সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চাঁদ আমাদের ছেড়ে যত দূরে চলে যাবে, তত ছোট হয়ে আসবে এর আকার। সংকোচনের কারণে দৃশ্যমানভাবে চাঁদের আকার আরও ছোট দেখাবে। একসময় পৃথিবী থেকে আমরা আর চাঁদকে দেখতে পাব না। মাসের নানা সময় আমরা পৃথিবী থেকে চাঁদকে নানা আকারে দেখতে পাই। চাঁদের কক্ষপথ পুরপুরি বৃত্তাকার নয়, উপবৃত্তাকার। ফলে পৃথিবীর কাছে এলে চাঁদ বড় দেখায়, আবার পৃথিবী থেকে দূরের বিন্দুতে অবস্থান করলে ছোট দেখায় চাঁদ। কক্ষপথের আকার পরিবর্তনের চেয়ে প্রতি মাসে চাঁদের এই পরিবর্তন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। শত শত কোটি বছর পর চাঁদের সরে যাওয়ার মারাত্মক প্রভাব দেখা যাবে পৃথিবীতে। সমুদ্রের স্রোত প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে প্রচুর সামুদ্রিক প্রাণী…
Author: Yousuf Parvez
ছোট হয়ে আসছে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ। গত কয়েক শ কোটি বছরে অন্তত ৫০ মিটার কমেছে চাঁদের ব্যাসার্ধ। চাঁদের পৃষ্ঠের থ্রাস্ট ফল্টের ছবি বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিশ্লেষণে ব্যবহৃত অতীতের ছবিগুলো তুলেছিলেন অ্যাপোলো অভিযানের নভোচারীরা। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার রোবোটিক নভোযান লুনার রিকনিসেন্স অরবিটারের তোলা ছবিও তাঁরা ব্যবহার করেছেন। গবেষকরা বলছেন, ভূমিকম্পের কারণে তৈরি চাঁদের অগভীর কিছু ভূমিকম্পকেন্দ্র এসব থ্রাস্ট ফল্টের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। চাঁদের এসব ভূমিকম্পকেন্দ্র শনাক্ত করা হয়েছিল সিসমোমিটারের সাহায্যে। তাও সেই অ্যাপোলো যুগে, অর্থাৎ অ্যাপোলো মিশন চলার সময়ে। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে মার্কিনিরা ৬টি অ্যাপোলো মিশনে মোট ১২ নভোচারীকে…
আমরা আছি মিল্কিওয়ের ভেতরে। আর এর বাইরে কোনো নভোযান, দুরবিন বা মানবনির্মিত কোনো বস্তু পাঠানো যায়নি। তাহলে বাইরে থেকে মিল্কিওয়ের ছবি তোলা হলো কীভাবে? উত্তরটা খুব সহজ: বাইরে থেকে আসলে মিল্কিওয়ের ছবি তোলাই হয়নি। তাহলে প্রশ্ন আসে, আমরা মিল্কিওয়ের যে ছবি দেখি, বেশ কিছু সর্পিল বা বাঁকানো বাহুর একটা গ্যালাক্সি—কোত্থেকে এল এই ছবি? সংশ্লিষ্ট প্রশ্ন হিসেবে মাথায় উঁকি দেবে আরেকটি বিষয়: মিল্কিওয়ের আকৃতি কেমন, সেটা কীভাবে জানলাম আমরা? আলোর বর্ণালির বিষয়টা হয়তো জানেন। হয়তো জানেন বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোর কথা। আলো একধরনের তড়িৎ-চুম্বক তরঙ্গ। এর কিছু অংশ কেবল দেখি আমরা। মোটামুটি ৩৮০-৭০০ ন্যানোমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো আমরা দেখতে পাই। একসময় বিজ্ঞানীরা এই…
মানুষ ইতিমধ্যে মহাজাগতিক পটভূমি বিকিরণের ছবি তুলেছে। তুলেছে বহুদূর কৃষ্ণগহ্বরের ইভেন্ট হরাইজন বা ঘটনা দিগন্তের ছবি। গ্যালাক্সি বা নক্ষত্রের ছবি তোলা তো জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানীদের কাছে নিত্যদিনের ঘটনা। তাই ‘মিল্কিওয়ের ছবি কীভাবে তোলা হলো’—এরকম প্রশ্ন সহসা আমাদের মাথায় আসে না। কিন্তু প্রশ্নটা মাথায় এলে এবং খানিকটা ভাবলেই টের পাওয়া যাবে, জট পাকিয়ে যাচ্ছে। চাইলে একটু থেমে ভেবে নিতে পারেন আপনি। তবে সমস্যাটা ভালোভাবে বুঝতে হলে একটা উদাহরণ সহায়ক হতে পারে। চিন্তা করুন, আপনি দাঁড়িয়ে আছেন একটা বনের ভেতরে। চারদিকে গাছপালা। এই বনের ছবি কীভাবে তুলবেন? ছবি তো তুলতেই পারবেন—সেটা বনের ভেতরের ছবি। কিন্তু বাইরে থেকে গোটা বনটা কেমন—এই ছবি তোলার উপায় কী?…
জ্যোতির্বিদ কার্ল সাগান একে বলেছিলেন ‘পেল ব্লু ডট’। কারণ মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে দেখায় ম্লান নীল একটি বিন্দুর মতো। এই গ্রহটিই আমাদের বাসস্থল। মহাবিশ্বের একমাত্র গ্রহ, যা জীবনধারণের উপযোগী। সৌরজগতের বাইরে থেকে দেখলে পৃথিবীকে বিশেষ কিছু মনে হবে না। তবে প্রাণের উপস্থিতি, তরল পানি, বায়ুমণ্ডল, প্রাণ রক্ষাকারী চুম্বকক্ষেত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে এ গ্রহের। এ গ্রহের অবস্থান সূর্যের গোল্ডিলকস অঞ্চলে। এর চেয়ে দূরে থাকলে সব পানি জমে বরফ হয়ে যেত, আর কাছে থাকলে বাষ্প হয়ে যেত। অথচ প্রাণের টিকে থাকার জন্য তরল পানি আবশ্যক। আর পৃথিবীর দুই-তৃতীয়াংশ পানিতে পূর্ণ। এই পানি কোত্থেকে এল? সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, পৃথিবীতে থাকা হাইড্রোজেনের ভূমিকা…
সম্প্রতি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যাণ্ড্রু ম্যাকার্থি নিজ বাড়ির উঠোন থেকে সৌরকলঙ্কের ছবি তুলেছেন। তাঁর ছবি তোলা এই সৌরকলঙ্কের অঞ্চলের নাম ‘এআর৩৬৯৭’। অঞ্চলটি সূর্যের দক্ষিণ পাশে। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে নিজের বাড়ি থেকে ছবিটি তুলেছেন ম্যাকার্থি। সৌরকলঙ্কের এ অঞ্চলটি আগে ‘এআর৩৬৬৪’ নামে পরিচিত ছিল। সম্প্রতি নতুন করে দৃশ্যপটে হাজির হয়েছে এটি। বেড়ে গেছে এর সক্রিয়তা। নির্গত করছে সৌরশিখা ও করোনাল ম্যাস ইজেকশন (সিএমই)। চলতি বছরের মে মাসে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধের মেরুজ্যোতি বা আরোরা যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে গিয়েছিল, দেখা গিয়েছিল পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে। সূর্যের এ সক্রিয়তা এর কারণ হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। আবার ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ও হতে পারে এর কারণ। ম্যাকার্থির তোলা ছবিটি…
পৃথিবী উদয়ের ছবি। তিনি উইলিয়াম অ্যান্ডার্স। অ্যাপোলো ৮ মিশনের এই মার্কিন নভোচারী গত ৭ জুন এক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। মৃত্যুকালে নাসার সাবেক এই নভোচারীর বয়স ছিল ৯০ বছর। দ্য সিয়াটল টাইমস পত্রিকার সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনার সময় অ্যান্ডার্স বিমানটি একাই চালাচ্ছিলেন। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের উত্তরে স্যান হুয়ান আইল্যান্ড আর্চিপেলাগোর অংশ—জোন্স আইল্যান্ড উপকূলে ক্র্যাশ করেছে। কেসিপিকিউ-টিভি সূত্রে রয়টার্স জানিয়েছে, এটি ছিল তাঁর মালিকানাধীন একটি পুরাতন এয়ারফোর্স সিঙ্গেল ইঞ্জিন টি-৩৪ মেন্টর বিমান। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার চিফ বিল নেলসন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পৃথিবীদয়ের সেই ছবি পোস্ট করে তাঁর মৃত্যুতে শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, ‘কোনো নভোচারী মানবজাতিকে যেটুকু উপহার দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন, ‘তিনি তাঁর সর্বোচ্চটুকু দিয়েছেন। মানজাতিকে…
সরাসরি সূর্যের দিকে খালি চোখে তাকানো যাবে না। তাহলে কিন্তু চোখ নষ্ট হয়ে যাবে। তখন আর কোনো বস্তুই পরিষ্কার দেখা যাবে না। কারণ, সূর্য থেকে বিচ্ছুরিত বিভিন্ন ক্ষতিকর রশ্মি চোখের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে দেয়। এমনকি সূর্যগ্রহণের সময় সব সূর্যগোলক ঢেকে গেলেও খালি চোখে সূর্যগ্রহণ দেখলে চোখ নষ্ট হয়। কারণ, সূর্য ঢেকে গেলেও এর চারপাশ দিয়ে কিছু অতিবেগুনি রশ্মি ছড়িয়ে পড়ে। এটা আলোকোজ্জ্বল না, কিন্তু সরাসরি চোখের ভেতর ঢুকলে ক্ষতি হয়। সে জন্যই সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণের জন্য বিশেষ ধরনের কালো কাচের চশমা বা অন্যান্য প্রতিরোধক ব্যবস্থা ব্যবহার করতে হয়। এখন নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ, কেন সরাসরি সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকলে এরপর অন্য কিছু…
মঙ্গলের বিষুবীয় অঞ্চলে তুষার বা বরফের অস্তিত্ব একসময় অসম্ভব বলে মনে করা হতো বলে জানিয়েছেন ভ্যালেন্তিনাস। তিনি বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, মঙ্গলের বিষুবীয় অঞ্চলে তুষার জমা অসম্ভব। পাতলা বায়ুমণ্ডল ও সূর্যের আলো মিলে এসব পর্বতচূড়ায় তাপমাত্রা থাকে অনেক বেশি। পৃথিবীতে আমরা যেমন পর্বতচূড়ায় তুষার জমতে দেখি, এরকম নয়। এই তুষারের অস্তিত্ব একদিকে যেমন দারুণ উত্তেজনাকর, তেমনি এটি ইঙ্গিত করছে, অন্যরকম কিছু ঘটছে এখানে, যার ফলে তুষার জমতে পারছে।’ তুষারের এই পাতলা আবরণ জমেছিল মঙ্গলে সূর্যোদয়ের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে। তারপর সূর্যোদয়ের ফলে এগুলো বাষ্পীভূত হয়ে গেছে। তুষারের এ আবরণ ছিল অত্যন্ত পাতলা—মানুষের চুলের মতো পলকা (এক মিলিমিটারের একশ ভাগের এক ভাগের…
প্রাণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত পানি। সেই জমাট পানির তুষার পাওয়া গেছে মঙ্গলের বিষুবীয় অঞ্চলে। এ আবিষ্কারের ফলে তাই উত্তেজনা হাওয়া লেগেছে বিজ্ঞান সমাজে। কীভাবে পাওয়া গেল এই তুষারের সন্ধান? কেন এটি এত গুরুত্বপূর্ণ? প্রথমবারের মতো মঙ্গলের বিষুবীয় অঞ্চলে তুষারের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। লাল এ গ্রহের ট্রপিক্যাল এবং বিষুবীয় অঞ্চলে এ ধরনের ‘জলজ তুষার’ থাকার বিষয়টিকে এতদিন অসম্ভব বলেই ভাবা হতো। শুধু বৈজ্ঞানিক গবেষণার দিক থেকেই নয়, মানুষের মঙ্গল অভিযানের জন্যও এটাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এ আবিষ্কার সংক্রান্ত গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে বিখ্যাত জার্নাল নেচার জিওসায়েন্স-এ। এই তুষার শনাক্ত করেছে ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসার নভোযান এক্সোমার্স ট্রেস গ্যাস অর্বিটার…
সৌরজগতের চতুর্থ গ্রহ মঙ্গল। রোমানদের যুদ্ধের দেবতা মার্সের নামে এর নামকরণ করা হয়েছে। ১৬১০ সালে গ্যালিলিও গ্যালিলি প্রথম টেলিস্কোপের সাহায্যে গ্রহটি পর্যবেক্ষণ করেন। ভবিষ্যতে মঙ্গলে যাওয়ার জন্য এখনই প্রস্তুতি নিচ্ছে পৃথিবীবাসী। হয়তো একদিন মানুষ লাল গ্রহটিতে বসবাস করবে। তাই এই গ্রহ নিয়ে আমাদের আগ্রহ বেশি। বিভিন্ন দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইতিমধ্যে গ্রহটিতে নানা অভিযান চালিয়েছে। পাঠিয়েছে ল্যান্ডার, রোভার, ড্রোন—এমনকি ছোট হেলিকপ্টার। মঙ্গলের কেন্দ্রে রয়েছে লোহা ও নিকেল। মঙ্গলের কোরের ব্যাস প্রায় ২ হাজার ১২০ মাইল। এর বায়ুমণ্ডল অত্যন্ত পাতলা। ৯৬ শতাংশ কার্বন ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন ও আর্গন ১.৯ শতাংশ। বায়ুমণ্ডল পাতলা হওয়ায় উল্কা, গ্রহাণু ও ধূমকেতু অনবরত আঘাত করে এর পৃষ্ঠে।…
ভরে ও আয়তনের সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি। সৌরজগতের বাকি সব গ্রহের মোট ভরের দ্বিগুণ সে একাই। সে জন্য একে বলে গ্রহরাজ। গঠনের দিক থেকে গ্যাসদানব। এতে ৩০০ বছর ধরে চলছে প্রকাণ্ড এক ঝড়। লালচে দেখায় বলে একে বৃহস্পতির ‘গ্রেট রেড স্পট’ বলা হয়। সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি। গ্রহটি এত বড় যে এর মধ্যে ১ হাজার ৩০০ পৃথিবী অনায়াসে ঢুকে যাবে। গ্রহটি বড় হলেও দিনের দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ ঘণ্টার। তবে সূর্যের চারপাশে একবার ঘুরতে সময় লাগে প্রায় ৪ হাজার ৩৩৩ দিন। গ্রহটি গ্যাসীয়। ফলে এর কোনো পাথুরে পৃষ্ঠ নেই। স্বভাবতই সেখানে কোনো নভোযান অবতরণ করতে পারবে না। আবার কোনো…
বলয়ের জন্য শনি গ্রহ বিখ্যাত। এর ৭টি মনোমুগ্ধকর বলয় আছে। সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহ। সূর্য থেকে দূরত্বের দিক থেকে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। খালি চোখে দেখা যায়, এমন গ্রহের মধ্যে শনিই সবচেয়ে দূরে। পৃথিবী থেকে গ্রহটির দূরত্ব ১৫৯.০৬ কোটি কিলোমিটার। প্রাচীনকাল থেকেই এ গ্রহের কথা জানতো মানুষ। ১৬১০ সালে টেলিস্কোপের সাহায্যে প্রথম গ্রহটি দেখেন গ্যালিলিও গ্যালিলি। ১৬৫৯ সালে শনির বলয়ের রহস্য ভেদ করেন ডাচ জ্যোতির্বিদ ক্রিস্টিয়ান হাইগেনস। রোমান কৃষিদেবতা স্যাটার্নের নামানুসারে গ্রহটির নাম রাখা হয়ে স্যাটার্ন বা শনি। বর্তমানে শনির মোট উপগ্রহ ১৪৬টি। এর চেয়ে বেশি উপগ্রহ আর কোনো গ্রহের নেই। ভবিষ্যতে এ গ্রহের আরও উপগ্রহ আবিষ্কার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটা…
ইউরেনাস আবিষ্কার করেন উইলিয়াম হার্শেল। গ্রিক আকাশদেবতার নামে এর নাম রাখা হয় ইউরেনাস। এর কেন্দ্রেও সম্ভবত হীরার সমুদ্র আছে। সৌরজগতের সপ্তম গ্রহ। দূর থেকেই টের পাওয়া যায় এর একটি বিশেষত্ব—চমৎকার বলয় ঘিরে আছে ইউরেনাসকে। আসলে দুটি বলয়ব্যবস্থা। অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থায় আছে নয়টি বলয়। দেখতে ধূসর, সরু। বাইরের ব্যবস্থার দুটি বলয়ের ভেতরেরটি দেখতে লালচে, বাইরেরটি আবার নীলচে! গ্রহটিকে তাই ছবিতে অনিন্দ্যসুন্দর দেখায়। মোট ২৮টি উপগ্রহবিশিষ্ট দানব গ্রহ এই ইউরেনাস। ব্যাসের হিসাবে পৃথিবীর মাত্র চার গুণ বড়। তবে আয়তনে এত বিশাল যে এর ভেতরে এঁটে যাবে ৬৩টি পৃথিবী! নিজ কক্ষপথের তুলনায় প্রায় ৯০ ডিগ্রি কোণে হেলে আছে। এটি ইউরেনাসের আরেক অনন্য বৈশিষ্ট্য। দেখে…
সৌরজগতের সবচেয়ে দূরের গ্রহ এটি। নেপচুনের বায়ুপ্রবাহকে বলে সুপারসনিক বাতাস। কারণ সৌরজগতের সবচেয়ে গতিশীল বায়ুপ্রবাহ ঘটে এখানে। পৃথিবী ছাড়া সৌরজগতের আরেকটি গ্রহের রং নীলচে। নাম নেপচুন। এটি সৌরজগতের সবচেয়ে দূরের গ্রহ। সূর্য থেকে গড় দূরত্ব প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি কিলোমিটার। পৃথিবী থেকে সূর্যের যে দূরত্ব, তার চেয়েও প্রায় ৩০ গুণ বেশি। সূর্য থেকে নেপচুনে আলো পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় চার ঘণ্টা। গ্রহটিতে দিন-রাত হয় মাত্র ১৬ ঘণ্টায়। তবে বছরের দৈর্ঘ্যটা বেশি। সূর্যের চারপাশে একবার ঘুরে আসতে সময় লাগে প্রায় ১৬৫ বছর। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এ গ্রহটি আবিষ্কারের আগে এর উপগ্রহ ট্রাইটন আবিষ্কার হয়। ১৮৬৪ সালে উপগ্রহটি খুঁজে পান উইলিয়াম ল্যাসেল।…
গ্রহত্ব হারিয়ে প্লুটো এখন বামন গ্রহ। সূর্য থেকে এতে আলো পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ৫ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। প্লুটোর পাতলা বায়ুমণ্ডল আছে। এর বেশির ভাগই নাইট্রোজেন, মিথেন ও কার্বন মনোক্সাইড। এ বামন গ্রহের গড় তাপমাত্রা মাইনাস ২৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে এখানে বেঁচে থাকা অসম্ভব। ১৯৩০ সালে আবিষ্কারের পর ১১ বছর বয়সী এক মেয়ে এর নামকরণ করে। তখন অবশ্য এটি গ্রহের মর্যাদা পেয়েছিল। পরে কুইপার বেল্টে এ রকম আরও কিছু বামন গ্রহ আবিষ্কারের পর আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়ন ২০০৬ সালে প্লুটোকে বামন গ্রহ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করে। গ্রহের মর্যাদা হারানোর মূল কারণ এর আকৃতি। এর আকার পৃথিবীর তুলনায় মাত্র ১৮.৫ শতাংশ। প্লুটোকে প্রদক্ষিণ…
লিথুনিয়াভিত্তিক ন্যানো এভিয়নিকস ওয়েবসাইটের তথ্য মতে, বর্তমানে পৃথিবীর লো অ্যান্ড হাই অরবিটে প্রায় ৯ হাজার ৯০০টি স্যাটেলাইট চালু রয়েছে। এর মধ্যে একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রেরই আছে ৮ হাজার ১৩৭টি স্যাটেলাইট। এ ছাড়া চীন ৬৮৬টি, যুক্তরাজ্য ৬৫৮টি, ভারত ১০৫টি, জাপান ২০৯টি এবং বাংলাদেশ ১টি স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের আমল থেকে বর্তমানে রাশিয়া এখন পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৫৫২টি স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে পৃথিবীর কক্ষপথে। বর্তমানে অচল হয়ে পড়া স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীর কক্ষপথে সচল স্যাটেলাইটগুলোর জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করেছে। হাজার হাজার স্যাটেলাইটের অচল অংশ পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরে বেড়ানোর ফলে মাঝেমধ্যে সংঘর্ষও হচ্ছে সচল স্যাটেলাইটগুলোর সঙ্গে। অনেকগুলো আবার নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে ধ্বংস হয়ে…
ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসার তথ্যমতে, পৃথিবীর কক্ষপথে বর্তমানে প্রায় ১৩ কোটি ১৪ লাখের বেশি ছোট-বড় মহাকাশীয় বর্জ্য বা স্পেস জাঙ্ক ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এর মধ্যে ১০ সেন্টিমিটারের চেয়ে বড় আকারের বর্জ্য আছে প্রায় ৩৬ হাজার ৫০০টি। আর ১-১০ সেন্টিমিটারের ছোট বর্জ্য রয়েছে ১০ লাখের বেশি। আবার ১ মিলিমিটার থেকে ১ সেন্টিমিটার আকারের বর্জ্য রয়েছে প্রায় ১৩ কোটি। পৃথিবীর কক্ষপথে এগুলো ছুটে বেড়াচ্ছে বিক্ষিপ্তভাবে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, মানুষের পাঠানো বেশির ভাগ স্পেস জাঙ্ক খুব দ্রুত লো-আর্থ অরবিটে চলে এসেছে। এর গতি অবিশ্বাস্যরকম বেশি। ঘণ্টায় গড় বেগ প্রায় ২৮ হাজার ৯৬৮ কিলোমিটার। এই গতি একটা বুলেটের চেয়েও প্রায়…
কোনো এক সুন্দর সন্ধ্যায়, যখন অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে, এসো, সেই সময় মাঠে যাওয়া যাক, কিংবা যাওয়া যাক সমুদ্রের তীরে, কোনো একটা খোলামেলা জায়গায়, যেখানে ঘরবাড়ি বা গাছপালা আকাশ আড়াল করে দাঁড়িয়ে নেই। আরও দেখতে হবে সেখানে যেন কোনো রাস্তার আলো না থাকে, জানালার বাতি চোখে না পড়ে। মোট কথা, জায়গাটা হতে হবে ঘুটঘুটে অন্ধকার। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখ! আকাশে কত তারা! সবগুলো কেমন ধারালো-খরশান। দেখে মনে হয় যেন একটা কালো চাঁদোয়ার গায়ে ছুঁচ ফুটিয়ে ছোট ছোট ছেঁদা করা হয়েছে, আর সেগুলোর আড়ালে ঝিকমিক করছে নীল নীল আলো। আর তারাগুলো কতই না বিচিত্র! ছোট, বড়, নীলচে, হলদেটে; কতক তারা সম্পূর্ণ একা,…
সম্প্রতি চাঁদের অন্ধকার অঞ্চল বা উল্টো পাশ থেকে নমুনা নিয়ে ফিরেছে চীনের নভোযান চাঙ-ই ৬। এখন পর্যন্ত এটাই চাঁদের সবচেয়ে দূরবর্তী অঞ্চল থেকে নমুনা নিয়ে ফেরার রেকর্ড। গত ২৫ জুন, মঙ্গলবার চাঙ-ই ৬ মিশনের চাঁদের নমুনা সংবলিত ক্যাপসুলটি মঙ্গোলিয়ার মরুভূমিতে অবতরণ করে। সেখান থেকে নমুনা পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে চীনের বেইজিংয়ে। চীনই একমাত্র দেশ, যারা চাঁদের এতটা দূরে মহাকাশযান পাঠিয়ে নমুনা সংগ্রহ করছে। তবে এটা প্রথম নয়। এর আগেও রাশিয়া (সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন), যুক্তরাষ্ট্র, এমনকি চীনও মহাকাশযান পাঠিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছে। ১৯৬৯-১৯৭২ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ৬টি অ্যাপোলো মিশনে চাঁদে পাঠিয়েছে ১২ নভোচারীকে। তারা চাঁদ থেকে অনেক নমুনা সংগ্রহ করে…
গত ৩ মে শুক্রবার চীনের হাইনান থেকে চাঙ-ই ৬ উৎক্ষেপণ করা হয়। ১ জুন এটি চাঁদের অ্যাপোলো ক্রেটার বা খাদে অবতরণ করে। রোবটিক হাতের সাহায্যে ওই খাদ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এটি। একটি স্কুপ ও ড্রিলের সাহায্যে চাঁদ থেকে প্রায় ২ কেজি নমুনা সংগ্রহ করেছে ল্যান্ডারটি। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবস্থিত এই খাদ প্রায় ২ হাজার ৫০০ কিলোমিটার প্রশস্ত। চাঙ-ই ৬ চারটি মডিউল নিয়ে গঠিত। একটি চন্দ্রল্যান্ডার, একটি রিটার্ন ক্যাপসুল, একটি অরবিটার ও একটি আরোহী (ল্যান্ডার দিয়ে বহন করা একটা ছোট রকেট)। এই রিটার্ন ক্যাপসুল ২১ জুন সংগৃহীত নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে যাত্রা শুরু করে, ২৫ জুন ফিরে আসে পৃথিবীতে। প্ল্যানেটারি সোসাইটির…
আমাদের দেশে এখন গড় আয়ু প্রায় ৭২.৮ বছর। তবে শতায়ু মানুষও আছেন। এখন পর্যন্ত বিশ্ব রেকর্ড ১২২ বছর। তিনি একজন ফরাসি নারী। নাম জ্যঁক্যালমেঁ (Jeanne Calment)। ১৯৯৭ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বর্তমানে জাপানে মানুষের গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি। এক হিসাবে জানা গেছে, ২০৪০ সালে স্পেন জাপানকে ছাড়িয়ে যাবে। সেখানে গড় আয়ু হবে ৮৬ বছর। মানুষের আয়ু নিয়ে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস–এর সায়েন্স টাইমস–এ (১৯ নভেম্বর ২০১৮) প্রকাশিত একটি লেখায় উল্লেখ করা হয়েছে, সর্বোচ্চ আয়ু হতে পারে ১১৫। একদল বিজ্ঞানী গবেষণা করে ২০১৬ সালে এ তথ্য দিয়েছেন। শিকাগোর ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক গবেষণা করে জানিয়েছেন, মানুষের সর্বোচ্চ স্বাভাবিক আয়ু ৮৫ হতে পারে।…
মানে ৩৬৫ দিন। অর্থাৎ প্রতি ৩৬৫ দিনে পৃথিবীর এক বছর পূর্ণ হয়; আদতে এ সময়ে সূর্যকে একবার ঘিরে পুরোটা কক্ষপথ চক্কর দেয় পৃথিবী। এই একবার চক্কর দেওয়াকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় বার্ষিক গতি। আবার পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘোরার সঙ্গে সঙ্গে নিজের চারপাশেও ঘোরে। নিজ অক্ষের চারপাশে পৃথিবীর এ ঘূর্ণনকে বলে আহ্নিক গতি। বিষয়টা আরেকটু স্পষ্ট করে বলি। পাঠক নিশ্চয়ই লাটিম চেনেন। লাটিম নিজের চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে আবার নির্দিষ্ট জায়গাকে কেন্দ্র করেও ঘোরে। পৃথিবীও ঠিক একই কাজ করে। নিজে ঘুরতে ঘুরতে লাটিমের মতো সূর্যের চারপাশেও ঘোরে। এই যে নিজের চারপাশে ঘোরা—এটাই দিন; যাকে সঠিকভাবে বলা হয় নিজ অক্ষের চারপাশে ঘোরা। এভাবে…
২০২৪ সালের প্রথম ‘ব্লু সুপারমুন’ দেখা যাবে ২০ আগস্ট, মঙ্গলবার। বাংলাদেশ সময় রাত ১২.২৫ মিনিটে (১৯ তারিখ দিবাগত রাত বা ২০ তারিখ) স্পষ্ট দেখা যাবে এই ব্লু সুপারমুন। অর্থাৎ আজ রাত সাড়ে ১২ টার দিকে আকাশে এই চাঁদ দেখা যাবে। প্রশ্ন হলো, কীভাবে দেখবেন? সাধারণত খালি চোখেই চাঁদ দেখা যায়। এই বিশেষ চাঁদও খালি চোখেই দেখা যাবে। কিন্তু বাংলাদেশের আবহাওয়া বর্ষাকালে প্রায়ই খারাপ থাকে, মেঘে ঢেকে যায় আকাশ। তা ছাড়া ঢাকার আকাশে ধুলা প্রচুর। তাই এই চাঁদ দেখা কিছুটা কষ্টকর হতে পারে। সে জন্য নদীর পাড়ে বা কোনো খোলা মাঠে গেলে চাঁদ দেখার ভালো সম্ভাবনা থাকবে। তাই সম্ভব হলে রাতে…