, এটা আমরা জানি। বেশি দিন চলার কারণে কলকবজা তো ক্ষয় হবেই। তাই তার কাজের গতি কমে যাওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু কম্পিউটারের গতি কমার অন্য আরও কিছু কারণ রয়েছে। কম্পিউটারের কাজের গতি মূলত নির্ভর করে সিপিইউ বা সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিটের ওপর। এর র্যাম (র্যানডম অ্যাকসেস মেমোরি), ভেতরের হার্ডডিস্ক মেমোরি কার্ড, এর গ্রাফিকস সিস্টেম, ইন্টারন্যাল হার্ডওয়্যার সিস্টেমের গতি ও সক্ষমতা—এই সবকিছু কম্পিউটারের গতি নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। এখন ধরা যাক কম্পিউটারে আমি কাজ করার সময় হার্ডওয়্যারে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত তথ্য রাখলাম। বিভিন্ন কাজের জন্য…
আমরা ওয়াইফাই সব সময় ব্যবহার করি। লাইফাই সে রকমই একটা প্রযুক্তি। এর সুবিধা যেমন আছে, তেমনি আবার কিছু অসুবিধাও আছে। ওয়াইফাই হচ্ছে রেডিও ওয়েভ সিগন্যাল ব্যবহার করে লোকাল নেটওয়ার্কে সংযোগ সাধন বা ইন্টারনেট সংযোগ সাধনের একটি ব্যবস্থা। একটি মডেমের মাধ্যমে এই যোগাযোগ করা হয়। ওয়াইফাই শব্দটি হলো ওয়্যারলেস ফিডালিটির সংক্ষিপ্ত রূপ। এটা তারের সংযোগবিহীন রেডিও সংকেতের মাধ্যমে শব্দ গ্রহণ, ধারণ ও প্রেরণের উচ্চমানের দক্ষতাসম্পন্ন প্রযুক্তি। এখন ওয়াইফাইয়ের কাজ লাইফাইয়ের মাধ্যমে করার একটি নতুন প্রযুক্তি চালু হয়েছে। এটা রেডিও সিগন্যাল ব্যবহার না করে লাইট বা আলোর মাধ্যমে সংকেত আদান–প্রদান করে। লাইফাই মানে লাইট ফিডালিটি। এলইডি লাইটের মাধ্যমে এই প্রযুক্তি সংকেত আদান-প্রদান…
যেকোনো কঠিন পদার্থের অণুগুলো তরল পদার্থের অণুগুলোর চেয়ে বেশি ঘনভাবে সন্নিবেশিত থাকে। ফলে কঠিন পদার্থের মধ্য দিয়ে শব্দ দ্রুত যেতে পারে। কারণ, শব্দ তরঙ্গ কঠিন পদার্থে একটি অণুকে ধাক্কা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটা পাশের অণুকে ধাক্কা দেয়, এরপর সেটা আবার পাশের অণুকে ধাক্কা দেয়। এইভাবে শব্দ তরঙ্গ খুব দ্রুত চলতে থাকে। কিন্তু তরল বা গ্যাসীয় পদার্থের অণুগুলো একটু দূরে দূরে ছড়িয়ে থাকে। তাই এসব পদার্থের মধ্য দিয়ে শব্দ তরঙ্গ যেতে বেশি সময় নেয়। কঠিন পদার্থের চেয়ে তরল পদার্থের অণুগুলোর ঘনত্ব কম এবং তরলের চেয়ে গ্যাসীয় পদার্থের অণুগুলোর ঘনত্ব আরও কম। তাই গ্যাসীয় পদার্থের চেয়ে তরল পদার্থের মধ্য দিয়ে শব্দ দ্রুতগতিতে…
একটি চিল মাত্র দু–তিনবার পাখা নেড়ে আকাশে অনেকক্ষণ ধরে ভেসে বেড়ায়, কিন্তু চড়ুই পাখি আকাশে ওড়ার সময় বারবার পাখা নাড়ায়। কেন? এই প্রশ্ন ওঠা খুব স্বাভাবিক। এর সহজ উত্তর হলো, চিলের পাখাগুলো ছোট্ট পাখি চড়ুইয়ের চেয়ে অনেক বড়। চিলের সুবিধা হলো সে তার বড় পাখার ঝাপটায় বেশি বাতাস নিচের দিকে ঠেলে দিতে পারে। একই সঙ্গে বুকের সামনের দিকের অংশে বাতাসের চাপ বেশি সহজে নিতে পারে বলে সহজে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। এই অবস্থায় বাতাস দ্রুত পাখার ওপর দিয়ে চলে যায়। এর ফলে তার শরীরের ওপরের দিকের অংশে বাতাসের ঘনত্ব নিচের অংশের তুলনায় কমে যায় এবং ওপরমুখী চাপ বাড়ে। এটা…
আমরা সাধারণত সঠিকভাবে শ্বাস–প্রশ্বাস গ্রহণ করি না। প্রায়ই নাক বা মুখ দিয়ে সামান্য বাতাস টেনে নিয়ে ছেড়ে দিই। এর ফলে রক্তে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। কারণ, আমাদের শ্বাস গ্রহণের সঙ্গে বাতাসের মাধ্যমে অক্সিজেন ফুসফুসে যায় এবং সেখান থেকে রক্ত অক্সিজেন নিয়ে শরীরের চাহিদা মেটায়। বেঁচে থাকার জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন দরকার। বিশেষভাবে করোনাভাইরাস প্রথমেই শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়। তখন ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহে ঘাটতি থাকলে মহাবিপদ। এই অবস্থায় উপুড় হয়ে শুয়ে বুক ভরে শ্বাস নিতে হয়। একে বলে প্রোনিং। প্রোন পজিশনে শ্বাস নেওয়ার ব্যায়াম করলে অক্সিজেনের ঘাটতির আশঙ্কা অনেক কমে যায়। অন্তত করোনার এই দুঃসময়ে সবার প্রতিদিন ১৫ থেকে ৩০ মিনিট ব্যায়াম…
মারাত্মক অসুস্থতার জন্য অনেক সময় রক্তে অক্সিজেনর পরিমাণ কমে যায়। এটাই ডাক্তারি ভাষায় হাইপক্সিয়া। এর ফলে শ্বাসকষ্ট হয়। সাধারণত এর চিকিৎসা হিসেবে রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। অনেক সময় রোগীর মৃত্যুও ঘটে। করোনাভাইরাসের প্রধান সমস্যা হলো শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ। এ অবস্থায় ফুসফুস ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। রক্ত অক্সিজেন পায় না। এর ফলে দেহের হাত–পা এবং বিশেষভাবে মস্তিষ্ক অক্সিজেনের অভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এ রকম চরম অবস্থায় রোগী হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। জরুরি চিকিৎসার দরকার হয়। দ্রুত অক্সিজেন দিতে হয়। নাহলে মৃত্যু অবধারিত। অনেক সময় করোনার রোগী কিন্তু বুঝতেই পারে না যে সামনে তার এত বড় বিপদ। রক্তে অক্সিজেন স্বল্পতার বিষয়টি…
ধরুন, আমি জানালার কাচের সামনে দাঁড়ালাম। কী দেখছি? বাইরে একচিলতে সবুজ। ফুলবাগান। আর ওপরে নীল আকাশ। হালকা মেঘ। সব স্বচ্ছ। ঝকঝকে, সুন্দর, তা–ই নয়? এবার ঘরে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে আয়নার দিকে তাকাই। সামনে নিজেকেই দেখছি। সুন্দর ফুটফুটে, হাসিমুখ। আয়নার কাচ ভেদ করে পেছনের কিছুই কিন্তু দেখছি না। এই হলো তফাত। জানালার সাধারণ কাচ এতই স্বচ্ছ যে এর ভেতর দিয়ে বাইরের সবকিছু পরিষ্কার দেখা যায়। আর আয়নার কাচে সবকিছু প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসে। এখন খটকা লাগছে, জানালার কাচ আর আয়নার কাচ কি একই বস্তু, নাকি আলাদা? এখানেই হলো প্রশ্নের অভিনবত্ব। দুটিই যখন কাচের তৈরি, নিশ্চয়ই একই হবে। তাহলে প্রশ্ন, যদি…
ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে একটি বড় পার্থক্য হলো ভাইরাস নিষ্প্রাণ, কিন্তু ব্যাকটেরিয়া জীবিত। এখন প্রশ্ন হলো ভাইরাস নিষ্প্রাণ পদার্থ হয়েও মানুষের শরীরে ঢুকে এত বড় ঝুঁকি সৃষ্টি করে কীভাবে? ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসাও কঠিন। অথচ অনেক ব্যাকটেরিয়া মানুষের জীবনের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে বটে, কিন্তু চিকিৎসা আছে; তাদের চিহ্নিত করে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে নিষ্ক্রিয় করা সহজ। আবার সব ব্যাকটেরিয়াই কিন্তু মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর নয়। উপকারী ব্যাকটেরিয়াও আছে। ভাইরাস হলো বিভিন্ন অণুর জটিল সমাবেশ। এদের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন, নিউক্লিক অ্যাসিড, লিপিড, কার্বোহাইড্রেট প্রভৃতি। কিন্তু এরা নিজেরা কিছুই করতে পারে না। কেবল কোনো জীবন্ত কোষে ঢুকতে পারলেই এরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এ ছাড়া…
সাঁতার জানা মানেই হাত-পা নাড়িয়ে ভেসে থাকার কৌশল আয়ত্ত করা। ভালো সাঁতারু কিন্তু হাত-পা অথবা শরীরের অন্যান্য অংশ সামান্য নাড়িয়ে ভেসে থাকার কৌশল আয়ত্ত করতে পারে। তখন মনে হয় আপনাআপনিই ভেসে রয়েছেন। আসলে কিন্তু পানিতে ভারসাম্য রক্ষা করছেন এমনভাবে যে বাইরের কেউ সেটা বুঝতে পারছেন না। আরেকটি ব্যাপার আছে। আমাদের শরীরের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ পানি। তাই পানিতে পানির শরীর সহজেই ভেসে থাকতে পারবে। তবে সে জন্য বুকভরে শ্বাস নিয়ে আটকে রাখলে বেশ কয়েক মিনিট সহজে ভেসে থাকা যায়। তবে এর কায়দা শিখতে অনেক অনুশীলন দরকার। তাই পানিতে ভেসে থাকাটা খুব কঠিন কিছু নয়, শুধু অনুশীলনের মাধ্যমে শিখতে হবে, হাত-পা কীভাবে নাড়ালে…
সূর্যের ভরের উপর নির্ভর করে এর তাপমাত্রা, রং এবং ব্যাসার্ধ। বড় নক্ষত্রগুলো সূর্যের তুলনায় বেশি উত্তপ্ত এবং রং নীলাভ হয়। আর ছোটগুলো হয় কিছুটা কম উতপ্ত আর লালচে রঙের। সূর্যের অবস্থান মাঝামাঝি। এ কারণে এর প্রকৃত রং সাদাটে হলুদ। লাল বামন নক্ষত্রের চারপাশে খুব সামান্য এলাকাজুড়ে থাকে হ্যবিটেবল জোন বা বাসযোগ্য স্থান। যেখানে গ্রহের পৃষ্ঠে পানি তরল অবস্থায় থাকতে পারে। পৃথিবীর সূর্যের বাসযোগ্য অঞ্চলের মধ্য অবস্থিত। শুক্রগ্রহ একটু বেশি কাছে। অন্যদিকে মঙ্গলগ্রহ এই বাসযোগ্য স্থানের শেষ প্রান্তে অবস্থিত। সূর্যের ভর এর অর্ধেক হলে, বাসযোগ্য অঞ্চল হতো সূর্যের আরও কাছে। সেক্ষেত্রে পৃথিবী যদি বর্তমান কক্ষপথেই থাকতো, তাহলে তাপের অভাবে পৃথিবী…
আমাদের দেশে সাধারণত বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ এবং আশ্বিন-কার্তিকে ঝড়বৃষ্টির সময় বিদ্যুৎ চমকায় বেশি এবং বজ্রপাত ভয়াবহ আকারে হয়। প্রতিবছর বজ্রপাতে অনেক মানুষ মারা যায়। কিন্তু স্থলভাগের চেয়ে সমুদ্রবক্ষে বজ্র-বিদ্যুৎ বেশি তীব্র হয়। সাগরে বিদ্যুতের আলোর ঝলকানি চোখধাঁধানো। আবার বজ্রপাতের প্রতাপও মারাত্মক। কেন এত পার্থক্য? এ নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। সম্প্রতি এর একটি কারণ জানা গেছে। এ বিষয়ে স্মিথসোনিয়ানম্যাগ ডটকমে (১৪ জানুয়ারি ২০২১) একটি বিস্তৃত লেখা ছাপা হয়েছে। লেখাটি হেকাইম্যাগাজিন ডটকমে প্রকাশিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। বিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা গেছে, মহাসাগরে বজ্রপাতের সময় যে বিদ্যুতের ঝলক সৃষ্টি হয়, তা স্থলভাগের বিদ্যুতের চেয়ে ১০০ থেকে ১০০০ গুণ বেশি উজ্জ্বল ও শক্তিশালী। একে বলা…
আমাদের হাত ও পায়ের আঙুলের নখ বড় হতে শুরু করে নখের গোড়া থেকে। নখের গোড়ার কিছু অংশ ত্বকের ভেতরে থাকে। সেখানে নখের নতুন কোষ (সেল) তৈরি হয়। নখের এই নতুন কোষগুলো পুরোনো সেলগুলোকে সামনে ঠেলে দেয়। পুরোনো সেলগুলো তখন কেরাপিন নামের প্রোটিন তৈরি করে একটু ঘন ও শক্ত হয়। কিন্তু নখের গোড়ার নতুন সেলগুলো পুরোনো নখের সামনের দিকের অংশকে ঠেলে বাইরে নিয়ে যায় এবং গোড়ার অংশ নখের নিচের আবরণ থেকে বেরিয়ে সামনের দিকে বাড়তে থাকে। এভাবে নখ বড় হয়ে আঙুলের বাইরে বেরিয়ে আসে। আমাদের আঙুলের নখ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। হাতের আঙুলের নখ মূলত কোনো জিনিস চিমটি দিয়ে ধরতে পারে।…
আপনি 241543903 সংখ্যাটি সার্চ দিলে দেখবেন একটি ফ্রিজের ছবি, ডালা খোলা, ভেতরে এক নারী মাথা নিচু করে ঢুকিয়ে রেখেছেন। পাশাপাশি এ ধরনের আরও কিছু ডালা খোলা ফ্রিজের ছবি, ভেতরে কোনো ব্যক্তি মাথা গুঁজে রয়েছেন। এর অর্থ কী? এর পেছনে একটি মজার গল্প রয়েছে। নিউইয়র্কের চিত্রশিল্পী ডেভিড হরভিজ তাঁর ব্লগে বিভিন্ন পরামর্শ দিতেন। একবার তাঁর বান্ধবী অসুস্থতার জন্য পরামর্শ চাইলে তিনি তাঁকে ফ্রিজের ডালা খুলে মাথা ঢুকিয়ে রাখতে বলেন। এই পোস্টের পাশে তিনি তাঁর নিজের ফ্রিজে রাখা বিভিন্ন দ্রব্যের বারকোড ও সিরিয়াল নম্বরের তালিকা থেকে একটি নম্বর তৈরি করে লিখে রাখেন। অন্যরাও এই পোস্টের পরামর্শ অনুসরণ করেন। বিশেষভাবে ব্রাজিলে এটা ইন্টারনেটের…
প্লাস্টিক টেরেফথালেট (terephthalate) নামের পলিইথিলিনে তৈরি। এই রাসায়নিক উপাদানের গঠন খুব মজবুত ও হালকা। এ জন্য শপিং ব্যাগ বা কেনাকাটায় জিনিসপত্র প্যাকেট করার কাজে খুব বেশি ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের প্লাস্টিকের গাঁথুনি এতই শক্ত যে সহজে নষ্ট হয় না। হয়তো ছিঁড়ে যায়, কিন্তু মাটির সঙ্গে মিশে যায় না। প্লাস্টিক বর্জ্য মাটিতে অবিকৃত থাকে, নদী ও খালবিলের পানি, এমনকি সমুদ্রের পানিতে ভেসে বেড়ায়। ফলে পানিদূষণ ঘটে। প্লাস্টিক বর্জ্যে ড্রেনের পানি আটকে যায়। বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। প্রশ্ন হলো, প্লাস্টিক কেন সহজে নষ্ট হয় না? এর প্রধান কারণ হলো, বেশির ভাগ ব্যাকটেরিয়া প্লাস্টিকের উপাদান ভেদ করে ভেতরে ঢুকতে পারে না, ফলে…
মঙ্গল গ্রহে কখনো পানি ছিল কি না, সে বিষয়ে বিজ্ঞানীরা আগে নিশ্চিত ছিলেন না। এখন সবাই প্রায় নিশ্চিত যে একসময় সেখানে নদী, হ্রদ, সমুদ্র—সবই ছিল। প্রচুর পানি ছিল। কিন্তু এখন সেখানে ধূসর মরুভূমি। প্রশ্ন হলো, এত পানি কোথায় গেল? কীভাবে উধাও হলো? বিজ্ঞানীরা বলছেন, ৯৯ শতাংশ পানি মঙ্গলের শিলাস্তরে মিশে আছে। সায়েন্স জার্নালে ২০২১ সালের একটি আর্টিকেলে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ২৩ মার্চ, ২০২১ কেনেথ চ্যাংয়ের একটি বিস্তৃত লেখা প্রকাশিত হয়েছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এর সায়েন্স টাইমসে। লুনার অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্স কনফারেন্স উপলক্ষে একটি সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির প্ল্যানেটরি সায়েন্সের অধ্যাপক এবং প্রকাশিত গবেষণাপত্রের…
মাঝেমধ্যে রোগজীবাণু আক্রমণ করে আমাদের শরীরে। আবার হঠাৎ পড়ে গিয়ে আঘাত লাগে দেহে। এমন পরিস্থিতিতে শরীরের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কিছু রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে। এই রাসায়নিক পদার্থগুলোকে বলা হয় অটোকয়েডস (Autacoids)। দেহে বিভিন্ন ধরনের অটোকয়েড তৈরি হয়। এসব অটোকয়েড নিঃসরিত হলে আঘাতের স্থানে ব্যথা অনুভূত হয়। মাঝেমধ্যে এসব স্থান ফুলেও যায়। কখনো আবার বেড়ে যায় দেহের তাপমাত্রা। এই তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়াকেই আমরা বলি জ্বর। আমাদের মস্তিষ্কে হাইপোথ্যালামাস নামে একটি অংশ আছে। এই অংশের কাজ শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা। রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য শরীর ডাইনোপ্রোস্টন নামে একটি অটোকয়েড নিঃসরণ করে। হাইপোথ্যালামাসে ডাইনোপ্রোস্টনের পরিমাণ বেড়ে গেলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ধরুন, আপনার শরীরে…
ডারপা (DARPA—Defense Advanced Research Projects Agency) যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটা সংস্থা, যাদের কাজ হলো জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ব্রেকথ্রু প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করা। সহজ কথায়, ডারপা এমন সব গবেষণা ফান্ড করে যেগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এই গবেষণাগুলোর অনেকগুলোর মধ্যেই সাইফাই একটা ভাব থাকে। উচ্চাভিলাষী এই প্রজেক্টগুলোর বেশির ভাগই সফলতার মুখ দেখে না। কিন্তু যেগুলো দেখে, সেগুলো প্রায়ই বদলে দেয় পুরো দুনিয়াকে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ইন্টারনেটের কথা। এটা ডারপার এক প্রজেক্টেরই আবিষ্কার। ডারপা ২০১৬ সালের নভেম্বরে ইনসেক্ট অ্যালাইস নামের একটি প্রকল্পে ২৭ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় ২২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। পোকাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে ২২৫ কোটি টাকা? অবাক করা…
পোষা পাখি হচ্ছে সেই সব পাখি, যেসব বুনো পাখিকে ধরে খাঁচায় বন্দি করে রাখলেও সুস্থ থাকে, সজীব থাকে, নিয়মিত খাবার খায় ও উপযুক্ত পরিবেশ পেলে ডাকাডাকি করে বা গান গায় এবং উপকরণ ও জায়গা থাকলে বাসা বাঁধে ও ডিম পেড়ে সেই ডিম তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায়। সেই বাচ্চাদের খাওয়ায় ও আদর করে। এসব পাখিই হচ্ছে পোষা পাখি। খাঁচা ছোট হতে পারে, মাঝারি হতে পারে আবার অনেক বড়ও হতে পারে। মুক্ত পোষা পাখি: যেসব পাখি পোষ মানার পর খাঁচা থেকে ছেড়ে দিলেও উড়ে চলে যায় না, পোষক বা পোষকদের আশপাশেই থাকে, ডাক দিলে উড়ে এসে হাতে, ঘাড়ে বা মাথায় বসে, বিশ্রামের সময়…
আঙুলে ব্যান্ডেজ বাঁধা শুরু করতে হয় কব্জি পেঁচিয়ে, বৃত্তাকার পাক দিয়ে। তারপর ব্যান্ডেজটা কোনাকুনি নিচুভাবে হাতের পেছন দিক দিয়ে আঙুলের ডগায় আনতে হবে। আঙুল পেঁচিয়ে পাকগুলো গোড়ায় পৌঁছাবে। তারপর আবার হাতের পেছন দিকে ফিরে কব্জিতে আসবে । বাঁ হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা শুরু হয় কড়ে আঙুল থেকে, আর ডান হাতের ক্ষেত্রে বুড়ো আঙুল থেকে। আর ডগায় ব্যান্ডেজ বাঁধতে হলে আঙুলের সামনে, করতালু থেকে হাত পর্যন্ত একটি রোলার পট্টি বা ব্যান্ডেজ বিছিয়ে ডগার ওপর ঘুরিয়ে, আঙুলের পাশের দিক যাতে ঢাকে—সেভাবে আবার পাক দিতে হবে। তারপর গোড়া থেকে শুরু করে পাক দিয়ে আঙুলটি ঢেকে দিন। বুড়ো আঙুলে স্পাইকা দিয়ে ব্যান্ডেজ বাঁধা: এ ব্যান্ডেজের…
এর ইংরেজি নাম হোয়াইট বেলিড সি ঈগল (White bellied sea eagle)। বৈজ্ঞানিক নাম Haliacetus Leucogaster। পুরুষ পাখিটির মাপ ৭১ সেন্টিমিটার, মেয়েটির মাপ ৭৮ সেন্টিমিটার। পুরুষ-মেয়ে দেখতে একই রকম। সাদা বুক-পেট, পালক ঢাকা পাড়, ঘাড়-গলা, কপোল ও মাথার চাঁদি এই পাখিটির সৌন্দর্য বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। ঠোঁট খয়েরি লাল। ডানা বুজানো অবস্থায় পিঠ ও শরীরের উপরিভাগটা বাদামি-ধূসর, ছাই বর্ণের আভাও আছে। পা আর ঠোঁট ছাড়া বাকিটা চকচকে সাদা বলেই পাখিটির নাম সাদা ঈগল হয়েছে। সাগরের পাড়ে, নদীর মোহনায় থাকে বলে নাম সাগর ঈগল। কিন্তু বর্তমানেও গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়, আগে স্থায়ীভাবে থাকতও গ্রামে। সুন্দরবনে এখন যারা বাসা করে, বাচ্চা হওয়ার পরে হাঁস-মুরগির ছানার…
প্রকৃতির অফুরন্ত বিস্ময় আমাদের মুগ্ধ করে। এরকম এক অভূতপূর্ব বিস্ময় হলো কিছু প্রাণীর অসাধারণ শক্তি ও ক্ষমতা। অনেক প্রাণীর শক্তি, সাহস এবং ক্ষমতা আমাদের কল্পনাকেও ছাড়িয়ে যায়। শারীরিক গঠন, অসাধারণ দক্ষতা এবং প্রকৃতিতে টিকে থাকার অদম্য ইচ্ছা এদের কোনো কোনোটিকে অনন্য করে তুলেছে। এরকম উল্লেখযোগ্য শক্তিশালী ৫ প্রাণীর জানা-অজানা বিভিন্ন দিক নিয়ে এ আয়োজন। রয়েল বেঙ্গল টাইগার বাংলার বাঘ—রয়েল বেঙ্গল টাইগার। সিংহের চেয়ে বেশি চটপটে এবং দ্রুতগামী এ প্রাণী নিজের আকারের দ্বিগুণ ওজনের শিকার ধরতে সক্ষম। পেশীবহুল পায়ের জন্য ঘণ্টায় ৬৫ কিমি বেগে দৌড়াতে পারে। ওজন হতে পারে ৩০৬ কেজি বা ৬৭৫ পাউন্ড পর্যন্ত। বাঘের থাবা এত শক্তিশালী যে একজন…
কিছুদিন আগেও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে পান করা নিয়ে নানা ধরনের কথা প্রচার হতে দেখা যেত। বলা হতো, বৃষ্টির পানি সবচেয়ে নিরাপদ। কারণ হিসেবে বলা হতো, প্রাকৃতিকভাবে বৃষ্টির পানি জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। তাই এটা বিশুদ্ধ। কিন্তু বর্তমানে এ ধরনের কথা প্রচার আর দেখা যায় না। বৃষ্টি পানির ব্যাপারে ভালো ভালো কথা শোনা যায় না এখন আর সেভাবে। প্রশ্ন হলো, কেন? বৃষ্টির পানি কি তাহলে আর নিরাপদ নয়? বিজ্ঞান কী বলে? অনেকগুলো কারণে বৃষ্টির পানি পান করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমে বুঝতে হবে, বৃষ্টি কীভাবে হয়। আমাদের চারপাশের জলাশয়—পুকুর, নদী-নালা, খাল-বিল থেকে সূর্যের তাপে পানি…