ফটোসিনথিসিস শব্দটার মধ্যেই তোমার প্রশ্নের উত্তর রয়েছে। ফটো মানে আলো। আলোর সাহায্যে গাছের খাদ্য তৈরি করাই হলো সালোকসংশ্লেষণ। আলো ছাড়া সালোকসংশ্লেষণ হতে পারে না। সূর্যের আলোতে সালোকসংশ্লেষণ সবচেয়ে ভালোভাবে ঘটে। এখন প্রশ্ন হলো সেই আলো কি শুধু সূর্যেরই হতে হবে? না, ঘরের বাতির আলোতেও চলে। তবে সেটা হতে হবে সালোকসংশ্লেষণের জন্য উপযুক্ত। গাছের সবুজ পাতায় থাকে ক্লোরোফিল। মাটি থেকে পানি, বাতাস থেকে কার্বন ডাই–অক্সাইড ও সূর্যের আলো থেকে শক্তি নিয়ে গাছ তার খাদ্য তৈরি করে। সূর্যের আলোয় প্রচুর হলুদ রং থাকে। সেখানে সাত রঙের চমৎকার সমন্বয় ঘটে। এতে গাছের বৃদ্ধি ঘটে এবং গাছ ফুলে–ফলে শোভিত হয়। কৃত্রিম আলোয় যদি লাল…
Author: Yousuf Parvez
১৯৬০-এর দশকের প্রথম দিকে মারে গেল-মান তাঁর অষ্টাঙ্গিক পন্থা অবলম্বন করে প্রোটন ও নিউট্রনের অভ্যন্তরে কোয়ার্ক নামের ভগ্নাংশ তড়িৎ আধানের মৌলিক কণার ভাবীকথন করেছিলেন। তাঁর পদ্ধতি আপ (u, ওপর), ডাউন (d, নিচ) এবং স্ট্রেঞ্জ (s, অদ্ভুত) কোয়ার্কের অস্তিত্ব নির্দেশ করে। এর আগে আমরা বিজ্ঞানচিন্তায় মারে-গেলমানের এই পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছিলাম। ছবি ১-এ সেই অষ্টাঙ্গিক পন্থা বর্ণিত হয়েছে। মোট তিনটি অক্ষ দিয়ে কিছু কণার বৈশিষ্ট্য দেখানো হয়েছে। এই অক্ষগুলো হলো I3 (আইসোস্পিন), S (স্ট্রেঞ্জনেস, strangeness) এবং Q (তড়িৎ আধান)। যেমন প্রোটন দুটি u এবং একটি d কোয়ার্কের সমষ্টি, সেটির স্ট্রেঞ্জনেস হলো ০, আইসোস্পিন হলো ১/২ এবং তড়িৎ আধান +১। অন্যদিকে Ξ–…
পেঁয়াজের ঝাঁজে চোখ জ্বালা করে আর পানি আসে। এই অভিজ্ঞতা আমাদের সবারই আছে। কিন্তু এই ঝাঁজ আসে কোথা থেকে? পেঁয়াজ, রসুন প্রভৃতির গাছ মাটি থেকে সালফার গ্রহণ করে। পেঁয়াজ কাটার সময় অ্যালিনাস জাতীয় এনজাইম নিঃসৃত হয়, যা অ্যামিনো এসিড সালোক্সাইডকে ভেঙে ফেলে। এ সময় ১- প্রোপেনসালফেনিক এসিড নামে একটি যৌগ তৈরি হয়। এই যৌগটি থেকে পর্যায়ক্রমে সিনপ্রোপানেথিয়াল-এস-অক্সাইড নামে একটি গ্যাস তৈরি হয়। পেঁয়াজের কোষ কাটার ৩০ সেকেন্ডের মাঝেই গ্যাসটি সর্বোচ্চ পরিমাণে তৈরি হয়। এই উদ্বায়ী গ্যাসটি যখন চোখের ভেতরের ভেজা অংশের সংস্পর্শে আসে, তখন চোখের সিলিয়ারি স্নায়ুর মাধ্যমে জ্বালাপোড়ার অনুভূতি সৃষ্টি হয়। চোখের পাতার ওপরের দিকে থাকে একধরনের গ্ল্যান্ড বা…
প্রথমে একটু অবাক লাগে। কৃত্রিম সূর্যগ্রহণ আবার কীভাবে সম্ভব! পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে চাঁদ এলে তবেই না সূর্যগ্রহণ, তাই না? তাহলে এখানে কৃত্রিম কিছু কীভাবে সম্ভব? কিন্তু কল্পনা করুন, আমরা একটা কৃত্রিম চাঁদ আকাশে ছাড়লাম। এটা মাঝেমধ্যেই সূর্যকে ঢেকে ফেলবে। তাহলে? সূর্যগ্রহণে সমস্যা কোথায়? হ্যাঁ, এটা ঠিক। কিন্তু এতে লাভ? কেন এত খরচ করে কৃত্রিম সূর্যগ্রহণ দরকার? হয়তো অনেকে বলবেন, গবেষণা করা, সূর্য সম্পর্কে আরও জানাবোঝার জন্য তো লাগতেই পারে এ রকম সূর্যগ্রহণ। তবে এর চেয়েও বড় একটি প্রয়োজনের কথা আমরা ভাবতে পারি। গত ১১ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রে সূর্যগ্রহণের সময় কয়েক ডিগ্রি তাপমাত্রা কমে গিয়েছিল। সূর্য ঢেকে যাওয়ায় সৌরশক্তি পৃথিবীতে পৌঁছাতে…
আমরা অবশ্য এটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করি না। চাঁদ ঘুরছে পৃথিবীর চারদিকে, এটাই শুধু আমরা জানি, দেখি ও বলি। পূর্ণিমা-অমাবস্যা, জোয়ার-ভাটা এসবই চাঁদের ব্যাপারে আমাদের মূল বিবেচ্য বিষয়। কিন্তু পৃথিবী যে বছরে একবার সূর্যের চারদিক ঘুরে আসছে আর সেই সঙ্গে চাঁদও সূর্য প্রদক্ষিণ করছে, সেটা আমরা সাধারণত মনে রাখি না। তাই এককথায় বলা যায়, চাঁদও সূর্য প্রদক্ষিণ করছে। তবে একটু বৈশিষ্ট্যপূর্ণভাবে। পৃথিবী যেমন মসৃণ গতিতে ঘুরছে, ঠিক সেইভাবে নয়। চাঁদের সূর্য প্রদক্ষিণ একেবারে নিস্তরঙ্গ নয়। মোটামুটি মাসে একবার চাঁদ পৃথিবী প্রদক্ষিণ করছে। কিন্তু তার কক্ষ-প্রদক্ষিণ গতি কম। পৃথিবীর ব্যাসের প্রায় ৩০ গুণ দূর থেকে সে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করছে। এ…
ধরা যাক, পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ শুরু হয়েছে। ঘটনাক্রমে এ সময় আপনি চাঁদে বেড়াতে গেছেন। সেখান থেকে আপনি পৃথিবীকে কেমন দেখবেন? এটা যদিও অনেকটা কল্পিত একটি অবস্থান। কিন্তু এটা তো আমরা ভাবতেই পারি, চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ থেকে পৃথিবী কেমন দেখায়? আমরা তো পৃথিবী থেকে দেখি, চাঁদ ধীরে ধীরে ঢেকে যাচ্ছে। পৃথিবীর ছায়া চাঁদকে গ্রাস করছে। আর সেই সময় চাঁদ থেকে পৃথিবীকে একটি অন্ধকার গোলকের মতো দেখা যাবে। সেই গোলকের চারপাশে উজ্জ্বল লাল-কমলা রঙের আভার বিচ্ছুরণ ঘটবে। যেমন ঘটে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের সময়। ফলে চাঁদ থেকে পৃথিবীকে দেখাবে লালাভ রশ্মিঘেরা একটি কালো থালার মতো। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল সব সময় সূর্যরশ্মি বিক্ষিপ্ত (স্ক্যাটারিং) করে। ফলে…
বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, আমেরিকায় আয়োডিনযুক্ত লবণ সাধারণ দোকানে পাওয়া যায় না। সেখানে লবণে আয়োডিন যুক্ত করা হয় না। তাদের দরকারও হয় না। একজন প্রবাসী বাঙালি এতে অবাক হন। অনেক খুঁজে এক দোকান থেকে বেশি দামে আয়োডিনযুক্ত লবণ কেনেন। কিন্তু খেতে বিস্বাদ। যেহেতু বাংলাদেশে আমাদের আয়োডিনযুক্ত লবণ খেতে হয়, তাই তিনি দুশ্চিন্তায় ছিলেন। কিন্তু পরে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় (২১ জুলাই ২০১৭) এ বিষয়ে একটি লেখা পড়ে জানলেন, কেন ইউরোপ-আমেরিকায় লবণে আয়োডিন লাগে না। তাহলে বাংলাদেশে কেন লাগে? লাগে, কারণ আমাদের দেশে বন্যা হয়, আমেরিকা-ইউরোপে এই দুর্যোগ খুব কম। প্রশ্ন হলো বন্যার সঙ্গে আয়োডিনের সম্পর্ক কী? আয়োডিনের অভাব হলে…
এই সংখ্যাটি গণিতের জন্য নিবেদিত। তাই গণিতের কয়েকটি কার্যকারণ সমস্যার কথা বলি। যেমন ধরুন তরুণ শিক্ষার্থীদের এক গণিত অনুশীলন অনুষ্ঠানে গিয়েছি। সবাই সমস্বরে চেঁচিয়ে বলল, একটা মজার ধাঁধা চাই। আমি চট করে বললাম, সবাই খাতা-কলম নিয়ে লেখো। প্রথমে যার যার জন্ম সাল লেখো। এর নিচে তোমাদের ছোট ভাই বা বোনের জন্ম সাল লেখো। এর নিচে তোমাদের যার যার বয়স লেখো। তারপর লেখো তোমাদের ভাই বা বোনের বয়স। এবার রহস্য করে বললাম, তোমাদের প্রত্যেকের বয়স ও জন্ম সাল আলাদা, ঠিক কি না? তোমাদের ভাই ও বোনদের বয়স ও জন্ম সাল আলাদা, ঠিক কি না? এবার তাদের বললাম, সবাই সংখ্যা চারটির যোগফল…
ফোবিয়া হলো একধরনের অযৌক্তিক ভীতি। যেমন লিফটে উঠতে ভয় ভয় লাগে। এর কোনো ভিত্তি নেই। কিন্তু কারও কারও মনের মধ্যে লিফটে ওপরে ওঠা বা নিচে নামার সময় মানসিক আতঙ্ক হয়। ফলে তাদের সিঁড়ি ভেঙে উঠতে হয়। কারও উচ্চতাভীতি থাকে। ১৫-২০ তলা ভবনে উঠলে মাথা ঝিমঝিম করে। ভয় লাগে। হয়তো তারা বোঝে যে ভয়ের কোনো কারণ নেই। কিন্তু তারপরও ভয় দূর হয় না। এটা যুক্তির ধার ধারে না। মনের অজান্তেই ফোবিয়া মনকে আতঙ্কিত করে তোলে। এ ধরনের ফোবিয়া দূর করার জন্য মনে আস্থা সৃষ্টি করতে হবে। বিজ্ঞানমনস্কতা এ ক্ষেত্রে বেশ সাহায্য করতে পারে। যুক্তি দিয়ে যদি বুঝতে পারি যে এ ধরনের…
মনে হয় মহাশূন্য একেবারে ফাঁকা। সেখানে অনেক দূরে দূরে গ্রহ-নক্ষত্র রয়েছে। বাকি অংশ হয়তো একেবারে শূন্য। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গাড়ির ধোঁয়া, ইট-পাথরে গড়া শহরের ধূলিকণায় বায়ুদূষণ ঘটে, সে কথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু মহাশূন্যে তো সেসব উপদ্রব নেই। তাই আমাদের সাধারণ ধারণা, মহাশূন্য একেবারে পরিষ্কার। কিন্তু মাঝখানে যে মহাজাগতিক ধূলিকণা (কসমিক ডাস্ট) রয়েছে, সে সম্পর্কে খুব বেশি চিন্তা করি না। এগুলো কী, কোথা থেকে আসে, এদের গঠনবৈশিষ্ট্য কী-এসব প্রশ্ন নাসার মহাশূন্য গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। তাদের গবেষণায় জানা গেছে, এই মহাবিশ্বে প্রচুর মহাজাগতিক ধূলিকণা আছে। এদের অনেক সময় স্টারডাস্ট বা নাক্ষত্রিক ধূলিকণা বলা হয়। কিন্তু শুধু নক্ষত্র নয়, ওগুলো ছড়িয়ে…
মানুষের চোখ স্টেরিওস্কোপিক দৃশ্য ধারণের উপযোগী বলে একই সঙ্গে দুই চোখে দুই দিকে দেখা সম্ভব হয় না। স্টেরিওস্কোপিক অর্থ হলো দুটি চোখ একই বস্তুর একটু ভিন্ন কোণ থেকে দেখে এবং স্নায়ুতন্তুর মাধ্যমে এমনভাবে সংযুক্ত থাকে যে দুই চোখে দেখা দৃশ্য সুসমন্বিতভাবে মস্তিষ্কে একটি দৃশ্য হিসেবে অনুভূত হয়। এর ফলে যেকোনো বস্তুর ত্রিমাত্রিক দৃশ্য আমরা দেখতে পাই। অর্থাত্ বস্তুর শুধু দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ নয়, এর বেধ বা গভীরতাও বুঝতে পারি। পাখি, হাঁস, মুরগি প্রভৃতি প্রাণী এটা পারে না। তাদের দুই চোখ মাথার দুই দিকে থাকে। ফলে ওরা দুই চোখে দুই পাশ দেখতে পারে। যদিও আমাদের দুই চোখের পেশিতন্তু স্বাধীনভাবে কাজ করে…
আমরা বেঁচে থাকার জন্য বায়ু থেকে অক্সিজেন নিই। কিন্তু বায়ুতে তো আরও অনেক বিষাক্ত গ্যাস যেমন—কার্বন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন ইত্যাদি থাকে। এগুলো কি আমাদের শ্বাস গ্রহণে আসে? শ্বাস গ্রহণের সময় তো অবশ্যই ধুলাবালুসহ অন্য সব গ্যাস আমরা গ্রহণ করি। সাধারণ হিসাব অনুযায়ী বাতাসের শতকরা প্রায় ৭৮ ভাগ নাইট্রোজেন। এটি একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস। এরপরই অক্সিজেন। শতকরা প্রায় ২১ ভাগ। আর রয়েছে সামান্য পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড, নিয়ন, হিলিয়াম, হাইড্রোজেন প্রভৃতি গ্যাস। এর মধ্যে শুধু অক্সিজেন গ্রহণ করে আমাদের রক্ত পরিশোধিত হয় এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড শরীর থেকে বের করে দেয়। আমরা নিশ্বাসে যে বাতাস গ্রহণ করি তাতে ধুলোবালিসহ সব গ্যাসই থাকে।…
সাধারণত আমরা খুব স্বাভাবিক বলে ধরে নিই। বলি, আলো সূর্য দেবে না তো কে দেবে? সূর্যের আলো ছাড়া পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকত না। প্রায় সাড়ে চার শ কোটি বছর ধরে সূর্য জ্বলছে। কিন্তু এটা ঠিক কাঠ পোড়ানোর মতো নয়। সূর্যের মহাকর্ষ বল (গ্র্যাভিটি) তার সব ভর ভেতরের দিকে টেনে রাখছে। ফলে সৃষ্ট প্রচণ্ড চাপ ও তাপ হাইড্রোজেন পরমাণুগুলোকে একত্র করে পারমাণবিক বিক্রিয়া ঘটায়। অনেকটা নিউক্লিয়ার বোমার মতোই। এখানে সৃষ্ট তাপ থেকে ইনফ্রারেড রশ্মি, আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি ও দৃশ্যমান আলোকরশ্মিসহ আরও অনেক ধরনের আলোক রশ্মি বের হয়। মাইক্রো ওয়েভ, রেডিও ওয়েভ, এক্স-রে প্রভৃতিও সূর্য থেকে আসে। কিন্তু সূর্যের কেন্দ্রের এই পারমাণবিক বিক্রিয়া…
মশার জ্বালায় সবাই অস্থির। সিটি করপোরেশন তো রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ির ভেতরে পর্যন্ত ওষুধ স্প্রে করেও কূলকিনারা পাচ্ছে না। বাসায় মশার কয়েল জ্বালাই। কত ধরনের স্প্রে করি। তাতে মশার উপদ্রব কমে বটে, কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই ফিরে আসে। তাই মশার হাত থেকে বাঁচার একটি সাধারণ ব্যবস্থা হিসেবে আমরা নিজের গালে, হাতে, মুখে চাপড় মারি। কিন্তু মশা তার আগেই চম্পট দেয়। তবে আমরা যদি সব সময় হাত দিয়ে মশা তাড়াই, তাহলে মশারাও কিন্তু হাল ছেড়ে দেয়। যে ব্যক্তি বেশি হাত নেড়ে মশা মারার চেষ্টা করেন, মশারা টের পেয়ে যায় যে তিনি সাংঘাতিক লোক। তাই তাঁকে এড়িয়ে চলে। আমরা যেমন বিপদ এড়িয়ে চলি, মশারাও তেমনি…
আমরা জানি π একটি অমূলদ সংখ্যা। আবার আমরা π কে ২২/৭ আকারে লিখি। π যদি অমূলদ সংখ্যা হয়, তাহলে তো তাকে ভগ্নাংশ আকারে লেখা যাবে না। ব্যাপারটা আসলে কী? আসলে π কে অনেক সময় ২২/৭ দিয়ে প্রকাশ করা হয় নিকটবর্তী মান হিসেবে। π-এর মান আসলে ২২/৭ নয়। কিন্তু বাস্তব জীবনে হিসাব-নিকাশ সহজে করার জন্য এই অনুপাতটি ব্যবহার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে π < ২২/৭। π = ৩.১৪১৫৯ (আসন্ন মান), কিন্তু ২২/৭ = ৩.১৪২৮৫৭ (আসন্ন মান)। π আসলে একটি অমূলদ সংখ্যা। একে দুটি সংখ্যার অনুপাত, ২২/৭ হিসেবে দেখানো চলে না। ৩৫৫/১১৩ = ৩.১৪১৫৯২৯ বরং π-এর আরও কাছাকাছি একটি অনুপাত সংখ্যা।
মধুতে এমন কী আছে, যার ফলে মধু পচে না? মধুর অনেক ম্যাজিক। একটি চমত্কার ম্যাজিক হলো, এটি সহজে নষ্ট হয় না। এর প্রধান কারণ হলো, প্রাকৃতিক মধুতে খুব কমই পানির বিন্দু থাকে। মধুর উপদানের একটি অংশ সুগার বা চিনি জাতীয় পদার্থ। মধুতে চিনির ঘনমাত্রা বেশি। আবার জীবাণুদের কোষেও চিনি জাতীয় পদার্থ থাকে। কোষের মধ্যে চিনির ঘনমাত্রা মধু থেকে অনেক কম। তাই মধুর মধ্যে যখন কোনো জীবাণু পড়ে তখন অভিস্রাবন প্রক্রিয়ায় জীবাণু কোষ থেকে মধুর মধ্যে পানি চলে যায়। অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে যাবার কারণে জীবাণু মারা পড়ে। তাই ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোনো জীবাণু মধুতে টিকতে পারে না বলেই মধু পচে না।…
কোনো কোনো উড়োজাহাজ ১১ হাজার মিটার উঁচুতে ওড়ে। এত উঁচুতে চলা উড়োজাহাজের জানালায় ছিদ্র—ব্যাপারটা ভীতিকর মনে হয় না! ব্যাপারটা আসলে উল্টো। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এই ছিদ্রগুলো করা হয় উড়োজাহাজের নকশা করার সময়। বিমানের ভেতরে থাকে উচ্চ চাপের বায়ু আর বাইরে বায়ুর চাপ অনেক কম। কাজেই বিমানের জানালাকে প্রচুর চাপ সহ্য করতে হয়। জানালাগুলো তৈরি করা হয় এক্রাইলিকের তিনটি স্তর দিয়ে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বাইরের কাচটি। এটা বাইরের দিকে উন্মুক্ত থাকে। মাঝের কাচটিতে থাকে ছিদ্র। এই ক্ষুদ্র ছিদ্রগুলোর অন্য নাম ব্লিড হোল। আর যাত্রীদের দিকের কাচটির নাম স্ক্র্যাচ পেইন। ব্লিড হোলগুলো যাত্রীদের কেবিন এবং দুটি কাচের মাঝের স্থানের বায়ুর…
ইদানিং ঢাকার ফুটপাতের চেহারা পাল্টে গেছে। ফুটপাতের চিরায়ত নকশা বাদ দিয়ে সম্প্রতি বসানো হয়েছে নতুন নকশার টাইলস, যা লাল আর হলুদ রঙের। ফুটপাতের বেশির ভাগটাই লাল টাইলসে মোড়া। তার মাঝখানে ফুট দেড়েক চওড়া একটা হলুদ রঙের লাইন চলে গেছে লম্বালম্বি বরাবর। লক্ষ করলে দেখবেন, এই হলুদ লাইনে যে টাইলস ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো লাল টাইলসের মতো সমতল নয়। হলুদ টাইলসগুলোতে উঁচু স্ট্রাইপ দেওয়া। এর ওপর দিয়ে হাঁটলে পায়ের নিচে উঁচু অনুভূতিটা তৈরি হবে। অনেকে মনে করতে পারেন, ডিজাইনে নতুনত্ব আনতে এমন করা হয়েছে। কিন্তু আসলে হলুদ এই লাইন আর স্ট্রাইপের কারণ আছে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা যাতে ফুটপাত ধরে সহজেই হাঁটতে পারে, তার…
চা-কফিতে চিনি মেশানো আমাদের নিত্যদিনের অভ্যাস। সাদা সাদা ক্ষুদে ঘনাকার দানাকৃতির ‘চিনি’ চেনেন না, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া আসলে সম্ভব না। এই চিনি মূলত সুক্রোজ, এক ধরনের জৈব অণু। চিনি বলি বা সুক্রোজ, এটি এক ধরনের কার্বোহাইড্রেট। কার্বোহাইড্রেটের আরেক নাম স্যাকারাইড। এক ধরনের জৈব অণু, যাতে কার্বন (C), হাইড্রোজেন (H) এবং অক্সিজেন (O) থাকে। এর সাধারণ সংকেত Cm(H2O)n; এখানে m আর n এর জায়গায় ১, ২, ৩…ইত্যাদি বসবে। m ও n এর মান সমানও হতে পারে। কার্বোহাইড্রেটের সবচেয়ে ক্ষুদ্র একককে বলে মনোস্যাকারাইড। যেমন, গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ইত্যাদি। দুটো মনোস্যাকারাইড একসঙ্গে যুক্ত হয়ে গঠণ করে ডাইস্যাকারাইড। তিনটি হলে বলা হয় ট্রাইস্যাকারাইড, আর…
আমরা জানি গ্রহ নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘোরে। তাহলে কি নক্ষত্র বা কৃষ্ণগহ্বর অন্য কোনো কিছুকে কেন্দ্র করে ঘোরে? এটা তো নিশ্চয়ই ঠিক যে গ্রহ নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘোরে। এখন প্রশ্ন হলো নক্ষত্রগুলো কি অন্য কোনো মহাজাগতিক বস্তুকে কেন্দ্র করে ঘোরে? হ্যাঁ, নক্ষত্রও ঘোরে। আমাদের সূর্য ছায়াপথের কেন্দ্রের চারপাশে একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরছে। এর গড় বেগ ঘণ্টায় ৮ লাখ ২৮ হাজার কিলোমিটার। ছায়াপথের চারপাশে একবার ঘুরে আসতে সূর্যের প্রায় ২৩ কোটি বছর সময় লাগে। অন্যদিকে কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাকহোল হলো মহাশূন্যে এমন একটি এলাকা, যেখানে গ্র্যাভিটি ভীষণ শক্তিশালী। সে চারপাশের সবকিছু টেনে নেয়, এমনকি আলোও সেখানে আটকা পড়ে। মহাকাশবিজ্ঞানীরা বলেন, ব্ল্যাকহোলও একইভাবে…
ওয়ার্মহোল আসলে একটি তাত্ত্বিক ধারণা। আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটির সঙ্গে এই ধারণা সংগতিপূর্ণ। ধারণাটি হলো, শত শত আলোকবর্ষ দূরের বা কম দূরত্বের অস্তিত্বশীল কোনো কিছু, সময়ের কোনো অবস্থান বা একাধিক বিশ্বের সঙ্গে ওয়ার্মহোল সংযোগ সাধন করে। ধারণাটি খুব মজার। এর সঙ্গে টাইম মেশিনের একটা যোগাযোগ আছে। এই টাইম মেশিন নিয়ে আমাদের কৌতূহলের শেষ নেই। ধরা যাক ঢাকায়, আমাদের বাসায় টাইম মেশিনে বসে অতীতে যাত্রা শুরু করলাম। একটা ওয়ার্মহোলের মধ্য দিয়ে সুড়ুৎ করে, ধরা যাক, দুই হাজার বছর অতীতে চলে গেলাম। তাহলে কী মজাই না হতো! স্থান একই, শুধু পার্থক্য চতুর্থ মাত্রার, মানে সময়ের। আমাদের বাসাটা চেনা যাচ্ছে না। চারপাশে…
ই-টি বা এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল প্রাণীর কথা আমরা সব সময়ই শুনি। কিন্তু এখন পর্যন্ত পৃথিবীর বাইরে ভিনগ্রহে কোনো বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। রেডিও ওয়েভের মাধ্যমে অনেক ধরনের সংকেত মহাবিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারপর মহাকাশ থেকে কোনো উত্তর আসে কি না, সেই অপেক্ষায় বিজ্ঞানীরা রয়েছেন। না, কোনো খবর নেই। এরপরও এ বিষয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। সনি পিকচার্স এন্টারটেইনমেন্ট সম্প্রতি এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল নিয়ে একটা সিনেমা তৈরি করেছে। সেখানেও কল্পিত কিছু দেখানো হয়েছে। কিন্তু পৃথিবীর বাইরে কোথাও বুদ্ধিমান প্রাণী থাকতে পারে কি না, সেটা সিনেমার বিষয়বস্তু নয়। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিনের, জুন ২০১৯ সংখ্যায় এ বিষয়ে একটি তথ্যবহুল লেখা ছাপা হয়েছে। আসুন দেখা যাক…
একনাগাড়ে ২-৩ মিনিট চোখের পলক না ফেলে কোনো দিকে তাকিয়ে থাকি, তাহলে চোখে পানি আসে কেন? প্রথমে বুঝতে হবে চোখের পলক পড়ে কেন। চোখের কোণে রয়েছে নেত্রনালি। এই নালি দিয়ে সব সময় তৈলাক্ত ও মিউকাস মিশ্রিত ঘন লবণাক্ত কিছু পানি বের হয়। ওই পানি চোখ ভালো রাখার জন্য খুব দরকার। সমস্ত চোখে ওই তরল ছড়িয়ে দিতে চোখের পলক পড়ে। চোখ সব সময় ভেজা রাখতে হয়। না হলে চোখের সমস্যা হতে পারে। যদি দীর্ঘ সময় চোখের পলক না পড়ে, একদৃষ্টিতে কোনো দিকে তাকিয়ে থাকি, তাহলে চোখ শুকিয়ে যাবে। তখন চোখে জ্বালাপোড়া হতে পারে। এ জন্য চোখে পানি আসতে পারে। নেত্রনালির পানি…
বেশির ভাগ মানুষের ধারণা, শুধু আগুন দিয়েই ত্বক পুড়ে যায়। আসলে আগুন ছাড়াও যেকোনো ধরনের শক্তির উত্স থেকে ত্বকে পোড়ার মতো ক্ষত তৈরি করতে পারে। এ ধরনের শক্তি উত্সগুলো ত্বকের নিচের প্রোটিন ও ফ্যাট টিস্যুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। পুড়ে গেলে ত্বকে বিভিন্ন মাত্রার ক্ষত তৈরি হয়। প্রথম মাত্রার পোড়া অতটা যন্ত্রণাদায়ক নয়। কিন্তু দ্বিতীয় মাত্রা পোড়ার ক্ষেত্রে জ্বলন অনেক বেশি হয়, বড় ফোসকা পড়ে। সপ্তাহ বা মাসখানেক লেগে যায় ক্ষতস্থান সারতে। তৃতীয় মাত্রার পোড়া সবচেয়ে ভয়াবহ। এই ক্ষত খুব গভীর হয়। স্থায়ীভাবে দাগ বসে যায়। রোগীর দেহের অন্য জায়গা থেকে ত্বক নিয়ে গ্রাফটিং করে ক্ষত পূরণ করা লাগে। তবে এত গভীর…