লেখাপড়া করে অথচ পেন্সিল ব্যবহার করতে হয়নি, এমন কে আছে? মনে হয় কেউ নেই! বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে পেন্সিলের ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়। এমনকি মহাকাশ ভ্রমণের সময়ও মহাকাশচারীদের সঙ্গী কলম নয়, পেন্সিল। মহাকাশে নভোচারীদের পেন্সিল ব্যবহার নিয়ে রুশ বনাম মার্কিনীদের নিয়ে মজার একটা কৌতুকও প্রচলিত আছে। ওই যে কোটি কোটি টাকা খরচ করে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা একটা উন্নতমানের কলম বানিয়েছিল। উদ্দেশ্য, মহাকাশের শূন্য মহাকর্ষে যাতে কিছু লেখা যায়। কিন্তু সে তুলনায় রুশ বিজ্ঞানীরা এই সমস্যাটার সমাধান করেন প্রায় বিনা খরচে। কারণ তাঁরা কলমের বদলে ব্যবহার করেন পেন্সিল। যাহোক, কত ধরনের পেন্সিল যে তৈরি হচ্ছে প্রতিবছর! তবে ষড়ভুজাকার পেন্সিলের ছড়াছড়ি চারিদিকে।…
Author: Yousuf Parvez
প্রচণ্ড গরমে ঘামতে ঘামতে আকাশে মেঘ জমতে দেখলে মনে একটা স্বস্তি দেখা যায়। কারণ মেঘ জমলেই বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা মনে হয়। এ সময় অনেকেই হয়তো ‘আয় বৃষ্টি ঝেঁপে, ধান দেব মেপে’ ছড়াটি গুনগুন করেন। প্রচণ্ড গরমে অনেক এলাকায় এখনো বৃষ্টির প্রত্যাশায় ব্যাঙের বিয়ে দেওয়ার রীতিও প্রচলিত আছে। কদিন আগে নওগাঁয় ঘটল তেমনই একটা ঘটনা। আকাশে মেঘ জমে থাকলে সূর্য আড়াল হয়ে যায়। তাই সাধারণ কাণ্ডজ্ঞানে, মেঘাচ্ছন্ন দিনে বা সূর্যের অনুপস্থিতিতে গরম কম লাগার কথা। অথচ ঘটে উল্টোটা। ব্যাপারটা যতই অদ্ভুত লাগুক, এর পেছনে আছে সহজ একটি ব্যাখ্যা। আমরা সবাই জানি, সূর্যের তাপে পৃথিবী উত্তপ্ত হয়। এই তাপ বিকিরণের মাধ্যমে ধীরে…
ঝাল লাগলে মুখে পানি আসার বিষয়টি একটি মজার ব্যাপার। মরিচ বা কোনো ঝাঁজালো মসলা দিয়ে রান্না করা খাবার খেলে সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কে খবর যায় যে সর্বনাশ হয়ে গেছে, জিবের তন্তু জ্বালাপোড়া করছে। মরিচের কাজই হলো একটু জ্বালা ধরানো। এটি আমাদের দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া এবং বিশ্বের আরও কয়েকটি অঞ্চলের খাবারের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। যত ঝাল, তত মজা! কিন্তু জিব তো বেশি ঝাল সইতে পারে না। সে স্নায়ুতন্তুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে অনবরত খবর পাঠায় একটা কিছু করো, নাহলে তো মারা যাব! এ অবস্থায় মস্তিষ্ক লালা গ্রন্থিকে খবর পাঠায় যেন বেশি করে জিবে লালার নিঃসরণ ঘটায়। কারণ, তরল–জাতীয় লালা মরিচের ঝাল হালকা করে দেয়। জিবও জ্বালাপোড়া…
এ বছর ঢাকায় তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ছিলো। রাজধানীতে বয়ে গেছে আগুনের হলকা। সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা উঠেছিল প্রায় ৪০ ডিগ্রি। আমাদের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা প্রায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাইরের তাপমাত্রা যদি ৪০-৪৫ ডিগ্রি বা তারও বেশি উঠে যায়, আর সে কারণে যদি দেহের ভেতরের (কোর) তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৫৬ ডিগ্রি বা তার চেয়েও বেশি হয়, তাহলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। সাধারণত এ রকম হয় না, কারণ শরীর তার নিজস্ব ব্যবস্থায় ঘাম ঝরিয়ে বা অন্যান্য উপায়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তবে একপর্যায়ে বিপর্যয় ঘটতে পারে।হিটস্ট্রোক শরীরকে নিস্তেজ করে ফেলে। অতিরিক্ত তাপে লাংগস, হার্ট, কিডনিসহ দরকারি যন্ত্রপাতি ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। মস্তিষ্কে…
আপনার ল্যাপটপে চার্জ কম। এ অবস্থায় জরুরি কাজ করতে হবে। তাই চার্জিংয়ের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে একই সঙ্গে ল্যাপটপে কাজ করছেন। প্রশ্ন হলো, এতে কি ল্যাপটপের ক্ষতি হতে পারে? কারণ একই সঙ্গে এর ব্যাটারি চার্জ হচ্ছে সরাসরি বিদ্যুৎ–প্লাগ সংযোগে, আবার ল্যাপটপ চলছে সেই ব্যাটারির শক্তিতে। ল্যাপটপের একদিকে চার্জিং চলছে আবার চার্জ ব্যবহার করে কাজও চলছে। এ দুইয়ের মধ্যে অসংগতি বা বিরোধ আছে কি না? মনে হতে পারে, এতে ব্যাটারির ক্ষতি হবে। কিন্তু আসলে তা নয়, খুব বেশি ক্ষতি সাধারণত হয় না। আধুনিক ল্যাপটপ এমনভাবে তৈরি করা হয়, যেন পুরো চার্জ হয়ে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সরাসরি চার্জিং বন্ধ থাকে। আবার চার্জ কমে…
লাফ দিয়ে কি পৃথিবীর বাইরে যাওয়া সম্ভব? এ প্রশ্নের সবচেয়ে সহজ উত্তর, না। কারণ, এখানে মহাকর্ষ নামের কিছু একটা আছে। মহাকর্ষ এমন একটি বল, যা বস্তুকে একত্র করে রাখে। এই বলই আমাদের পৃথিবীতে থাকতে বাধ্য করে। মহাকর্ষ বল সব বস্তুকে পরস্পর আকর্ষণ করে বা টানে। এই বলের কারণে গ্রহগুলো নক্ষত্রের চারপাশে ঘুরতে থাকে। গ্রহ-নক্ষত্রের ভর অনেক বেশি। তাই এগুলো বেশি বল প্রয়োগ করে। যেমন বৃহস্পতি সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ। তাই বৃহস্পতির মহাকর্ষ বলও পৃথিবীর তুলনায় ২.৫ গুণ বেশি। মাধ্যাকর্ষণ ব্রিটিশ বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটন প্রথম মহাকর্ষ নিয়ে গবেষণা করেন। তাঁর জন্ম ১৬৪৩ সালে। তাঁর মহাকর্ষ বলের সূত্র আবিষ্কার নিয়ে একটা…
বিশিষ্ট টিকা বিশেষজ্ঞ ড. তাজুল ইসলামের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, গবেষকদের ধারণা, বর্তমানে পৃথিবীতে ১০ ননিলিয়ন–সংখ্যক (১–এর পর ৩০টি শূন্য) ভাইরাস রয়েছে। এত বিশালসংখ্যক ভাইরাস যদি একটির পর একটি করে এক সুতায় গাঁথা হয়, তাহলে ১০০ আলোকবর্ষ (এক আলোকবর্ষ = ৬ ট্রিলিয়ন মাইল বা ৬ লাখ কোটি মাইল) পর্যন্ত দূরত্ব অতিক্রম করবে। এই দূরত্ব যে কী বিশাল, তা ধারণা করাও কঠিন।পৃথিবী থেকে আমাদের সবচেয়ে কাছের গ্যালাক্সি ক্যানিস মেজর ডোয়ার্ফের দূরত্বের চার গুণ! তবে সৌভাগ্যের কথা যে এত ভাইরাসের মধ্যে প্রায় ২০০ ধরনের বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস মানবদেহে সংক্রমণ ঘটায়। ১৯৭৭ সালে গবেষকেরা প্রথম একটি ভাইরাল জিনোম সিকোয়েন্সিং বের করেন। ২০২১ সাল পর্যন্ত…
গ্যালাক্সি উদ্ভবের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই গ্যালাক্সির ঘোরা শুরু হয়। মহাবিশ্বে প্রচুর হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাসের অণু ছড়িয়ে–ছিটিয়ে ছিল। যেখানে এগুলোর ঘনত্ব বেশি ছিল, সেখানে গ্যাস ঘনীভূত হতে থাকে। একপর্যায়ে প্রবল অভিকর্ষ বলের প্রভাবে গ্যাসের বলয় সৃষ্টি হয় এবং ঘুরতে শুরু করে। এই ঘূর্ণনের ফলে গ্যাসের বলয় চাকতির মতো ছড়িয়ে পড়ে। যেমন একটা হালকা ঘনত্বের আটার গোল্লা যদি একটি কাঠিতে গেঁথে প্রবল ঘূর্ণন সৃষ্টি করি, তাহলে তা আটার একটা চাকতির মতো ছড়িয়ে পড়বে। প্রকৃতপক্ষে বড় আকারের আটা রুটি বা চাপাতি প্রায় এভাবেই তৈরি করা হয়। এভাবে গ্যালাক্সির উদ্ভব। আমাদের সৌরজগৎও একটি গ্যালাক্সির অন্তর্ভুক্ত। এর নাম মিল্কি ওয়ে, বাংলায় বলি ছায়াপথ বা…
আসলে মুখস্থ করা আর মনে রাখার মধ্যে একটা বড় পার্থক্য আছে। সেটা হলো কোনো একটি বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না নিয়ে শুধু আক্ষরিকভাবে মনে রাখা হলো মুখস্থ। এতে হয়তো পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাওয়া যায় কিন্তু বাস্তব জীবনে খুব কাজে লাগে না। বুঝে ও পরিপ্রেক্ষিত সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিয়ে শিখলে সেটা মনে রাখা সহজ। এটাই আসল শিক্ষা। একবার মস্কোর এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আমাকে বলেছিলেন, তোমরা পড়া মুখস্থ করবে না, অর্থ বুঝে শুধু কয়েকবার পড়বে। আর মনে রাখবে ওই বিষয় সম্পর্কে বিস্তৃত জানার সূত্র কী। কোন বইয়ে বিষয়টি আছে বা কোন ব্যক্তি বিষয়টা ভালো জানেন। তাহলে ছোটখাটো বাক্য, ঘটনা প্রভৃতির ভিড়ে মস্তিষ্ক…
বছরখানেকের মধ্যে শিশুদের যে দাঁত ওঠে, তাকে বলি ‘দুধদাঁত’। কয়েক বছরের মধ্যে সেই দাঁত পড়ে যায়, নতুন দাঁত ওঠে। এই দাঁতই প্রায় বুড়ো বয়স পর্যন্ত থাকে। অবশ্য এর আগে ক্যাভিটি (চলতি ভাষায় দাঁতে পোকা ধরা) বা অন্য কোনো রোগে দাঁত পড়ে যেতে পারে। সাধারণত, এরপর আর নতুন দাঁত ওঠে না। তখন আমরা দাঁতের ডাক্তারের কাছে যাই। কৃত্রিম দাঁত লাগাই। কিন্তু বুড়ো বয়সে স্বাভাবিকভাবে দাঁত পড়ে যাওয়ার পর অনেকে হয়তো আর কৃত্রিম দাঁত নেন না। অবশ্য বেশি বয়স বাঁচলে দু-একজনের দু-একটা নতুন দাঁত উঠতেও পারে। কিন্তু সেটা ব্যতিক্রম। সাধারণত, দ্বিতীয়বারের পর আর নতুন দাঁত ওঠে না। এ অবস্থায় অনেকে দুই পাটি…
যাঁরা ঘরে বিড়াল পোষেন, তাঁরা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, পানি একদমই সহ্য করতে পারে না বিড়াল। কোনোভাবে গায়ে পানির ছিটা পড়লেই বিরক্ত হয় প্রচণ্ড। বিড়াল ‘ফিলাইন’ নামের স্তন্যপায়ী পরিবারের অংশ। একই পরিবারের সদস্য বাঘেরাও। তবে বিড়ালের মতো সব ফিলাইনরা কিন্তু পানি অপছন্দ করে না। বাঘই যেমন, গরম লাগলে জলাধারে ডুব দিয়ে গা জুড়ায়। কিংবা শিকারকে পানিতে নামতে দেখলে, জলাধার গভীর না হলে তারাও নেমে পড়ে। তাহলে, বিড়াল পানি এত অপছন্দ করে কেন? বিজ্ঞান কী বলে? বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাঁদের বেশ কিছু ব্যাখ্যা আছে এ বিষয়ক। এরকম একটি ব্যাখ্যা হলো, বিড়াল অভিযোজিত হয়েছে শুষ্ক পরিবেশে। নদী বা হৃদের সংস্পর্ষে আসেনি…
বুড়ো হলে মানুষের চুল পাকে। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে এই নিয়ম একটু দ্রুতই কাজ করে। বুড়ো না হতেই চুল সাদা হয়ে যায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ৩০ বছরের পর থেকে গড়ে প্রতি এক যুগে চুল পাকার সম্ভাবনা ১০ থেকে ২০ শতাংশ হারে বাড়ে। আর ৬১ থেকে ৬৫-এর মধ্যে প্রায় ৯১ শতাংশ মানুষের চুল পেকে সাধা হয়ে যায়। পশ্চিমারা আবার ইংরেজিতে বলেন ‘গ্রে হেয়ার’। বাংলা করলে মনে হয় ধূসর। কিন্তু আমরা তো চোখের দেখায় জানি, পাকা চুল আসলে সাদাই হয়। প্রশ্ন হলো, কেন? চুল পাকলে কেন সাদা হয়ে যায়? চুল, ত্বক ও চোখের রং কেমন হবে, তা নির্ধারণে একটি কণা…
ঘুমের সময় দেহের প্রায় সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় থাকে। অবশ্য শ্বাসপ্রশ্বাস, হৃদ্যন্ত্র, রক্ত সঞ্চালন চলতে থাকে। সাধারণভাবে শরীর বিশ্রামে চলে যায়। এই অবসরে মস্তিষ্কের বিশেষ কিছু অংশ জরুরি কাজ করে। সারা দিন আমরা যা চিন্তাভাবনা করি, চলাফেরা করি, কথা বলি, সেসব পর্যালোচনা করে জরুরি বিষয়গুলো মস্তিষ্ক তার স্মৃতিভান্ডারের বিশেষ বিশেষ অংশে সাজিয়ে রাখে। অপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলো ঝেড়েমুছে সরিয়ে দেয়। মস্তিষ্কের এই কাজের সময় যেন কোনো গন্ডগোল না হয়, সে জন্য স্বপ্ন দেখা শুরু হয়। এ সময় ঘুমন্ত অবস্থায় চোখের মণি বিশেষ ছন্দে নড়াচড়া করে। ঘুমন্ত মানুষ সেটা টের পায় না। স্বপ্নে মশগুল হয়ে থাকে। কিন্তু কোনো স্বপ্ন যদি একেবারে বাস্তবের মতো হয়ে…
রাস্তাঘাটে অনেক সময় দেখা যায়, কুকুর জিহ্বা বের করে আছে। প্রায় ঝুলে পড়া জিহ্বা দেখিয়ে সে যেন দিব্যি হেঁটে যায় কিংবা বসে থাকে। কিন্তু কুকুর কেন জিহ্বা বের করে রাখে? এটা আসলে কুকুরের ঘামের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রাণিজগতে মানুষ, বানর এবং আরও কিছু প্রাণী ঘামে। কিন্তু দুই ধরনের প্রাণীর কোনো ঘাম হয় না। যেসব প্রাণীর চামড়া পুরু লোমে ঢাকা থাকে, তাদের ঘাম হয় না। যেমন কুকুর ও ভালুক। এ ছাড়া যেসব প্রাণীর ত্বকে ঘামগ্রন্থি নেই, তাদের স্বাভাবিকভাবে ঘাম হয় না। যেমন সাপ ও সরীসৃপ। প্রশ্ন জাগতে পারে, কুকুর বা ভালুকের মতো রোমশ প্রাণীদের তাহলে ঘাম ঝরে কীভাবে? এ প্রক্রিয়াকে বলে প্যান্টিং…
করোনার একটি উপসর্গ হলো খাবারের গন্ধ বা স্বাদ কিছুই বুঝতে না পারা। অথচ সুস্থ অবস্থায় সে পোলাও–কোরমা খুব মজা করে খায়। তাহলে করোনা হলে এই স্বাদ কোথায় যায়? আসলে স্বাদ থাকে, কিন্তু জিহ্বা সেটা টের পায় না। কারণ, স্বাদ গ্রহণের সূক্ষ্ম স্নায়ুকোষগুলো থাকে জিহ্বায়। করোনায় আক্রান্ত হলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ওগুলো সাময়িকভাবে অকার্যকর হয়ে যায়। কয়েক সপ্তাহ পর অবশ্য স্বাদ আবার ফিরে আসে। জিহ্বার স্বাদ গ্রহণের সক্ষমতার বিষয়টি খুব মজার। অনেক সময় জিহ্বা আমাদের বিভ্রান্ত করে। যেমন ডায়াবেটিসের রোগীদের অনেকে ডায়েট সোডা পান করেন, কারণ ওই পানীয়তে চিনি থাকে না। তাহলে মিষ্টি হয় কীভাবে? আর মিষ্টিই যদি হবে, তাহলে চিনি…
শ্বাস গ্রহণের মাধ্যমে বাইরের বাতাস টেনে ফুসফুসে নিয়ে যাই। এরপর বাতাসের অক্সিজেন রক্তের মাধ্যমে শরীরের কোষে যায় এবং সেখান থেকে কার্বন ডাই–অক্সাইড নিয়ে রক্ত ফিরে আসে ফুসফুসে। শ্বাস ত্যাগের মাধ্যমে কার্বন ডাই–অক্সাইড বাইরে বেরিয়ে যায়। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, বাতাসে যে আরও অনেক গ্যাস ও অন্যান্য ক্ষুদ্রকণা থাকে, ওগুলো কোথায় যায়? ফুসফুস থেকে কি রক্তে যায়? আবার বাতাসে ফিরে আসে? এতে রক্তের কোনো ক্ষতি হয় কি না? এসব প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই ওঠে। এখন দেখা যাক, রক্তের সঙ্গে আর কী কী আমাদের ফুসফুসে যায়। আমরা সবাই জানি, যে বাতাস আমরা নাক দিয়ে টেনে নিই, তার মধ্যে অক্সিজেন ছাড়া আরও অনেক গ্যাসীয় পদার্থ থাকে।…
মিল্কিওয়ে ও অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সির সংঘর্ষ কত দিন পর হতে পারে? মহাকাশবিজ্ঞানীরা একটা আনুমানিক হিসাব করে বলছেন, এই সংঘর্ষ অন্তত ৩০০ কোটি বছরের আগে হয়তো হবে না। এমনকি ৫০০ কোটি বছরও লাগতে পারে। তাই প্রথমে বলব, এ রকম ভয়াবহ সংঘর্ষে মহাপ্রলয় হওয়ার আশঙ্কা তো রয়েছেই। কিন্তু এর আগে শত শত কোটি বছর বিজ্ঞানীরা কাজ করার সুযোগ পাবেন। আবার সৌরজগতের মধ্যেও ওলট–পালট লেগে যেতে পারে। তাই সব দিক বিবেচনায় রেখেই আমরা এ জটিল প্রশ্নের উত্তর বের করব। এটাও মনে রাখতে হবে, শত শত কোটি বছর পর সংঘর্ষের পরিণতি কী হতে পারে, সেটা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে মতভেদ থাকা স্বাভাবিক। মতভেদ আছে। তবে এটা…
মানুষ চাঁদে গিয়েছিল ৫৪ বছর আগে। এরপর মহাশূন্য অভিযানে অনেক আগ্রগতি হয়েছে। এখন মানুষ মঙ্গলে যাওয়ার কথা ভাবছে। এর মধ্যে চাঁদে মানুষের বসতি গড়ার কথা উঠেছে। আমেরিকা আগে বলেছিল ২০২৮ সালের মধ্যে ওরা চাঁদে মানুষ পাঠাবে। তারপর আর্টেমিস প্রকল্প শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে সফল হয়েছে আর্টেমিস ১ অভিযান। এখন ওরা বলছে, আর্টেমিস ২ অভিযানে ২০২৪ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যেই চাঁদে মানুষ পাঠাবে। ওদিকে চীন বলছে ২০৩৫ সালের মধ্যে ওরা চাঁদে মানুষ পাঠাবে। ইউরোপ, ভারত, জাপান, কানাডা এবং রাশিয়াও চন্দ্রজয়ের উদ্যোগ নিচ্ছে। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির প্রধান তাই আশা করছেন, এসব উদ্যোগের ফলে একটি চন্দ্রগ্রাম (মুন ভিলেজ) গড়ে উঠবে। চাঁদে তো বাতাস নেই।…
প্রচণ্ড গরমে নদীনালা, পুকুর, খালবিল সব শুকিয়ে একাকার। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার, পাহাড়ের মাথায় তখনও বরফ জমে থাকে। কবিতার ভাষায় ‘শিখর হিমাদ্রির’। দূর থেকে সাদা এই পাহাড়চূড়া অনেকের চোখেই বেশ সুন্দর। গরমের দিনে যেখানে বাতাসে বরফ রাখলে চোখের পলকে গলে যায়, পাহাড়চূড়ায় তখনও দেখা যায় সাদা বরফ। কিন্তু কেন এরকম ঘটে? পাহাড়চূড়ার বরফের ওপর এমন পক্ষপাতিত্ব কেন? আসল বিষয় হচ্ছে, ভূপৃষ্ঠ থেকে যত ওপরের দিকে ওঠা যায়, ততই বাতাসের চাপ কমতে থাকে। তার মানে হলো, ওপরের দিকে বাতাস ক্রমেই হালকা হয়ে যায়। সেই সঙ্গে ওপরের দিকে তাপমাত্রাও তত কমতে থাকে। এক হিসেবে দেখা গেছে, ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রতি হাজার ফুট উচ্চতার জন্য…
খেয়াল করেছেন নিশ্চয়ই, অন্যান্য সময়ের চেয়ে বর্ষাকালে ভেজা কাপড় দেরিতে শুকায়। অবশ্য যারা সারা বছর গ্যাসের চুলায় ভেজা কাপড় শুকায়, তাদের কথা বাদ। এতে দেশের মূল্যবান সম্পদ নষ্ট হয়। যাহোক, বৃষ্টির দিনে ভেজা কাপড় শুকাতে দেরি হলেও শীতকালে অনেক কম সময় লাগে। এ জন্য দায়ী বাতাসের আর্দ্রতা। বৃষ্টির দিনে বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকে। তাই ভেজা কাপড় শুকাতে দেরি হয়। শরীরের ঘাম শুকাতেও দেরি হয় একই কারণে। অন্যদিকে শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতা অনেক কম থাকে। ফলে শীতকালে কাপড় শুকাতে সময় লাগে তুলনামূলক কম। একই কারণে শীতকালে আমাদের ঠোঁট বা দেহের চামড়া ফেটে যায়। বাতাসের আর্দ্রতা আসলে কী? বাতাসে শতকরা সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের পরিমাণকে…
ভূত-প্রেত বিশ্বাসীরা বলেন, ভূতদের নাকি মাটিতে ছায়া পড়ে না। আকাশে পাখি কিংবা বিমান উড়ে যায়, কিন্তু অনেক খুঁজেও মাটিতে তার ছায়া দেখা যায় না। তাই বলে এদের ভূত বলে গণ্য করা মোটেও ঠিক হবে না। তাহলে কারণটা কী? এর উত্তর জানার আগে জানতে হবে, কোনো বস্তুর ছায়া কেন পড়ে? আসলে আলো সরল রেখায় চলে। তার গতিপথে কোনো অস্বচ্ছ বস্তু এসে পড়লে বা বাধা পড়লে আলো তা ভেদ করে যেতে পারে না। তাই ওই বস্তুটির ছায়া পড়ে। অবশ্য ছায়ার আকার বস্তুর আকারবিশিষ্ট হয়। আকাশে উড়ন্ত চিল বা বিমানও তো সূর্যের আলোর মাটিতে আসার পথে বাধা সৃষ্টি করে। সেই হিসাবে তাদেরও ছায়া…
এটি সত্য যে, পৃথিবীর আহ্নিক গতির মতো সূর্যেরও একধরনের আহ্নিক গতি আছে, অর্থাৎ সে–ও নিজ অক্ষরেখার চারপাশে ঘোরে। অবশ্য এই ঘূর্ণন ঠিক পৃথিবীর আহ্নিক গতির মতো নয়। পৃথিবী তার ভেতরের তরল পদার্থ আর বাইরের বায়ুমণ্ডল নিয়ে অনেকটা কঠিন পদার্থের মতো ঘুরপাক খায়। কিন্তু সূর্যের ভেতরে সে রকম কঠিন পদার্থ নেই। কিছুটা ঘনীভূত হয়ে সৃষ্ট গ্যাসীয় মেঘের অ্যাঙ্গুলার মোমেন্টাম বা কৌণিক ভরবেগ ব্যবহার করে সূর্য নিজ অক্ষরেখার চারপাশে ঘুরতে থাকে। পৃথিবী নিজ অক্ষরেখার চারপাশে একবার ঘুরে আসতে সময় নেয় প্রায় ২৪ ঘণ্টা বা এক দিন। অন্যদিকে প্রায় ২৭ দিনে সূর্য তার নিজ অক্ষরেখার চারপাশে একবার ঘুরে আসে। নির্দিষ্ট কয়েকটি সৌর–কলঙ্কের গতিবিধি…
একবার ভেবে দেখুন, চোখের ভ্রু মাথার চুল বা মুখের দাড়ি-গোঁফের মতো বাড়ছে। তাহলে কী হতো? প্রতি মাসে বা সপ্তাহান্তে চোখের ভ্রু কাটতে সেলুনে যেতে হতো সবাইকে। কিন্তু আমাদের সৌভাগ্যই বলতে হবে, ভ্রু চুল বা দাড়ির মতো বাড়ে না। তাই নিয়মিত কাটতেও হয় না। হিসেবে দেখে গেছে, প্রতি মাসে মানুষের মাথার চুল প্রায় আধ ইঞ্চি করে বাড়ে। এভাবে প্রতিবছর একেকটি চুল প্রায় ৬ ইঞ্চি বাড়তে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, চুলের বয়স বেশি হলে তার বৃদ্ধির পরিমাণও একসময় কমতে থাকে। মূলত কোষ বিভাজনই চুল বৃদ্ধির কারণ। নতুন কোষ তৈরি হয়ে তা চুলের গোড়ায় জায়গা করে নেয়। এভাবে চুল ক্রমান্বয়ে লম্বা হতে থাকে।…
ছোটবেলায় চিড়িয়াখানায় গিয়ে আমরা অনেকেই হাতি দেখেছি। যাঁরা স্বচক্ষে দেখেননি, তাঁরা নিশ্চয়ই ছবি, ভিডিও বা চলচ্চিত্রে দেখেন। হাতির কথা বলতে গেলেই এর বিশাল দেহ, মূল্যবান গজদন্ত, শুঁড় এবং বড় দুটো কানের কথা আসে। নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, এই কান দুটো শুধু বড় নয়, বিশাল বড়। আমরা মানুষ, আমাদের কান অনেক ছোট। শরীর এবং কানের অনুপাত যদি ভাবি, শুধু মানুষ নয়, আমাদের আশপাশের বেশিরভাগ পরিচিত প্রাণীর কানই ওরকম ছোট। স্বাভাবিক। এর কাজ মূলত শোনা, তাই তো? মানুষের কান অবশ্য ভারসাম্য রক্ষাতেও সাহায্য করে। তবে, সেটা ওই ছোট কানেই হয়ে যায়। তাহলে, প্রশ্ন হলো, হাতির এই বিশাল দুটো কানের কাজ কী? প্রকৃতিতে…