প্রকৃতিতে পাওয়া সবচেয়ে কঠিন ও দামী বস্তুর নাম হীরা। ইংরেজিতে বলে ডায়মন্ড। এই বস্তুটির চাহিদা ব্যাপক হলেও পৃথিবীতে কম পাওয়া যায়। হীরা উজ্জ্বল ও শক্ত পদার্থ। প্রচণ্ড তাপ ও চাপেও নষ্ট হয় না। আবার অন্য কোনো বস্তু দিয়ে হীরার ওপর আঁচড় কাটা যায় না। এসব অতুলনীয় গুণের কারণে এ রত্ন সবার কাছেই লোভনীয়। মূল বিষয়ে যাওয়ার আগে হীরা নিয়ে কিছু মজার কথা বলে নিই। গ্রিক শব্দ Adamas থেকে ইংরেজি ডায়মন্ড (Diamond) শব্দের উৎপত্তি। এর অর্থ অভঙ্গুর, অপরিবর্তনীয়। গ্রিকদের বিশ্বাস ছিল, হীরা হলো ঈশ্বরের অশ্রু। অন্যদিকে রোমানদের বিশ্বাস ছিল হীরা যা তা বস্তু নয়, নক্ষত্রের খসে পড়া টুকরো। খ্রিস্টপূর্ব আড়াই হাজার…
Author: Yousuf Parvez
দাঁতের যত্ন যে কত দরকার তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কথায় বলে দাঁত থাকিতে দাঁতের মর্যাদা বোঝে না! যাদের দাঁতে পোকা ধরে (ক্যাভিটি), তারাই হাড়ে হাড়ে টের পায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাশতার আগে দাঁত মাজতে হয়। ছোটবেলা থেকে এটাই শিখে এসেছি। এরপর বিজ্ঞানীরা বললেন সকালে নয়, রাতে খাওয়ার পর দাঁত মাজলে আর পোকা ধরবে না। শুরু করলাম রাতে দাঁত মাজা। এখন গবেষকেরা বলছেন, শুধু রাতে নয়, সকালেও দাঁত মাজতে হবে এবং সেটা নাশতার আগেই! ব্যাপার কী? তাহলে কি আমাদের পূর্বপুরুষদের অভিজ্ঞতাই ঠিক ছিল? অনেকটা তাই। তবে একটু বিজ্ঞানের বিষয় আছে। আসলে রাতে শোয়ার আগে একবার দাঁত মাজা দরকার। কারণ,…
মহাশূন্যে পরিভ্রমণের সময় শরীর কোনো ওজন অনুভব করে না। তাই দেহের উচ্চতা সামান্য বেড়ে যায়। কিন্তু সেটা বাড়ার কারণ সম্পূর্ণ ভিন্ন। এটা এ জন্য নয় যে হাত-পায়ের দৈর্ঘ্য বেড়ে গেল। না, তা নয়। আসলে ব্যাপারটা হলো কী, আমরা যখন পৃথিবীতে থাকি, তখন আমাদের দেহের ওপর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কাজ করে। তখন আমরা ওজন অনুভব করি। কিন্তু নভোচারীরা নিদিষ্ট কক্ষপথে পৃথিবীকে ঘিরে মুক্তভাবে পড়তে থাকেন। তাই তারা ওজন অনুভব করেন না। তখন মেরুদণ্ডের কশেরুকাগুলোর মধ্যে ফাঁকা অংশ কিছুটা বেড়ে যায়। ফলে ওদের উচ্চতা ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এ জন্য ওদের স্পেসস্যুটও একটু জায়গা রেখে বানানো হয়, যেন উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য সমস্যায়…
পৃথিবী থেকে আমরা প্রতি রাতে আকাশে চাঁদ দেখি। শুধু অমাবস্যার সময় আকাশে চাঁদ দেখা যায় না। ওই রাতে সূর্য ও চাঁদ পৃথিবীর অপর দিকে থাকে। পূর্ণিমার রাতে আকাশভরা জ্যোৎস্না আমাদের মন ভরে দেয়। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছি, চাঁদ থেকে পৃথিবী কেমন দেখায়? এটা ব্যাখ্যা করতে হলে প্রথমে বলব, চাঁদের আকাশে পৃথিবী কিন্তু সম্পূর্ণ অন্য রকম দেখায়। কারণ, পৃথিবী প্রদক্ষিণের সময় চাঁদ নিজ অক্ষরেখার চারপাশে এমনভাবে ঘোরে যে আমরা পৃথিবী থেকে সব সময় চাঁদের শুধু এক পিঠই দেখি। চাঁদের অপর পিঠ বা দূরবর্তী পিঠ আমরা পৃথিবী থেকে কখনো দেখি না। চাঁদের কোন এলাকা থেকে পৃথিবী দেখছি, তার ওপর নির্ভর করবে…
চাঁদ না থাকলে পৃথিবীর সমুদ্রে জোয়ার–ভাটাই হতো না। সুতরাং বলা চলে, এ দুয়ের মধ্যে একেবারে গলায়–গলায় ভাব! এর কারণ হলো, পৃথিবীর ওপর চাঁদের মহাকর্ষ বলের প্রভাব। প্রশ্ন উঠতে পারে, চাঁদ তো অনেক দূরে। তাহলে সেখান থেকে এত প্রভাব ফেলে কীভাবে? এটা অবশ্য ঠিক। চাঁদ ও পৃথিবীর মধ্যে গড় দূরত্ব ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪৯৯ কিলোমিটার বা ২ লাখ ৩৮ হাজার ৮৫৫ মাইল। সূর্যের তুলনায় অনেক কাছে। পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল। কিন্তু চাঁদের আকার পৃথিবীর প্রায় এক–চতুর্থাংশ। সুতরাং পৃথিবীপৃষ্ঠের যে অংশ বরাবর আকাশে চাঁদ থাকে, সেই অংশের সমুদ্রের পানি চাঁদের মহাকর্ষ বলের প্রভাবে কিছুটা ফুলে ওঠে।…
সময়ের পরিমাপ হলো বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে দূরত্বের একধরনের পরিমাপ। যেমন সকালে সূর্যোদয় ও সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের মধ্যে দূরত্বের পরিমাপ। এভাবে বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ অতীত থেকে বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিকে যাচ্ছে। বলা যায়, অতীত থেকে বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিকে ঘটনাপ্রবাহের পরিমাপকে সময়ের পরিমাপ বলা চলে। সময়ের হিসাব রাখার জন্য আমরা সাধারণত ব্যাটারিচালিত দেয়ালঘড়ি বা হাতঘড়ি ব্যবহার করি। চাবি দিয়ে দেয়ালঘড়ি চালানোর একটি ধরনও ছিল। পেন্ডুলামের দোলনকাল হিসাব করে সময়ের হিসাব রাখার ব্যবস্থা। এসব ঘড়ি দিয়ে সাধারণ কাজ চলে, কিন্তু সময় পরিমাপের সূক্ষ্ম কাজের জন্য খুব নির্ভরযোগ্য নয়। কারণ, এসব ঘড়ির দোলনকাল ধীরে ধীরে কয়েক সেকেন্ড করে কমে যায়। এ কারণে সূক্ষ্ম হিসাবের জন্য…
সৌরজগতে মোট গ্রহ আছে ৮টি। সঙ্গে আছে আরও অনেক উপগ্রহ ও বামন গ্রহসহ নানা মহাজাগতিক বস্তু। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় গ্রহ হলো গ্রহরাজখ্যাত বৃহস্পতি। প্রায় তিন দশক আগে, ১৯৯৫ সালে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা প্রথম সৌরজগতের বাইরে গ্রহ আবিষ্কার করেছেন। এ ধরনের গ্রহগুলোকে বলে এক্সোপ্ল্যানেট বা বহিঃসৌর গ্রহ। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মতে, এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত এক্সোপ্ল্যানেটের সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। শনাক্তকৃত বেশিরভাগ এক্সোপ্ল্যানেটের অবস্থানই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে। তবে মিল্কিওয়ের বাইরেও কিছু এক্সোপ্ল্যানেটের সন্ধান পাওয়া গেছে। নাসার তথ্যানুসারে, মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির বাইরে, মহাবিশ্বে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন এক্সোপ্ল্যানেট রয়েছে। কথা হলো, এখন পর্যন্ত যেসব এক্সোপ্ল্যানেটের সন্ধান পাওয়া গেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় গ্রহ কোনটি? সাধারণত প্রস্থ…
সাধারণত ডিম পাড়ার আগে স্ত্রী মশাদের প্রচুর রক্ত খাওয়ার দরকার হয়। তাদের পুষ্টির জন্য এটা জরুরি। রক্ত খেলে একটি মশা প্রচুর ডিম পাড়তে পারে, কিন্তু রক্ত খেতে না পারলে সামান্য কয়েকটি ডিম পাড়ে। বংশবিস্তারের জন্যই তাদের রক্ত খেতে হয়। কিন্তু মশা খুব ভালোভাবেই জানে যে সে হুল ফোটালে মানুষের হাতের চাপড় খেয়ে মরতে হবে। প্রথমে আস্তে করে আমাদের হাতে–পায়ে বসে, এরপর প্রথমে তাদের হুল দিয়ে কিছু ঘন তরল ত্বকের ভেতর ঢুকিয়ে দেয়। এটা আসলে একধরনের ব্যথানাশক তরল, যা ত্বকের কিছুটা অংশ কিছুক্ষণের জন্য অবশ করে রাখে। এরপর পেট ভরে রক্ত শুষে নিয়ে উড়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আমাদের ত্বকের ওই স্থানের…
ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে, ‘এলিফ্যান্টস নেভার ফরগেট’। বাক্যটির অর্থ, হাতিরা কখনো ভোলে না। এই প্রবাদের ওপর ভর করে হলিউড বা বলিউডে বানানো কিছুও মুভিও হয়তো অনেকে দেখেছেন। কিন্তু এই প্রচলিত প্রবাদ কি আসলেই সত্যি? হাতিরা কি কখনোই কিছু ভোলে না? টেনের হোহেনওয়াল্ডের দ্য এলিফ্যান্ট স্যাংকচুয়ারি (অর্থাৎ হাতির অভয়ারণ্য) কাজ করেন ক্যারল বার্কলি। তিনি একটা ঘটনা বলেছেন। ১৯৯৯ সালে সেখানে জেনি নামে একটা হাতি ছিল। এশিয়া থেকে আসা শার্লি নামের এক হাতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই সে অস্বস্তি বোধ করতে শুরু করে। দুই হাতি দীর্ঘক্ষণ নিজেদের শুঁড় দিয়ে একে অন্যকে অনুভব করে। তারপর দুজনের মধ্যেই দেখা যায় হারানো বন্ধু দীর্ঘদিন পর…
আমরা প্রায়ই বলি, কয়েন টস করলে হেড ওঠার সম্ভাবনা ৫০%। কথাটাকে সোজা বাংলায় বললে দাঁড়াবে, দুইবার কয়েন টস করলে একবার হেড উঠতে পারে। কিন্তু এটা কি আসলেই সত্যি? দুইবার কয়েন টস করলে একবার কি হেড ওঠে সবসময়? আমরা প্রায়ই বিভিন্ন ঘটনাকে সম্ভাব্যতায় প্রকাশ করি। কয়েন টসের কথাই ধরা যাক। একটা কয়েনের একপাশকে বলা হয় হেড। অন্যপাশকে বলা হয় টেল। আমরা বলি, কয়েন টস করলে হেড ওঠার সম্ভাবনা ৫০%। অর্থাৎ ১/২ বা ০.৫। কথাটাকে সোজা বাংলায় বললে দাঁড়াবে, দুইবার কয়েন টস করলে একবার হেড উঠতে পারে। কিন্তু এটা কি আসলেই সত্যি? দুইবার কয়েন টস করলে একবার কি হেড ওঠে সবসময়? উঁহু,…
প্রাচীন মিসরের পিরামিডগুলো আজও বিশ্বের পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। মিসরের বিজ্ঞানীদের মূল লক্ষ্য ছিল—পিরামিডগুলো যেন চিরকাল টিকে থাকে। কারণ, মিসরের সম্রাট ফারাওদের প্রতি তাঁদের ছিল খুব বেশি আনুগত্য। তাঁরা মনে করতেন, মৃত্যুর পরেও ফারাওদের আত্মার অংশবিশেষ মরদেহের ভেতরেই থেকে যায়। তবে আত্মার মূল অংশ সূর্যরশ্মির সঙ্গে সূর্যে চলে যায়। এভাবে ফারাওদের আত্মা স্বর্গ লাভ করে। সে জন্যই পিরামিডগুলো ত্রিভুজাকৃতির। তীক্ষ্ণ চূড়াটি এমন, যেন মৃত্যুর পর সহজেই ফারাওদের কল্পিত আত্মা সূর্যরশ্মি আশ্রয় করে স্বর্গে যেতে পারে। গিজার পিরামিডগুলো প্রায় ৪ হাজার ৫০০ বছর আগে তৈরি। দীর্ঘকাল টিকে থাকার জন্য পিরামিড তৈরিতে যে গ্রানাইট পাথর ব্যবহার করা হয়, সেগুলো ছিল মসৃণ। পানিতে যেন…
আমাদের দেশে বর্ষাকালে ও গ্রীষ্মের দিকেও বেশ বৃষ্টিপাত হয়। আকাশের অবস্থা অবশ্য সে কথা বলে না। ঝাঁ চকচকে রোদ দেখে রাস্তায় নামার পর দেখবেন, বলা নেই কওয়া নেই, আকাশ কালো করে নেমে গেল তুমুল বৃষ্টি। এমন অবস্থায় সবসময় ছাতা সঙ্গে থাকে না। বৃষ্টির ফোঁটা আঘাত করে শরীরে। প্রশ্ন হলো, বৃষ্টির এসব ফোঁটা কত বেগে পড়ে ভূপৃষ্ঠে? বৃষ্টির ফোঁটার বেগ নির্ভর করে মূলত এর আকারের ওপর। মেঘের মধ্যে পানির কণাগুলোর আকার মোটামুটি ২০ মাইক্রনের মতো। অভিকর্ষের টানে এসব কণা প্রতি সেকেন্ডে মাত্র ১ সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসে। কিন্তু বায়ু প্রবাহের কারণে সঙ্গে সঙ্গেই আবার উঠে যায় ওপরে। এতে এক ধরনের ভারসাম্য…
কোনো স্থানের দূরত্ব পরিমাপ করতে আমরা মাইল বা কিলোমিটার বা অন্য কোনো একক ব্যবহার করি। কিন্তু কোনো বস্তু যদি কোটি কোটি মাইল দূরে হয়, তাদের ক্ষেত্রে এই একক ব্যবহারে কিছু সমস্যা হয়। মহাকাশের অগণিত নক্ষত্র আমাদের পৃথিবী থেকে এত এত দূরে যে সেগুলোকে মাইল বা কিলোমিটার দিয়ে প্রকাশ করলে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। যেমন অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সির কথা ধরা যাক। এ গ্যালাক্সি আমাদের পৃথিবী থেকে ২১ কুইনটিলিয়ন কিলোমিটার (২১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ কিলোমিটার) দূরে। অর্থাৎ ২১ এর পরে মোট ১৮টি শূন্য বসাতে হবে। এরকম আরও অনেক উদাহরণ দেওয়া যায়, যাদের দূরত্ব প্রকাশ করতে গেলে অনেক বড় সংখ্যা লিখতে হয়। তারচেয়ে এবার আসল কথাটা বলে…
মানুষ বুড়ো হয়, কিন্তু তার মস্তিষ্ক? সেটা কি বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বুড়ো হয়? এই বিষয় নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। হার্ভার্ড নিউরোলজিস্ট লেহ এইচ সমারভিল জার্নাল নিউরন-এ এই বিষয়ে একটি নিবন্ধ লেখেন। তিনি বলেন, মানুষের মস্তিষ্ক ১০ বছরের মধ্যে পূর্ণ আকার ধারণ করে। কিন্তু যে নিউরন দিয়ে মস্তিষ্ক গঠিত, সেগুলো এরপরও পরিবর্তিত হতে থাকে (সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬)। যখন মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে নতুন নতুন সংযোগ স্থাপিত হয়, তখন পার্শ্ববর্তী নিউরনগুলোর মধ্যে সংযোগেরও কাটছাঁট হয়। এই পুনরাকৃতি ধারণ প্রক্রিয়ার গতি শেষ পর্যন্ত কমে আসে। এটা মস্তিষ্কের পরিণতি প্রাপ্তির লক্ষণ। কিন্তু মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে এই পরিবর্তনের ধারা বিভিন্ন গতিতে ঘটে। মস্তিষ্কের…
কান্নার পানি আসে চোখের পানির গ্রন্থি বা টিয়ারগ্ল্যান্ড থেকে। সেখান থেকে বেরিয়ে পানি চোখের ভেতরে ছড়িয়ে পড়ে। আবার চোখের পানির নালি দিয়েও আসে। এগুলো হলো ল্যাক্রিমাল ডাক্ট। এগুলো খুব সরু নালি, চোখের ওপরের পাতার ভেতরের দিকে চোখ ও নাকের মাঝখানে থাকে। আসলে কান্না ছাড়াও সব সময় চোখের ভেতরের অংশ ভেজা রাখার জন্য কিছু পানি জমা থাকে। আমরা যে বারবার চোখের পাতা ফেলি, সেটা ওই পানি দিয়ে চোখ ভেজা রাখার জন্য। যদি প্রয়োজন অনুপাতে চোখ ভেজা না থাকে বা চোখ শুকনা থাকে, তাহলে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। সেটা এক ব্যাপার। কিন্তু কান্নার পানি আসে অন্য কারণে। আবেগ, মানসিক চাপ, উত্তেজনা, রাগ,…
প্রকৃতিতে ইউরেনিয়ামের দুটি আইসোটোপ পাওয়া যায়। ইউরেনিয়াম-২৩৮ (২৩৮U) ও ইউরেনিয়াম-২৩৫ (২৩৫U)। দুটোই তেজস্ক্রিয়। বাণিজ্যিক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি হিসেবে সরাসরি প্রাকৃতিক ইউরেনিয়াম ব্যবহৃত হয় না। এনরিচমেন্ট নামে বিশেষ প্রক্রিয়ার পর এগুলো ব্যবহারোপযোগী হয়। প্রাকৃতিক ইউরেনিয়ামে ২৩৮U-এর পরিমাণ থাকে প্রায় ৯৯.৩ শতাংশ, আর ২৩৫U থাকে ০.৭ শতাংশ। এনরিচমেন্টের মাধ্যমে মূলত সেগুলোতে ২৩৫U পরিমাণ নিয়ে আসা হয় প্রায় ৫ শতাংশে। ভারসাম্যপূর্ণ চেইন বিক্রিয়া পেতে এর বিকল্প নেই।পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কোরের ভেতরে এনরিচড জ্বালানিগুলো সাজিয়ে রাখা হয়। সেখানেই এদের আঘাত করা হয় বিশেষ ধরনের নিউট্রন দিয়ে। ফলে ইউরেনিয়াম-২৩৫ আইসোটোপের নিউক্লিয়াস ভেঙে উৎপন্ন করে অপেক্ষাকৃত ছোট দুটি নিউক্লিয়াস, নতুন কয়েকটি নিউট্রন ও বিপুল পরিমাণ শক্তি। সব ঠিক থাকলে নতুন…
বেঁচে থাকার জন্য খাবারের সঙ্গে লবণ প্রয়োজন। খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতে লবণের কথা বলা বাহুল্য। লবণ বা নুনের সঙ্গে মানুষের পরিচয় প্রাচীনকাল থেকে। বলা হয়, প্রাচীনকালে বাংলার গ্রামগুলো ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সমৃদ্ধ। একমাত্র লবণ ছাড়া জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব তারা তৈরি করতে পারত। ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ও এশিয়ার অনেক দেশে লবণ দিয়ে পণ্য বিনিময়ের প্রথা চালু ছিল। আর ইথিওপিয়া ও তিব্বতে তো মুদ্রা হিসেবে সরাসরি লবণ ব্যবহৃত হতো। সে যুগে রোমান সেনাদের বেতন দেওয়া হতো লবণের ক্রয়মূল্য হিসাবে। অর্থাৎ, একজন সেনা কতটুকু লবণ কিনতে পারবে, সে অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হতো। সেই ঘটনার সাক্ষী হিসেবেই ইংরেজিতে স্যালারি (Salary) শব্দের উৎপত্তি।…
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দুনিয়ায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর গুরুত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চাইলে সবার আগে গণিত ও প্রোগ্রামিংয়ের প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে। সমস্যা সমাধানের জন্য তার পেছনে লেগে থাকার মানসিকতাটাও অনেক প্রয়োজন। তারপর নিচের বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগ দেওয়া যেতে পারে: ১. কোডিং: যেকোনো একটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখে প্রবলেম সলভিং সাইট, যেমন কোডফোর্সেস, হ্যাকারর্যাঙ্কে অনুশীলন করতে হবে। ল্যাঙ্গুয়েজ মোটামুটি দখলে এলে ছোটখাটো গেম, প্রজেক্ট, কনসোল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ করা যেতে পারে। ২. ডেটা স্ট্রাকচার, অ্যালগরিদম ও অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিংয়ের প্রাথমিক বিষয়গুলো জানতে হবে। ৩. ডেটাবেজ, নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক ধারণা অর্জন করতে হবে। ডেটাবেজ অ্যাপ্লিকেশন, যেমন মাই এসকিউএল,…
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে আমরা যদি মহাবিশ্বের অতীতের ছবি দেখতে পাই, তাহলে ভবিষ্যতের ছবি কেন দেখা যাবে না? মনে করুন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস শুরুর আগে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি একেবারে সামনে পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে তাদের ছবি তুলছি। একদম সামনে যে শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে, ধরো আমার থেকে ৩ মিটার দূরে, তার থেকে আলো আমার ক্যামেরায় আসতে ১০ ন্যানোসেকেন্ড (১ ন্যানোসেকেন্ড ১ সেকেন্ডের ১০০ কোটি বা ১ বিলিয়ন ভাগের ১ ভাগ) সময় লাগবে। তার মানে সেই শিক্ষার্থীকে আমি ১০ ন্যানোসেকেন্ড অতীতে দেখছি। লাইনের একদম পেছনে যে শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে, হয়তো আমার থেকে ১০ মিটার দূরে, তার থেকে আলো আসতে সময় নিচ্ছে ৩৩ ন্যানোসেকেন্ড।…
আমরা কি সূর্যের রং বুঝতে পারি? এর উত্তর একটু জটিল। সূর্যের পৃষ্ঠদেশের তাপমাত্রা ৫ হাজার ৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো। এর ফলে এটি সর্বোচ্চ বিকিরণ করে সবুজ রঙে। আমরা যদি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে থেকে সূর্যকে দেখি, তবে সেটি আমাদের চোখে সাদা বলে অনুভূত হবে; কারণ, সবুজ ছাড়াও সূর্য অন্যান্য দৃশ্যমান আলোতেও যথেষ্ট পরিমাণ বিকিরণ করে, যার ফলে আমাদের চোখের লাল, সবুজ ও নীল শঙ্কু (Cone) সেগুলো ধারণ করে আমাদের মস্তিষ্কে সাদার উপলব্ধি জন্মায়। কিন্তু পৃথিবীর বুক থেকে দেখলে সূর্যের রং কিছুটা পাল্টায়, এর কারণ বায়ুমণ্ডল সূর্যের নীল আলোকে কিছুটা বিচ্ছুরিত করে। নীল রং কমে যাওয়ার ফলে সূর্যকে ঈষৎ হলুদ মনে হতে…
ডিম আগে, নাকি মুরগি আগে—তা নিয়ে বির্তক আছে। কিন্তু খাবার হিসেবে ডিম যে আদর্শ, এ নিয়ে কোনো বির্তক নেই। আদর্শ খাদ্যের তালিকায় মুরগির ডিমের অবস্থান একদম প্রথম সারিতে। দেহের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিনে সমৃদ্ধ হওয়ায় অনেকে একে সুপারফুডও বলেন। ভারতের টিভি চ্যানলগুলোতে প্রচারিত একটি বিজ্ঞাপনের কারণে একটা কথা বেশ জনপ্রিয়: ‘সানডে অর মানডে, রোজ খাও আন্ডে।’ অনেকেই ডিম সেদ্ধ করে খেতে পছন্দ করেন। কাঁচাও খান কেউ কেউ। হাফ বয়েল, ফুল বয়েল, অমলেট, মামলেট ইত্যাদি কতভাবেই তো ডিম খাওয়া যায়। সবারই জানা আছে, ডিমে তাপ দিলে (ভাজা বা সেদ্ধ) করলে তা শক্ত হয়ে যায়। কিন্তু কেন হয়? খোসাসহ ধরলে ডিমের তিনটি অংশ।…
দেহে প্রতিদিন যে তাপ তৈরি হয়, তা ঘাম হওয়ার কারণেই আমরা সহ্য করতে পারি। ঘামের মাধ্যমেই দেহের অতিরিক্ত তাপ দেহ থেকে বেরিয়ে যায়, দেহ রাখে ঠান্ডা। আরও ভালোভাবে বললে, মানবদেহের দুই-তৃতীয়াংশ পানি। এ পানির বড় একটি অংশ দেহকে ঠান্ডা রাখতে ঘামের মাধ্যমে বের হয়। তাই প্রতিদিন প্রচুর পানি পান করা উচিত। দৌড়ালে বা কোনো শারীরিক কাজ করলে শ্বাস-প্রশ্বাস বাড়ে। সেই সঙ্গে বাড়ে শরীরের ঘাম। কারণ দৌড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি খাদ্য পুড়িয়ে পাওয়া যায়। তাই দেহে তৈরি হয় প্রচুর তাপ। এ তাপ কমাতে ঘাম অনেক বড় ভূমিকা রাখে। আমাদের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৩৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট। এই তাপমাত্রায়…
আমাদের শরীরের চুল, নখ, মাছের আঁশ বা ঘোড়ার খুর শরীরের অন্যান্য অংশ থেকে খুব শক্ত। কী দিয়ে তৈরি প্রাণীদের এই শক্ত অঙ্গগুলো? আসলে শক্ত অংশগুলো প্রোটিন ছাড়া আর কিছুই নয়। তবে বিশেষ ধরনের প্রোটিন, নাম কেরাটিন। চুলেও এই একই প্রোটিন থাকে। এই কেরাটিন দুই প্রকারের হয়। একটা আলফা কেরাটিন, আরেকটা বিটা কেরাটিন। চুল, পশুদের শরীরের লোম বা খুর—এগুলো আলফা কেরাটিনে তৈরি। অপেক্ষাকৃত একটু বেশি শক্ত বিটা কেরাটিন। পাখিদের শক্ত ঠোঁট কিংবা সরীসৃপের শক্ত শরীরে বিটা কেরাটিন পাওয়া যায়। আলফা হোক বা বিটা—শরীরের অন্য প্রোটিনের মতোই এরা বিভিন্ন অ্যামাইনো অ্যাসিডের সমন্বয়ে তৈরি। কেরাটিন কতটা নমনীয় হবে, তা নির্ভর করে এর মধ্যে…
আপেলের বীজ বা বিচি নাকি বিষাক্ত। এটি খাওয়ার যোগ্য নয়। কথাটি কি সত্য? যদি সত্যি হয়, তবে কোন বিষাক্ত উপাদান এতে আছে, যার কারণে আপেলের বিচি বিষাক্ত? আর অন্য কোনো প্রচলিত ফলের কোনো অংশে কি এমন বিষাক্ততা আছে? দিনে একটি করে আপেল খেলে আর অসুখ-বিসুখের ভয় থাকে না, ডাক্তারেরও দরকার পড়ে না। যদি আপেলের বিচিতে বিষ থাকে, তাহলে তো মহাবিপদ। আসলে ভয়টা এসেছে একটি সামান্য ব্যাপার থেকে। আপেলের বিচিতে অ্যামিগডালিন নামের একধরনের পদার্থ থাকে। এটা পাকস্থলীর পাচক রসের সংস্পর্শে এসে সায়ানাইড নামক বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করতে পারে। কিন্তু সেটা এতই কম যে ভয়ের কোনো কারণ নেই। একটি আপেলে প্রায় আটটি…